ঈদের ঢাকা: মিরপুরে জাতীয় চিড়িখানায় উৎসবের আমেজ
Published: 1st, April 2025 GMT
ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিন ঢাকার মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি উৎসবের আমেজ তৈরি করে। রাজধানী ও আশপাশের জেলার বাসিন্দারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে দেখছে খাঁচাবন্দি ‘চিড়িয়া’, পাখি, জলজ প্রাণী। ঈদে ঢাকার মানুষের বিনোদনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এই চিড়িয়াখানা, যেখানে বিলুপ্তপ্রায় অনেক জীব-জন্তু রাখা আছে।
ঈদুল ফিতরের উৎসব ঘিরে টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটি। এই ছুটিতে ঈদের দিনের মতো দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) মিরপুর চিড়িয়াখানায় দেখা যায় দর্শনার্থীদের সরব সমাগম।
চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, কেউ এসেছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে; কেউ কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, জন্তু-জানোয়ার, হরেক রকমের পাখি দেখছেন তারা। খাঁচাবন্দি জন্তু, পাখি, উভচর প্রাণী দেখতে এক খাঁচা থেকে আরেক খাঁচায় ছুটতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের।
চিড়িয়াখানার ভেতরে মো.
আরো পড়ুন:
ঈদে ঢাকায় বিনোদন: জাতীয় চিড়িখানায় উৎসবের আমেজ
সন্তানের কাছে তার বাবা সেলিব্রিটি না: অপু বিশ্বাস
সানাউর হক বলেন, “গত বছর থেকে চিড়িয়াখানায় আসার জন্য ছেলে-মেয়েরা বায়না ধরছিল। বিভিন্ন কারণে আসতে পারি নাই। আজ (ঈদের পরের দিন) সবাইকে নিয়ে এসেছি। পরিবারের সবার সঙ্গে দিনটি ভালোই কাটছে।”
সানাউল হকের মেয়ে সাদিয়া হক (১০) বলেন, “চিড়িয়াখানায় সাপ, বাঘ, হরিণ ও বানর দেখেছি। জীবনে প্রথম আসলাম। আমার খুবই ভালো লেগেছে। সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখছি।”
চিড়িয়াখানায় আসা আরেকজন দর্শনার্থী হালিম মোহাম্মদ। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় ভাড়া থাকেন তারা।
রাইজিংবিডি ডটকমকে হালিম মোহাম্মদ বলেন, “গ্রামের বাড়ি বিভিন্ন সমস্যার কারণে যাওয়া হয়নি এবার। তাই শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়, আমার বোন-ভাগিনাসহ চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছি। দিনটা ভালোই কাটছে।”
হালিম মোহাম্মদের ভাগ্নে আকাশ মাহমুদের সঙ্গে কথা বলে তার কাছ থেকে চিড়িয়াখানা দর্শনের সুন্দর অভিব্যক্তি পাওয়া গেলে। তিনি বলেন, “চিড়িয়াখানার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। ভেতরের জায়গা অনেক সুন্দর। বিভিন্ন রকম পাখি-প্রাণী দেখেছি। বেশ আনন্দ করেছি। লেকের পাড়টি অনেক সুন্দর। আমার খুব ভালো লেগেছে।”
জাতীয় চিড়িয়াখানার তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় চিড়িয়াখানায় বাঘ, ভাল্লুক, হরিণ, সিংহ, বানর, জলহস্তী, কুমির, সাপ, ইম্পালা, গয়াল, উট পাখি, লামা, ময়না, টিয়া, ক্যাঙারু, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ময়ূর, উটপাখি, ইমু, শঙ্খচিল, কুড়াবাজ, তিলাবাজ, গন্ডার, হায়েনাসহ ১৩৬ প্রজাতির তিন হাজার ৩৪টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদারের সঙ্গ কথা হলে রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, “ঈদের দিন (৩১ এপ্রিল) চিড়িয়াখানায় ৭০ হাজার দর্শনার্থী হয়েছিল। জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। গতকালের চেয়ে আজ (মঙ্গলবার) দর্শনার্থীর চাপ বেশি। আজকে কত হাজার দর্শনার্থী এসেছেন, তা পরে কাউন্ট করে জানানো হবে।”
ঘুরে দেখা গেল চিড়িয়াখানার ভেতরে খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। ঈদের ছুটির কারণে পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ক্যান্টিনটিও বন্ধ রাখা হয়েছে।
খেয়াল করে দেখা গেল, দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় প্রবেশের আগেই গেটের সামনের রেস্তরাঁ থেকে খেয়ে নিচ্ছেন। আবার অনেকেই বাসা থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে প্রবেশ করেছেন। ভেতরে কথা বলে জানা গেল, গরমে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে পড়লে কিংবা বাচ্চাদের ক্ষুধা লাগলে পরিবারের সবাই খেয়ে নিচ্ছেন। বিশ্রামাগার এবং ঘাসের মধ্যে চাঁদর বিছিয়ে খাবার খেয়েছেন অনেকে।
সব মিলে চিড়িয়াখানায় ঈদের ছুটির উৎসব লেগেছে। বুধবার সকাল থেকেই চিড়িয়াখানায় আবার দর্শনার্থীদের মেলা বসবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ পর ব র এস ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সেই সুযোগ এখন আর হয় নেই: ন্যান্সি
ঈদ এলেই উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। সাধারণ মানুষের মতো পর্দার মানুষগুলোও এই দিনটিকে ঘিরে সাজিয়ে রাখেন বিশেষ পরিকল্পনা। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা, ঘুরে বেড়ানো-সব মিলিয়ে ঈদ মানেই বাড়তি আনন্দ। তবে আগের মত ঈদের আনন্দ এখন নেই বলে জানালেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি।
ন্যান্সি সমকালকে বলেন, ‘এবার ঈদ ঢাকায় করছি। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর থেকেই ঢাকায় ঈদ করি। আমরা যারা ঢাকার বাইরে থেকে আসি, ঈদে তারা নিশ্চয় গ্রামের বাড়িতে যান। আমাদের কিন্তু সেই সুযোগ নেই। আমরা কিন্তু চাইলেই যেতে পারি না।’
ছোটবেলা ও এখনকার ঈদের মধ্যে পার্থক্য বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ছোট-বড়বেলা ঈদের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমি একটা জিনিস বুঝেছি, বাবা-মাকে ছাড়া ঈদ করা কঠিন। আমার বাবা-মা তো বেঁচে নেই আমি কোথায় যাবো। যেকোনো উৎসবে অনেক বেশি খারাপ লাগে। তবে এখন সন্তানরাই আমার সব। সন্তান ও পরিবার নিয়েই এখন আমার ঈদ।’
ন্যান্সির কথায়, ‘একটা সময় আমার মা-বাবাই সব ধরনের খোঁজ-খবর নিতেন। ঈদের দিন বা পরের দিন আমি তাদের বাড়ি যেতাম, নয়তো তারা আমার বাড়ি আসতেন। অনেক হইহুল্লো করে দিন যেতো। কিন্তু এখন তো আর সেটা নেই।’
ন্যান্সি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, আমিসহ আমার বাচ্চাদের টেনশন ছিল তাদেরই। এই যে একটা ঈদ আসলো, মা যে কত কিছু করতেন তা বলে বোঝানো যাবে না। আমার টিভি অনুষ্ঠানসহ সব কিছু মা খেয়াল রাখতেন। একটা গান আসলে আমার মায়ের যে উচ্ছ্বাস আমি দেখেছি তার আর কারও মধ্যে দেখিনি।’