ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার
Published: 2nd, April 2025 GMT
কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে, কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছেন হাজার বছরের পুরোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, আবার কেউ মুঠোফোনে সেলফি ও গ্রুপ ছবি তুলছেন। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের এমন উপচে পড়া ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে নওগাঁর বদলগাছীতে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে হাজারো দর্শনার্থী ছুটে আসছেন ঐতিহাসিক এই স্থানে।
ঈদুল ফিতরের দিন গত সোমবার ও ঈদের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে মানুষের ঢল নেমেছিল। দুই দিনেই বিক্রি হয়েছে ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার টিকিট। গতবারের মতো এবারও টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা করা হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য টিকিট প্রয়োজন হয় না।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘর কাস্টডিয়ানের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সোমবার সকাল ১০টা থেকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হয়। এদিন ১৮ হাজার ৬৭৮ জন দর্শনার্থী প্রবেশ করেন এবং টিকিট বিক্রি হয় ৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৮০ টাকার। ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৯৪৮, আর টিকিট বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৯০ হাজার ১৭০ টাকার। জাদুঘর কর্তৃপক্ষের ধারণা, ঈদের ছুটির তৃতীয় দিন আজ বুধবারও দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে।
ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত হলেও এটি জয়পুরহাট জেলা শহরের কাছাকাছি। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে পাহাড়পুর মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। জয়পুরহাট রেলস্টেশন থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার আর নওগাঁ জেলা শহর থেকে এটি ৩২ কিলোমিটার দূরে। এ কারণে অনেকেই সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথে জয়পুরহাট হয়ে পাহাড়পুরে যাচ্ছেন। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৌদ্ধবিহারের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া যানজট এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে ঘুরে ঘুরে আনন্দ উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘এই টাকা দিলে মান-সম্মান থাকে?’ বলা সেই ওসিকে বদলি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় ‘ঘুষ’ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ওসি এনায়েত হোসেনকে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে।
বদলি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওসির টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, জিডি বা অভিযোগের কাগজের সঙ্গে স্টেপলার করে রাখা কিছু টাকা হাতে নিয়ে ওসি এনায়েত হোসেন এক ব্যক্তিকে বলছেন, ‘এই টাকা দিলে মানসম্মান থাকে?’ এ সময় ওসির সামনে আরও দুই-তিনজনকে বসে থাকতে দেখা যায়।
জানা গেছে, উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে ওসির কথোপকথনের ভিডিওটি কেউ ধারণ করেন। কোনো ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল দিনব্যাপী কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। এরপরই তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হলো।
এর আগে গত বুধবার ওসি এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে ডাকযোগে অভিযোগ দেন যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সম্পাদক সালাউদ্দিন মোল্লা ও ভূক্তভোগী এক নারী। অভিযোগপত্রে সালাউদ্দিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে গত ১১ এপ্রিল শ্যামলদী গ্রামে অনুমোদনহীন বাউল গানের আসর টাকার বিনিময়ে চলার অনুমতি দেন।
এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সরে যান ওসি এনায়েত হোসেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা মুখে পড়েন ওসি। এ ছাড়া অনিয়ম, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় জিসাসে’র সহসাংগঠনিক রিয়াজুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী আনোয়ারা আক্তার বেবী।
অভিযোগে আনোয়ারা উল্লেখ করেন, তার স্বামী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারের অনুসারী। দুপ্তারা বাজারে তার ছবি সংবলিত ব্যানার টানাতে গেলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। এর প্রতিবাদ করলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা। রাতে তোরণটি ভেঙে অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালান। ফাঁকা গুলি ছুড়ে ঘণ্টাব্যাপী এলাকায় তাণ্ডব চালান হামলাকারীরা।
এ ঘটনার পর আড়াইহাজার থানায় অভিযোগ দিতে গেলে না নিয়ে উল্টো টাকা দাবি করেন ওসি এনায়েত হোসেন। পরবর্তীতে থানার সহযোগিতা না পেয়ে এলাকা ছেড়ে স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আনোয়ারা আক্তার।