ম্যানসিটিকে জেতালেন গ্রিলিশ, গোল উৎসর্গ করলেন ভাইকে
Published: 3rd, April 2025 GMT
দুই ম্যাচ পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জয়ের স্বাদ পেল ম্যানচেস্টার সিটি। লেস্টার সিটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে পেপ গার্দিওলার দল। সিটির হয়ে গোল দুটি করেন জ্যাক গ্রিলিশ ও ওমর মারমুশ। বিশেষ এই ম্যাচে গোল করে প্রয়াত ভাই কিলানকে উৎসর্গ করেছেন গ্রিলিশ, যিনি ২৫ বছর আগে মাত্র ৯ মাস বয়সে মারা গিয়েছিলেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পর প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবারের মতো গোল করলেন ২৯ বছর বয়সী ইংলিশ মিডফিল্ডার। ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন পোস্ট দিয়ে গ্রিলিশ লিখেছেন, ‘সবসময় তুমি আমার সঙ্গেই আছো, বিশেষ করে এই দিনটিতে। এটা তোমার জন্য ছিল, কিলান।’
গ্রিলিশ যখন ৪ বছর বয়সী, তখনই তার ছোট ভাই কিলান পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। তবে তার স্মৃতি সবসময় বয়ে নিয়ে চলেছেন এই ইংলিশ তারকা। ম্যাচের আগে ম্যানসিটি কোচ গার্দিওলাও জানতেন না যে ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে খেলতে নেমেছেন গ্রিলিশ। পরে বিষয়টি জানতে পেরে স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘জ্যাক অবিশ্বাস্য একজন মানুষ। আমি (মৃত্যুবার্ষিকীর ব্যাপারটি) জানতাম না। এটা তার পরিবারের জন্য কতটা কঠিন, তা কল্পনাও করতে পারি না। তবে এই দিনটি সে বিশেষভাবে স্মরণ করেছে, যা দারুণ ব্যাপার।’
ম্যাচের শুরুতেই গোলের দেখা পায় সিটি। মাত্র দুই মিনিটেই জাল কাঁপান গ্রিলিশ, এরপর ওমর মারমুশ করেন দ্বিতীয় গোল। এই জয়ে ৩০ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠেছে ম্যানসিটি। সমান ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লেস্টার ১৯তম স্থানে রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে এখন এক ধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে
বৈষম্য বিলোপের স্লোগান তুলে হাজার হাজার মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন থেকে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ক্রমেই অধরা হয়ে উঠছে। গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে এখন একধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে, অসংখ্য নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ছাত্র ইউনিয়নের ৪২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে এ কথা বলেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামান। তিনি আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে রাগীব নাঈম ও রাকিবুল রনির নেতৃত্বাধীন ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সামসি আরা জামান জুলাই অভ্যুত্থানে তাঁর সন্তানসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার টালবাহানা করলে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বজনহারা মানুষ আবারও রাজপথে নামবেন। বৈষম্য বিলোপের স্লোগান তুলে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন থেকে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ক্রমেই অধরা হয়ে উঠছে। গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে এখন একধরনের ব্যবসা শুরু হয়েছে, অসংখ্য নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি নিশ্চিতভাবেই গণ–অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক তামজীদ হায়দার বলেন, জুলাইয়ে শুরু হওয়া সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারকারীদের কাছে সরকার একরকম আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের আজ্ঞাবহতা বর্জন করে সরকারকে গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথে ফিরে আসতে বাধ্য করা হবে।
উদ্বোধনী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সভাপতি রাগীব নাঈম। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটাতে সক্ষম হলেও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এখনো সম্ভব হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিতে টালবাহানা, সব শহীদ পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে না পারা, শ্রমিকদের ওপর নির্বিচার গুলি চালানো, ছাত্র আন্দোলনে ন্যক্কারজনক পুলিশি হামলা অব্যাহত রাখাসহ নানা ঘটনা লক্ষ করছি। এসব ঘটনায় সরকারের ভূমিকা ও নিষ্ক্রিয়তা নিশ্চিতভাবেই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি।’
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র ফেডারেশন, হরিজন ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র–যুব আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশের পর একটি শোভাযাত্রা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হয়।
পরে বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিল শেষে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে।