উচ্চশিক্ষার স্তর পাড়ি দিতে তাকে অনেক লড়াই করতে হয়, নিজের খরচ নিজেকে জোগাড় করে নিতে হয়; গ্রামের সংসারের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। একটি ভালো জীবনের জন্য লড়াকু এই শিক্ষার্থী সন্ধ্যার পর রাস্তার পাশে লুঙ্গি বিক্রি করেন।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মোঃ ইমদাদুল হক। তার এই সংগ্রামী জীবনে সম্প্রতি বিপর্যয় ঘটিয়ে দিয়েছে প্রতারক চক্র। প্রতারণা করে তার ৩০ হাজার টাকার লুঙ্গি চুরি করে নিয়ে গেছে চক্রটি।

পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা ইমদাদুল হকের পাশে দাঁড়িয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ শাহরিয়ার হোসেন।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বোরকা পরে পালানোর সময় ‘ধর্ষক’কে ধরে গণপিটুনি

জবি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইমদাদুল হক ঈদের সময় তার ছোট্ট ব্যবসায় সহযোগিতা করতে কুষ্টিয়া থেকে বাবাকে নিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন। আর তার বাবার সরলতার সুযোগে প্রায় ৩০ হাজার টাকা দামের লুঙ্গি নিয়ে চুরি করে নিয়ে গেছেন এক নারী।

ইমদাদুল হকের সঙ্গে সেদিনকার চুরি ঘটনা নিয়ে কথা হয়। তার কথা অনুযায়ী, গত ২৪ মার্চ বিকালের ঘটনা। ঢাকার গেন্ডারিয়ার ঘুণ্টিঘর-সংলগ্ন এলাকা গেন্ডারিয়া মসজিদের পাশে সাধনার গলির সামনে লুঙ্গি বিক্রি করছিলেন ইমদাদুল হকের বাবা। তখন এক নারী এসে ৩০-৪০ টি লুঙ্গি নেওয়ার কথা বলেন। ওই মানের পর্যাপ্ত লুঙ্গি না থাকায় আরো লুঙ্গি আনার জন্য তিনি।

ইমদাদুলের ভাষ্য- তখন লুঙ্গিগুলো পাশের একটি দোকানে বুঝিয়ে রেখে যান তার বাবা। পরে ফিরে এসে দোকান বন্ধ দেখেন। দোকানদার এসে তাকে বলেন, তার কাছ থেকে ওই নারী লুঙ্গিগুলো নিয়ে চলে গেছেন।

ইমদাদুল হক বলেন, “আমি ঋণ করে ঈদ উপলক্ষে লুঙ্গিগুলো ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করি। কিন্তু ওই প্রতারক আমার ৩০-৩৫ হাজার টাকার মতো মালামাল নিয়ে গেছে। এতে আমি আমার পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি।” 

তিনি বলেন, “আমি জিডি করলে পরদিন পুলিশ এসে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে। তাতে দেখা যায়, দোকানদার লুঙ্গিগুলো প্রতারকের কাছে দিয়ে দিচ্ছেন। পুলিশ ওই নারীকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর দায়িত্বে অবহেলার কারণে পুলিশের মধ্যস্থতায় দোকানদারের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরন দেওয়া হয়।

“আমার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন ভাই যোগাযোগ করে অর্থ সহযোগিতা করেন,” বলেন ইমদাদুল হক।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, না। কোনো অর্থ সহযোগিতা পানি তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ শাহরিয়ার বলেন, “আমি মনে করি, দলমত নির্বিশেষে সবার বিপদে পাশে থাকতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময় চেষ্টা করি মানুষের বিপদে পাশে থাকার। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও যে কারো বিপদে পাশে থাকাকে সমর্থন করে, ইতিবাচক কাজকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে। আমি ভবিষ্যতেও জবিয়ানদের সকল সমস্যায় পাশে থাকব। নিজের ক্যাম্পাসের ভাইবোনকে সহায়তা করতে পারার মধ্যে আমি তৃপ্তি খুঁজে পাই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.

তাজাম্মুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশন কোনো অর্থ সহযোগিতা করে না। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো প্রসাশন দেখে। এঘটনায় প্রসাশনের কোনো মন্তব্য নেই।

ঢাকা/মেজবা/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারী। 

বৃহস্পতিবার ২৮ হাজার ৩০৭ কর্মীর সই করা এক হাজার ৪২৮ পৃষ্ঠার এই স্মারকলিপি উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

এতে বলা হয়, সংস্কার দাবির কারণে মাঠপর্যায়ে কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও গত ১৬ অক্টোবর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ১০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করে। একই দিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং আরও ১৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ঘটনায় সমিতির কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়, যার ফলে কিছু এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

স্মারকলিপি আরও বলা হয়, আরইবি এখনও মামলা, চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাসপেন্ড বিভিন্ন হয়রানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। শুধু স্মারকলিপিতে সই দেওয়ার কারণেও সম্প্রতি মাদারীপুর ও রাজশাহীর কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সংযুক্ত করে তদন্তের নামে হয়রানি ও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চাকরি হারিয়ে, মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সমিতির ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সই করা স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

স্মারকলিপিতে মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ