শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পৈতৃক জমি নিয়ে সহোদর ভাই-বোনদের মারামারিতে বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। 

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতের নাম মো. দুলাল মন্ডল (৬০)। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদির মন্ডলের ছেলে। এই ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা আশকর আলী নামে এক প্রতিবেশীকে আটক করেছে। 

তবে এই মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে দাবি পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের। তবে দুলালের বোন হামিদা ও তাকলিমা গা ঢাকা দিয়েছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের জীবিত দুই ছেলে দুলাল মন্ডল ও হেলিম মন্ডল ও দুই মেয়ে হামিদা বেগম ও তাকমিনা বেগমের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে ওয়ারিশান জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই দ্বন্দ্ব নিরসনে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে এবং আত্নীয় স্বজনরা উদ্যোগ নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোন পক্ষই সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। 

এর মধ্যেই হঠাৎ করে বুধবার সকাল নয়টার দিকে হেলিম মন্ডল নিজের বসত-ভিটায় আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছ কাটতে যান। এসময় বড় ভাই দুলাল মন্ডল, বোন হামিদা ও তাকমিনা গিয়ে বাধা দেন। এ নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে বোনেরা মিলে ভাইয়ের গলা চেপে ধরলে ভাই দুলাল মন্ডল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এদিকে দুলালের লাশ বাড়ি নিয়ে এলে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যসহ উপস্থিত হন নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা। দীর্ঘ সময় দুলালের লাশ উঠানে থাকলেও ময়না তদন্তের জন্য পুলিশকে বাধা দেন দুলালের পুত্র ও কন্যারা। 

এক পর্যায়ে ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পরে দুলালের সন্তানদের ভালো করে বুঝিয়ে দীর্ঘ সময় পর বিকেলে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এসময় দুলালের সন্তানরা দাবি করেন তাদের পিতা হার্টের রোগী ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, “নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদনের পর ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’

অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।

সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ