‘আমাদের প্রাইভেট কার নেই, তাই বন্ধুরা মিলে বাস ভাড়া করে বাড়িতে এসেছি’
Published: 2nd, April 2025 GMT
অনেকে পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কেউ–বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কাজের চাপ ও সুযোগের অভাবে বছরের অন্য সময় বাড়িতে ফেরা না হলেও ঈদে নাড়ির টানে বাড়িতে আসা চাই। এই ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে তাই বাস রিজার্ভ করে গ্রামে ফিরেছেন উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
গত কয়েক দিন নীলফামারীর বিভিন্ন স্থান ও রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘি এলাকায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী কিছু বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ঈদের আগে এসব বাসে করে এসেছেন কর্মজীবী মানুষেরা। ঈদ উদ্যাপন শেষে আবার এসব বাসেই ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কর্মস্থলে ফিরবেন তাঁরা।
ঢাকার সাভারের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত সুলতানা, সাহানা ও জোবায়দা একসঙ্গে বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁদের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর এলাকায়। বুধবার সকালে তাঁরা জানান, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে তাঁরা ৫০ জন মিলে ২৫ হাজার টাকায় বাস ভাড়া করে এসেছেন। ছুটির এই দিনগুলোয় বাসের চালক ও তাঁর সহকারী একেক দিন একেকজনের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করেছেন। থাকছেন বাসের ভেতরে। এভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদযাত্রা করা যায় বলে মনে করেন এই নারীরা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে যাত্রী নিয়ে আসা এসব বাসের বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের মতো আশপাশের এলাকাগুলোয় চলাচল করে। আকাশ, ঠিকানা, উৎসব, বন্ধনসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস যাত্রী নিয়ে এসেছে। এই জনপদে প্রায় ১৫টি বাসের দেখা মিলেছে।
ঢাকার উত্তরা ইপিজেডে কাজ করেন কামারপুকুর এলাকার আরেক বাসিন্দা আসমত আলী (৩৭)। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কাজ করে সংসার চালাই। আমাদের প্রাইভেট কার নেই। তাই কয়েকজন বন্ধু মিলে বাস ভাড়া করে বাড়িতে এসেছি। বাসে চড়েই কর্মস্থলে ফিরে যাব।’ তিনি বলেন, ‘টাকা সামান্য একটু বেশি লাগলেও আরামে যাতায়াত করা যায়। তাই প্রতিবছর ঈদে এভাবে আসি এবং যাই।’
বাসের চালক তমিজ আলম ও রায়হান হোসেন ঈদযাত্রীদের নিয়ে আসতে পেরে খুবই খুশি। তাঁরা বলেন, এসব কর্মজীবী মানুষ অনেক পরিচিত। ঈদের ছুটি না কাটিয়ে তাঁদের ঢাকা থেকে নিয়ে আসেন আবার নিয়ে যান। এখানে এসে যে আপ্যায়ন ও যত্ন পান, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। অনেকটা জামাই আদর। তাঁরা বলেন, ফেরার সময় কর্মজীবীদের পরিবারের সবাই আসেন। তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তখন তাঁদেরও মনটা খারাপ হয়ে যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র এল ক
এছাড়াও পড়ুন:
যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার সামনে অনুসারীদের স্লোগান
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে যুবলীগ নেতা মো. নানু মিয়াকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের শারফিন সুপারমার্কেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে তার অনুসারীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়েছেন। নানু মিয়া নবীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নবীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সদস্য।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। ওইদিন সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে আগুন দিয়ে নাশকতার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরদিন গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই স্বাধীন চন্দ্র তালুকদার বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নানু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, গ্রেপ্তারের পরপরই নানু মিয়ার ২৫-৩০ জন অনুসারী থানার সামনে জড়ো হয়ে মুক্তির দাবী করেন। এ সময় তারা ‘ওসির দুই গালে জুতা মার তালে তালে, ওসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘সারা বাংলার জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই কর’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেট অ্যাকশন, নানু ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।