সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় টেলিভিশন ও আসবাব কিনতে শ্বশুরের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা এনে না দেওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের খয়েরদিরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ প্রিমা বেগম (২০) বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনের নাম উল্লেখ আজ বুধবার দুপুরে থানায় মামলা করেছেন। মামলার পরপরই বিকেলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে তাঁর স্বামী শাওন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ, মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, খয়েরদিরচর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে শাওন মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের বকুল মিয়ার মেয়ে প্রিমা বেগমের প্রেমের সম্পর্কের জেরে দুই বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুরের কাছ থেকে স্ত্রীকে টাকা এনে দিতে চাপ দিতেন শাওন। স্ত্রীও সাধ্যমতো বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতেন। মাসখানেক আগে শাওন শ্বশুরের কাছে টিভি, আসবাবপত্র কিনতে দেড় লাখ টাকা চান। টাকা দিতে না চাইলে শাওনের পরিবারের লোকজন রশি দিয়ে প্রিমার হাত-পা বেঁধে মারধর করেন। একপর্যায়ে শাওন লোহার একটি কাঁচি দিয়ে তাঁর পিঠে গরম ছ্যাঁকা দেন বলে অভিযোগ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীকে আবার শ্বশুরের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেন শাওন। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রিমাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। পরে স্বামীর অগোচরে রাতেই বাবার বাড়িতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলেন ওই গৃহবধূ।

আজ বেলা ১১টার দিকে গৃহবধূ পরিবারের লোকজনকে নিয়ে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে দুপুরে থানায় গিয়ে স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে খয়েরদিরচর গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁর স্বামী শাওনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গৃহবধূর বাবা বলেন, ‘আমি একটি স মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। মেয়ের সুখের জন্য সাধ্যমতো অর্থ দিয়েছি। আমার কাছে দেড় লাখ টাকা চেয়ে না পাওয়ায় আমার মেয়েকে যারা নির্যাতন করেছে, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

শাওনের বাবা ধান ব্যবসায়ী আজিজুল হক বলেন, ‘প্রেম করে বিয়ে করায় আমরা পারিবারিকভাবে এখনো পুত্রবধূকে গ্রহণ করিনি। দেড় লাখ টাকা চাওয়া ও মারধরের ঘটনা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। পরিকল্পিত ঘটনা সাজিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’

ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তাঁর স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করেছেন। ওই গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

জেলেনস্কিকে ট্রাম্পের দোষারোপের পরপরই কিয়েভে রাশিয়ার হামলা, নিহত ৯

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দায়ী করার কয়েক ঘণ্টার মাথায় এসব হামলা হয়।

ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, কিয়েভকে লক্ষ্য করে রাশিয়া ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৪৫টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আবাসিক ভবন, বেসামরিক অবকাঠামোসহ কিয়েভের অন্তত ১৩টি স্থানকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

হামলার পরপরই জেলেনস্কি ঘোষণা দেন, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সংক্ষিপ্ত করে ইউক্রেনে ফিরছেন। গতকাল বুধবার রাতে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন।

জেলেনস্কি বলেন, আসলে কী ঘটছে, তা সারা বিশ্বের মানুষের দেখা ও বোঝা অত্যন্ত জরুরি।

তিনি আরও বলেন, নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করার জন্য অচিরেই আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে ইউক্রেন।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি এলাকায় হামলার পর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে উদ্ধারকাজ চলছে। ২৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জেলেনস্কিকে ট্রাম্পের দোষারোপের পরপরই কিয়েভে রাশিয়ার হামলা, নিহত ৯