কোটিপতি লিগ আইপিএলের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় তিনি। নিলাম বাজারে তাঁকে নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে। অবশেষে আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ সম্মানী ২৭ কোটি রুপিতে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস লুফে নেয় ঋষভ পন্তকে। কিন্তু তিন ম্যাচে এখন পর্যন্ত পয়সা উসুল করা যায়নি তাঁকে নিয়ে। মাত্র ১৭ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ঋষভের মতো দামি অনেক ক্রিকেটারের ব্যাটেই রান নেই।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের রোহিত শর্মা তাদেরই একজন। ১৬.
রোহিতের মতো দামি আরেক ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স নিয়েও সমালোচনা তুঙ্গে। ১৪ কোটি রুপিতে এবারও হায়দরাবাদের হয়ে খেলছেন অভিষেক শর্মা। গতবার এই দলটির হয় দারুণ পারফর্ম করেছিলেন তিনি। সে কারণেই নিলাম বাজারে তুঙ্গে ছিল তাঁর দাম। কিন্তু এবারে তিন ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৩১ রান। তাঁর মতো অবস্থা কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিংকু সিংয়েরও। গত আসরে এক ওভারে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন যিনি, সেই রিংকুর ব্যাটেই এবার রানখরা। তিন ম্যাচে তিনি করেছেন মাত্র ২৯ রান। যেখানে কলকাতার তিন ম্যাচে জয় মাত্র একটি।
কলকাতা ধুঁকছে আরও একজনের ওপর বিশাল লগ্নি করে– ভেঙ্কাটেশ আয়ার; ২৩.৭৫ কোটি রুপি যাঁর সম্মানী, সেই আয়ারের ব্যাট থেকে কলকাতা এখন পর্যন্ত পেয়েছে মাত্র ৯ রান! তাঁর একেকটি ম্যাচ যদি দেড় কোটি রুপির কাছাকাছি মূল্যমানের হয়, তাহলে তাঁর এই একেকটি রানের মূল্য এখন প্রায় ১৫ লাখ রুপি! যদিও প্রতিটি দলেরই এখনও অন্তত ১৫টি করে ম্যাচ বাকি। কিন্তু দামি খেলোয়াড়দের এহেন অবস্থা দেখে সমর্থকরা হতাশ।
ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার মাইকেল ভন যেমন সোজাসাপ্টা বলেই দিয়েছেন তারকা খ্যাতি দেখেই দাম চড়ানো হয়, ‘রোহিত এখন আর মুম্বাইয়ের অধিনায়ক নন, তাই তাঁকে বিচার করতে হবে তাঁর রান দিয়েই। অধিনায়ক থাকলে মাঠে নিজের প্রজ্ঞা, কৌশল ও ভাবনা-চিন্তা দিয়ে দলকে কিছু দেওয়া যায়; কিন্তু রোহিত শুধু ব্যাটার হিসেবে খেলছে। তাই তাঁর নামের ওপরই যেন লগ্নি করেছে মুম্বাই।’
তারকা খ্যাতি নিয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনিও খেলছেন চেন্নাইয়ে। তাঁর নিচের দিকে দুই ওভারের জন্য ব্যাটিংয়ে নামা নিয়েও সমালোচনা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী
খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী দাবি করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব ছবি ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো। তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এগুলো ছড়াচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী এ দাবি করেন।
সম্প্রতি কৃষ্ণ নন্দীর কয়েকটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসুর সঙ্গে কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে তাঁর কয়েকটি ছবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে আজ তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসু মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে। সে একজন আন্তর্জাতিক চাঁদাবাজ। সে আমার মোবাইল নম্বর ম্যানেজ করে বিভিন্ন কৌশলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, “আমি হিন্দু হয়ে কেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে হিন্দুধর্মকে বিতর্কিত করছি।”’
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমাকে প্রার্থী করায় হিন্দুদের মনে শান্তি ফিরে এসেছে। হিন্দুরা মনে করছে, জামায়াত ইসলামী একটা অসাম্প্রদায়িক দল। জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দু-মুসলমান সবাই ভালো থাকবে। আমাকে যদি মানুষ সংসদে পাঠায়, তখন হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করব।’
শিপন কুমার বসু ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘তাঁর বাসায় গিয়ে খেয়েছি। তবে এরপর যে সে ব্ল্যাকমেল করবে, সেটা বুঝিনি। বিদেশি কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আমার আদৌ কোনো সংযোগ নেই। কোনো কথা হয় না।’
লিখিত বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী শ্রেণির যোগসাজশে আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ও জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করার জন্য মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচারসহ বেশ কিছু ছবি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করে অপপ্রচার করছে। আমি এসব অপপ্রচারের জোর প্রতিবাদ জানাই। সাথে এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করছি।’
কৃষ্ণ নন্দী আরও বলেন, ‘আমাকে খুলনা-১ আসনে জামায়াত মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণিত হয়, জামায়াতে ইসলামী একটি অসাম্প্রদায়িক দল। দলটির কাছে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতি কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আমাকে প্রার্থী করায় সারা বাংলাদেশের হিন্দুদের দাঁড়িপাল্লার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পরই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, যা প্রমাণ করে, এটা গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।’
মনোনয়ন পরিবর্তন নিয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার আগে খুলনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ছিলেন বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ। তাঁকে পরিবর্তন করে আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ আমাকে সমর্থন করেন এবং আমরা একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছি। আমাদের ভেতর কোনো ভুল–বোঝাবুঝি নেই। আমি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা রাখি।’
সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ব্যবসার কারণে মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি একজন ব্যবসায়ী, তিনি একজন মন্ত্রী। জামায়াতে ইসলামী করি বলে আমাকে কোণঠাসা করে রেখেছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রে অমুসলিম সম্প্রদায়েরও জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ আছে। ফলে তাঁদের নির্বাচন করারও সুযোগ আছে। দেশের অনেক জায়গাতেই জামায়াতের অমুসলিম কমিটি আছে।