বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেনের নাম ভাঙিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবদল নেতার নাম শাহ আলম সরকার। তিনি উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক।

চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুপুরে ড. মারুফ নিজেই তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই যুবদল নেতা। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে দলীয় ফোরামে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড.

খন্দকার মোশাররফ হোসনের ছেলে ড. মারুফ তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘দাউদকান্দি উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাহআলম সরকার আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির দর কষাকষি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আমি পরিষ্কার করে বলছি, এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই। অনতিবিলম্বে কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদা চাইলে তাকে প্রতিহত করুন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিন। কোনও চাঁদাবাজের স্থান দাউদকান্দি ও তিতাসে হবে না।’

নিজ দলের নেতার বিরুদ্ধে হঠাৎ কেন এমন অভিযোগ, এ প্রশ্নের জবাবে রাতে ড. মারুফ মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, ‘শুধু ফেসবুক পোস্ট নয়, মঙ্গলবার এলাকায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালেও একই বক্তব্য দিয়েছি। আমার ও দলের বার্তা ক্লিয়ার- চাঁদাবাজদের ঠাঁই দলে নয়, কারাগারে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাহ আলমের বিরুদ্ধে দলের অনেকেই আমাকে বলেছেন, তাই আমি এ বিষয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছি। জেলা যুবদল তদন্ত করলে আশা করি সত্যতা পাবে।’

তবে অভিযোগের অস্বীকার করে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাহ আলম সরকার সমকালকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার কাছে কেমন যেন ষড়যন্ত্র মনে হচ্ছে। সারা জীবন পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে গিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। এখন এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে দল থেকে পুরস্কার-তিরস্কার যাই দেয় মাথা পেতে নেব।’

অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে জানিয়েছি। কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের পক্ষ থেকেও তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ য বদল ন ত ফ সব ক প উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাইফুলের বাবা বললেন, ছেলের লাশ দাফনের জায়গা নেই

কুমিল্লা বুড়িচংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত তিন তরুণ স্টেশনে স্টেশনে ঘুরে পরিত্যক্ত বিভিন্ন জিনিসপত্র কুড়াত। তাদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে রেলওয়ে পুলিশ, নাম সাইফুল ইসলাম (১৮)। বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের বানিয়াপাড়া এলাকায়, বাবা মোখলেছুর রহমান। সন্তানের মরদেহ শনাক্তের পর মোখলেছুর সাংবাদিকদের বলেন, 'ছেলের লাশ দাফন করার মতো জায়গা নেই। তাই পুলিশকে বলেছি, লাশটি যেন সরকারিভাবে দাফন করা হয়।'

কুমিল্লা রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ছেলের মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে মোখলেছুর রহমান আরও বলেন, ‘আমার ৩ ছেলের মধ্যে সাইফুল সবার বড়। মঙ্গলবার দুপুরে বোতল কুড়াতে কসবা স্টেশনে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। রাতেই ফেরার কথা ছিল। আজ সকালে একজন ভিডিওতে দুর্ঘটনায় নিহতদের দেখালে স্টেশনে এসে ছেলেকে পাই।’

মোখলেছুর আরও বলেন, ‘সাইফুলের সঙ্গে নিহত অন্য দুজনও স্টেশনে স্টেশনে বোতলসহ পরিত্যক্ত জিনিসপত্র কুড়াত। তাদের মধ্যে একজন তুহিন। তবে বাড়ি কোথায় জানি না।’ মোখলেছুর দীর্ঘ দিন ধরে শহরে থাকেন। ভিটেমাটি না থাকায় স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসবাস করেন। 

আজ বুধবার ভোরে বুড়িচং উপজেলার মাধবপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজন নিহত হন। সকাল ১০টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) সোহেল মোল্লা বলেন, '৩ জন ভোরের দিকে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে বলে মনে হচ্ছে। সাইফুল ছাড়া নিহত বাকি দুজনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। বিস্তারিত পরিচয় না পেলে মরদেহ দাফনের জন্য আঞ্জুমানে দেওয়া হবে।'

সম্পর্কিত নিবন্ধ