দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার অংশ হিসেবে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের তিন প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ। গত ২৭ মার্চ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ (পিএসএক্স)। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ডিএসই।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কলম্বোতে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্মাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান দিলশান উইরসেকারা এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান আকিফ সাইদ। ডিএসইর প্রতিনিধি দলে ছিলেন পরিচালক শাকিল রিজভী, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি’ রোজারিও এবং কোম্পানি সচিব আসাদুর রহমান।
সমঝোতা স্মারকটিতে তিন দেশের স্টক এক্সচেঞ্জের ডিজিটাল রূপান্তরে যৌথ উদ্যোগ, নতুন আর্থিক পণ্য ও বাজার উন্নয়নে এক্সচেঞ্জগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়, বাজার তদারকি এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা কাঠামোর সমন্বয়, মানবসম্পদ উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ, ক্রস-এক্সচেঞ্জ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং নলেজ শেয়ারিং বিষয়ে সহযোগিতার অঙ্গীকার করা হয়েছে।

ডিএসইর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সমঝোতা স্মারকের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো– এক দেশের কোম্পানিকে অন্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত (ক্রস বর্ডার লিস্টিং) করা এবং দেশগুলোর বিনিয়োগকারীদের অন্য দেশের কোম্পানিতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পথ খোঁজা এবং এ লক্ষ্যে দেশ তিনটির স্টক ব্রোকারদের মধ্যে অংশীদারিত্ব এবং প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ বাড়ানো।

সমঝোতা স্মারক বিষয়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আকারে ছোট হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ছাড়া অন্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর প্রযুক্তিগত এবং প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এই স্টক এক্সচেঞ্জগুলো কাঙ্ক্ষিত সক্ষমতা অর্জন করতে পারছে না। সম্পদ ও অভিজ্ঞতার পারস্পরিক বিনিময় এবং প্রযুক্তিগত যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো নিজ নিজ দেশে দক্ষ ও শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। একত্রে কাজ করে আর্থিক ইকোসিস্টেমে সমৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের সুযোগ উন্মুক্ত করা যাবে। বিনিয়োগকারী এবং অংশীদারদের জন্য যা সুফল বয়ে আনবে।

শ্রীলঙ্কা সফরকালে ডিএসইর চেয়ারম্যান একটি সেমিনারে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এবং অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী অভিজ্ঞতা, পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন। পরে ডিএসইর প্রতিনিধিরা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান, কমিশনার, পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি সিস্টেমের সিইও ও সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির সিইও এবং কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের সিইও, সিআরও এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন। বৈঠকে ডিএসইর চেয়ারম্যান বর্তমান কার্যক্রম, আঞ্চলিক পণ্যের বাজার উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি নিজস্বভাবে তৈরি, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ড এসইর ড এসই সমঝ ত কলম ব

এছাড়াও পড়ুন:

আট মাসে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৮০২ পয়েন্ট

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ নিয়ে টানা নয় কার্যদিবস সূচকে পতন ঘটল। এদিকে, পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার পয়েন্টের ঘরে নেমে এসেছে।

তবে, বৃহস্পতিবার ডিএসই ও সিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। দিনশেষে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।

গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজারের হাল ধরেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। ওই দিন ডিএসইর প্রধান ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫৭৭৫.৪৯ পয়েন্টে। তিনি কাজে যোগ দেওয়ার ৮ মাস অতিবাহিত হলেও পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসেনি। বরং, বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা বেড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ মাসে ডিএসইএক্স সূচক ৮০২.৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে।

আরো পড়ুন:

নেগেটিভ ইক্যুইটি ক্যানসার, দ্রুত সমাধান প্রয়োজন: বিএসইসি চেয়ারম্যান

পাঁচ বছর মেয়াদের নতুন ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন শুরু

ডিএসই ও সিএসই সূত্র জানিয়েছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৯.৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬.৫০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১০৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২২.৫১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৫২টি কোম্পানির, কমেছে ৩০০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৬টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ৩৬৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০০ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৫.৬০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৫২৪ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪.৩৭ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৯৫৬ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৮.১৫ পয়েন্ট কমে ৯০৩ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ২৭.৭৭ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৭৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ২১৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৫২টি কোম্পানির, কমেছে ১৪০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৬টির।

সিএসইতে ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আট মাসে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৮০২ পয়েন্ট