ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ নিয়ে দেশে দেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া
Published: 3rd, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানির ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। দেশটির প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণার পর তার বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছে চীন, জাপান, যুক্তরাজ্যসহ আরও অনেক দেশ। ট্রাম্পের এ ঘোষণায় দেশগুলোর দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তাদের ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।
বুধবার বিকেল চারটায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত দুইটা) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে এ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন তিনি।
ট্রাম্পের নতুন করে এ শুল্ক আরোপ করাকে ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে অনেক দেশ। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ শুল্কের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হতে চলেছে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
চীন
পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা সর্বশেষ এই শুল্কের ‘স্পষ্ট বিরোধিতার’ কথা জানিয়েছে বেইজিং এবং নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশটি।
দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন শুল্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এতে বড় আকারে সংশ্লিষ্টদের বৈধ অধিকার ও স্বার্থহানী হয়েছে।
সর্বশেষ শুল্ক আরোপে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বে ৫৪ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে চীনের ব্যবসায়ীদের।
জার্মানি
দ্য জার্মান অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ভিডিএ) বলেছে, এই শুল্ক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সংখ্যাই শুধু বাড়াবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখন নিজেদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে উল্লেখ করে ভিডিএ আরও বলেছে, এ জোট সমঝোতায় আগ্রহের ইঙ্গিতও দিয়ে যাচ্ছে।
জার্মান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিষ্ঠানটি ইইউকে ‘মাথা ঠান্ডা’ রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেছে, ‘উত্তেজনা শুধু ক্ষতিই বাড়াবে।’
জাপান
জাপানের পণ্য আমদানিতে আরোপিত মার্কিন শুল্কের পরিমাণ ২৪ শতাংশ। জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইওজি মুতো এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন।
মুতো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ একটি একপাক্ষিক উদ্যোগ, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি আবারও এটা জাপানের ক্ষেত্রে কার্যকর না করার জন্য (ওয়াশিংটনকে) অনুরোধ জানাই।
জাপানের প্রধান ক্যাবিনেট সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি সংবাদদাতাদের জানান, এ ধরনের শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নীতিমালা ও দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটা অর্থনৈতিক চুক্তিতে আবদ্ধ হতে যুক্তরাজ্য শান্ত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে বলে জানান ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথান রেনল্ডস। তিনি বলেন, এমন চুক্তি যুক্তরাজ্যের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপ করা ১০ শতাংশ শুল্ক কমাতে সহায়তা করতে পারে।
যদিও ব্রিটিশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘(পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে) কোনো কিছুই ভাবনার বাইরে নেই। আমাদের কাছে অনেক কিছুই রয়েছে এবং তা কাজে লাগাতে ইতস্তত করব না।’
কানাডা
এ শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে মৌলিকভাবে বদলে দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে এ শুল্ক মোকাবিলা করতে যাচ্ছি। আমরা আমাদের কর্মীদের সুরক্ষা দিতে চলেছি।’
থাইল্যান্ড
থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বলেছেন, ট্রাম্পের ৩৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সে ব্যাপারে ‘শক্ত পরিকল্পনা’ তাঁর সরকারের রয়েছে। পেতংতার্নের আশা, সমঝোতার মাধ্যমে এ হার কমানো সম্ভব হবে। নতুন শুল্ক আরোপের প্রভাব কমাতে তাঁর সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প শ ল ক আর প আর প ক ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
হজ ফ্লাইট শুরু ২৯ এপ্রিল চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী ২৯ এপ্রিল। ওই দিন ৪১৯ সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এ বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজব্রত পালনে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ ও বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
আগামী ২৮ এপ্রিল রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্প উদ্বোধন করা হবে। এখন সেখানে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কর্মকর্তারা জানান, প্রথম ফ্লাইট রাত সোয়া ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে। সঠিকভাবে হজ ব্যবস্থাপনার জন্য এ বছর সরকারি ১১২ ও বেসরকারি গাইড থাকবেন ১ হাজার ৭৪৩ জন। ৭০ মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহযোগিতায় রাখা হয়েছে।
আশকোনা হজ ক্যাম্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) লোকমান হোসেন জানান, ২৯ এপ্রিল প্রথম হজ ফ্লাইট ঢাকা ছাড়বে। আগের দিন আশকোনা হজ ক্যাম্প উদ্বোধন করা হবে। এখন হজ ক্যাম্পে শেষ মূহূর্তের কাজ চলছে।
বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের পরিচালক বজলুল হক বিশ্বাস সমকালকে জানান, হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশসহ তিনটি এয়ারলাইন্স প্রস্তুত। ৩১ মে হজের শেষ ফ্লাইট সৌদি আরব যাবে। ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুন শুরু হয়ে শেষ হবে ১০ জুলাই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে ১১৮, সাউদিয়া ৮০ ও নাস এয়ারলাইন্সের ৩৪ ফ্লাইটে যাত্রীরা সৌদি আরব যাবেন। বিমান ১০৯, সাউদিয়া ৭৯ ও নাস ৩৪টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি ও সিইও সাফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘অত্যাধুনিক উড়োজাহাজের মাধ্যমে বিমান হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। নিজস্ব জনবল থেকে শুরু করে সব কিছু প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশাপাশি চট্টগ্রামের শাহ আমানত এবং সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকেও ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।’