রাজনীতি ছাড়ছেন না লো পেন, আইনি লড়াই করবেন
Published: 3rd, April 2025 GMT
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ফ্রান্সের ডানপন্থী নেতা মারিন লো পেন রাজনীতি ছাড়ছেন না। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম টিএফওয়ানকে মারিন লো পেন বলেন, ‘আমাকে সরিয়ে দেওয়া হলো ঠিকই; কিন্তু একই সঙ্গে অসংখ্য ফরাসি নাগরিকের কণ্ঠরোধ করা হলো।’ তিনি জানান ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের কোনো আইনি আবেদনের ওপর তাঁর ভরসা নেই।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সম্প্রতি লো পেনের সরকারি কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। আদালত জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর দল ন্যাশানাল র্যালি পার্টি (আরএন) তহবিলের প্রায় ৩০ লাখ ইউরো আত্মসাৎ করেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই তহবিল একমাত্র পার্লামেন্টের কাজেই ব্যবহার করার জন্য বরাদ্দ থাকে।
আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন লো পেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখন রাজনীতি ছাড়ছেন না। তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি আইনি পথ ছাড়ব না, আবেদন করব। আইনের যেটুকু রাস্তা খোলা আছে, তা সে যতই ছোট হোক, আমি সেই পথ ছাড়ব না।’
আদালতের রায়কে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন লো পেন। তিনি বলেন, ‘এই রায় গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ংকর। আমার ব্যক্তিগত কোনো লাভ হয়নি। তাই দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না।’
লো পেন সাংসদ থাকতে পারবেন; কিন্তু তিনি পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।
লো পেনের বিকল্প কে?লো পেনের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পাঁচ বছর। এর মধ্যে চার বছর তাঁকে বন্দি অবস্থায় থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার রায় ঘোষণার আগেই শুনানি চলাকালে উত্তেজিত লো পেনকে আদালতকক্ষ থেকে চলে যেতে দেখা যায়। এই রায়ের পর আগামী নির্বাচনে তাঁর লড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
লো পেনের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর তাঁর দলের প্রেসিডেন্ট ২৯ বছর বয়সী জর্ডন বারদেলাকে ২০২৭ সালের নির্বাচনে প্রার্থী করা হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। জনপ্রিয়তার নিরিখে লো পেনের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন তিনি।
আদালত লো পেনের সঙ্গে তাঁর দলের আরও আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। একই সঙ্গে ১২ জন পার্লামেন্টারি অ্যাসিস্ট্যান্টকেও দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত।
রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়াএই রায়ের পর ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুসহ একাধিক রাজনীতিবিদ আদালতের ভোটে লড়তে দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রায়কে ‘খুব বড় বিষয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন ‘লো পেনের ওপর পাঁচ বছর ভোটে লড়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের দেশেও এ রকম হয়েছে।’
রাশিয়া এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে এই রায় ইউরোপের গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।
আরও পড়ুনদোষী সাব্যস্ত লো পেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা৩১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ওপর এই র য় কর ছ ন র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সবাই উদ্গ্রীব: আমীর খসরু
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সবাই উদ্গ্রীব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি মনে করেন, মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এর আগে বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টি ও বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠকে বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টির সভাপতি ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এখন কারা গণতন্ত্র চায় আর কারা গণতন্ত্র চায় না, এ বিষয়গুলোতে জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে দিই আমরা। বাংলাদেশের মানুষ বোকা না। তারা তো সবকিছু ফলো করছে।’
এ সময় সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, নির্বাচন হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনা। এটা একটা জনগণের মালিকানার বিষয়। আর সংস্কার হচ্ছে চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের পরও আরও বহু সংস্কার হতে থাকবে। আগামী বছরগুলোতেও সংস্কার হতে থাকবে।
আমীর খসরু বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে যে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেটা জাতির সামনে প্রকাশ করলেই তো হয়ে যায়। প্রকাশ করে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করতে অসুবিধা কোথায়? ড. ইউনূসও বলেছেন ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কার হবে। কোথায় ঐকমত্য হয়েছে আমাদের বলেন না! আমরা তো সবাই জমা দিয়েছি। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে। সুতরাং কোথায় ঐকমত্য হয়েছে তা জাতিকে জানিয়ে দিয়ে সই করে নির্বাচনের দিকে আমরা এগিয়ে যাই। পরিষ্কার কথা।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে তো ক্ষমতায় যেতে হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করবে তারা তো এটাই মনে করবে, তাই না? ভোট হবে, ক্ষমতায় যাবে। জনগণের নির্বাচিত সদস্যরাই নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবে, ক্ষমতায় যাবে। এটাই তো গণতন্ত্র। এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় তো কোনো কারণ দেখছি না।’