হামলায় অংশ নেন ১৩-১৪ জন, তিন অস্ত্রধারী শনাক্ত
Published: 2nd, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরে জোড়া খুনের ঘটনায় অংশ নেন ১৩ থেকে ১৪ জন। এর মধ্যে ৭ থেকে ৮ জনের হাতে ছিল পিস্তল। পাঁচটি মোটরসাইকেলে ছিলেন তাঁরা। এর বাইরে আশপাশে আরও কয়েকজন দাঁড়ানো ছিলেন পুলিশ কিংবা লোকজনের গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য।
গত শনিবার রাতে নগরের বাকলিয়া কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডের ঘটনাস্থলের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানায় পুলিশ।
পুলিশের দাবি, বেশির ভাগের হাতে ছিল ৭.
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন আজ বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় জড়িত বেশির ভাগকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
তবে ঘটনার চার দিন পার হলেও পুলিশ জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডের মুখ পর্যন্ত অন্তত দুই কিলোমিটারজুড়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এলেও বাকলিয়া ও চকবাজার থানা-পুলিশ আসে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার পর।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩২)। তারা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গাড়িতে সরোয়ারও ছিলেন তবে বেঁচে যান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, দুই ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের বিরোধের জের ধরে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় জন্য দায়ী করে ক্ষুব্ধ হয়ে সরোয়ার ও তাঁর অনুসারীদের ওপর এ হামলা চালানো হয়।
সাজ্জাদ ও সরোয়ার দুজনই বিদেশে পলাতক আট খুনের মামলার আসামি শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ আলীর অনুসারী ছিলেন। দুজনের বিরুদ্ধে ১৫টি করে মামলা রয়েছে। তবে এক দশক ধরে সরোয়ার সাজ্জাদ আলীর গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর সরোয়ার ও ছোট সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
৫ আগস্টের পর দুজনই জামিনে বেরিয়ে আসেন। গত আট মাসে জোড়া খুনসহ সরোয়ারের পাঁচজন অনুসারী গুলিতে মারা যান। প্রতিটি মামলায় সাজ্জাদ ও তাঁর অনুসারীদের আসামি করা হয়। নগরের বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মারার হুমকি দেওয়ার পর গত ২৯ জানুয়ারি সাজ্জাদকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। পরে গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিংমল থেকে এক দম্পতি তাঁকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। হুমকির পর তাঁরাও থানায় মামলা করেন সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে আসতে থাকে। গাড়িটি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পেছন থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকেও মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে অনেকটা ঝাঁঝরা হয়ে যায় গাড়িটি। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামিসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে গত মঙ্গলবার বাকলিয়া থানায় মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম। মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সবাই সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানতে চাইলে সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা তাঁর স্বামী কীভাবে জোড়া খুনের পরিকল্পনা করেছেন। সব তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
তবে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন এখন ভালো হয়ে গেছেন দাবি করে বলেন, সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় তাঁকে দায়ী করছে, ফেসবুকে হুমকিও দিয়েছেন সাজ্জাদের স্ত্রী। এ জন্য তাঁকে মারতে গিয়ে জোড়া খুন হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া গাড়ির আরোহী রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা সরোয়ার হোসেনের ডাকে তাঁরা অক্সিজেন থেকে নতুন ব্রিজ বালুর টাল এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে হামলার মুখে পড়েন। তিনি বলেন, সম্প্রতি সাজ্জাদের গ্রেপ্তার এবং এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা বেড়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন স র এ ঘটন য় ব কল য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবির সাবেক ডিজি সাফিনুল ও তাঁর স্ত্রীর ৫৬ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) সাফিনুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী সোমা ইসলামের ৫৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক সাফিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। যে ৫৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্র, স্থায়ী আমানত ও ক্রেডিট কার্ড।
আরিফ খান জয় ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, তাঁর স্ত্রী সোনিয়া আরিফ, ছেলে খান জিনদিন ইয়াজিদ ও মেয়ে উম্মে সাওদা খানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
মোনেমের এমডির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈন উদ্দিন মোনেম ও পদ্মা ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাব্বির মোহাম্মদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক হুজ্জত উল্লাহর বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।