রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এবং মানিকগঞ্জের আরিচা-পাবনার কাজীরহাট নৌরুটে প্রতিদিন হাজারো মানুষ লঞ্চে পারাপার হয়। তবে এসব নৌপথে চলাচলকারী অধিকাংশ লঞ্চের অবস্থা জরাজীর্ণ। নেই পর্যাপ্ত জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম, নেই যথাযথ ফিটনেস। ঈদের মৌসুমে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে এসব লঞ্চ চলাচল করায় বড় ধরনের নৌদুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করছে। এর মধ্যে ২৬টি বড় (এমভি) ও ৭টি ছোট (এমএল) লঞ্চ। লঞ্চগুলোর বয়স ৩৭ থেকে ৪৮ বছর। বাহিরে চকচকে রঙ করা হলেও ইঞ্জিনসহ যান্ত্রিক অংশগুলো জোড়াতালি দেওয়া। অধিকাংশ লঞ্চেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, ফায়ার বাকেট, লাইফ জ্যাকেট, লাইফবয় ও ফার্স্ট এইড কিটের সংকট রয়েছে। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে এমভি নজীর, এমভি বিদ্যুৎ, এমভি খন্দকার ও এমভি টুম্পা। এ লঞ্চগুলো বডি ফিটনেসের অবস্থা খুবই নাজুক। তবে তাদেরও রয়েছে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। নিয়ম অনুযায়ী, অভিজ্ঞ চালক (মাস্টার) থাকার কথা থাকলেও কিছু লঞ্চ অনভিজ্ঞ চালকদের দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের তদারকি প্রয়োজন হলেও বাস্তবে তা অনুপস্থিত বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। একাধিক যাত্রী লঞ্চের বর্তমান অবস্থার কথা তুলে ধরে দুর্ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

যাত্রী আরাফাত হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষ নড়বড়ে লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করছে। সামনে ঝড়বৃষ্টি হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কোহিনুর বেগম নামের আরেক বলেন, প্রতিবার লঞ্চে যত আসন থাকে, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ উঠে। অধিকাংশ লঞ্চের অবস্থা খুবই খারাপ।

গার্মেন্টসকর্মী মর্জিনা বেগম বলেন, কাজের তাগিদে ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চে চলাচল করতে হয়। তবে আতঙ্কের মধ্যেই যাতায়াত করতে হয়। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদাসীন।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট ম্যানেজার মো.

নুরুল আনোয়ার মিলন দাবি করেন, ঈদের আগে ও পরে লঞ্চ পারাপার প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হয়েছে। প্রতিটি লঞ্চেরই ফিটনেস সার্টিফিকেটও রয়েছে।

তবে বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. শিমুল ইসলাম বলেন, লঞ্চগুলো অনেক পুরনো। এর মধ্যে চার-পাঁচটির অবস্থা বেশ খারাপ। তবে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র থাকায় আমরা কিছু করতে পারছি না। লঞ্চ মালিকদের বারবার সতর্ক করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র অবস থ দ লতদ য়

এছাড়াও পড়ুন:

ডিপিএল ছেড়েই ‘মানসিক প্রস্তুতিতে’ টেস্ট খেলবেন বিজয়? 

‘মানসিক প্রস্তুতি’। বাংলাদেশের ক্রিকেটে বেশ পরিচিত শব্দ হয়ে ওঠার কথা। গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়ার আগে প্রস্তুতির এই বিশেষ ধরনের কথা বলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টি-২০ ফরম্যাটের বিপিএল শেষ করেই ওয়ানডে ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে অসুবিধা হবে কিনা এমন প্রশ্নে মানসিক প্রস্তুতি থাকার কথা বলেছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক।

আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেও একই কথা বলেন শান্ত, ‘সিরিজের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা।’ এবারো প্রকৃত প্রস্তুতির বদলে মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার পেছনে কারণ পরিষ্কার। ডিপিএল খেলতে ব্যস্ত ছিলেন জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টের দলে ডাক পাওয়া সব ক্রিকেটার।

টেস্টের জন্য এক সপ্তাহ আগে সিলেটে ক্যাম্প শুরু হয়েছিল। তবে ১৩ এপ্রিলের ওই ক্যাম্পে ছিলেন মাত্র ৮ ক্রিকেটার। বিপিএলের পর ফেব্রুয়ারির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এরপর ডিপিএল; সব মিলিয়ে টানা সাদা বলের ক্রিকেটের পর টেস্টের জন্য এক সপ্তাহ ক্যাম্প করার সময়ও হয়নি বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত জাতীয় দলের সব ক্রিকেটারের। মানসিক প্রস্তুতিই তাই ভরসা ছিল। যা সিলেট টেস্টে কাজে দেয়নি।

এনামুল হক বিজয়ের জন্য এই ‘মানসিক প্রস্তুতি’ হতে যাচ্ছে আরও কঠিন। ডিপিএলে দারুণ ছন্দে আছেন তিনি। সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছেন। বুধবার আবাহনীর বিপক্ষে সেঞ্চুরি দিয়ে স্বীকৃত ক্রিকেটে তার শতকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১। বিজয়ের মাথায় নিশ্চয় ২৬ এপ্রিল ডিপিএলে মোহামেডানের বিপক্ষে সুপার লিগের ম্যাচ ঘুরপাক খাচ্ছিল।

মোহামেডান ম্যাচের জন্যই মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার কথা ছিল গাজী গ্রুপের ব্যাটার বিজয়ের। অথচ হুট করে তাকে ডাকা হলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দলে। বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানিয়েছেন, বিজয় তাদের প্রক্রিয়ার মধ্য ছিলেন, ভাবনায় ছিলেন। প্রক্রিয়া বলতে, গত বছর পাকিস্তানে ‘এ’ দলের হয়ে দুটি চার দিনের ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

যদিও ওই সফরের তিন ইনিংসে ১৮ রান করেছিলেন বিজয়। প্রক্রিয়ায় মধ্যে থাকায় বলা নেই, কওয়া নেই, ক্যাম্প করার সুযোগ নেই, ডিপিএল থেকে মোহামেডান ম্যাচের আগে ডেকে পাঠানো হলো জাতীয় দলে। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয় অফ ফর্মে আছেন। তাদের একজনকে বসিয়ে এনামুলকে একাদশ নিলে প্রস্তুতির জন্য মাত্র তিনদিন পাবেন তিনি। লম্বা বিরতির পর মাত্র তিনদিনে প্রকৃত প্রস্তুতি নাকি মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে টেস্ট খেলতে নামবেন বিজয়?  

সম্পর্কিত নিবন্ধ