ম্যাচসেরার পুরস্কার এক বোতল শ্যাম্পেন। একসময় এ ঐতিহ্য ছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের। সময়ের পালাবদলে এখন শ্যাম্পেনের জায়গায় ছোট্ট একটা ট্রফি। আর্লিং হলান্ডের শোকেসে নিশ্চয়ই এমন অনেক আছে। যদিও ম্যানচেস্টার সিটি তারকার সাবেক ক্লাব ব্রাইন এফকে একটু আলাদা। অদ্ভুত কিংবা অভিনবও বলতে পারেন। কারণ, গত রোববার নরওয়ের শীর্ষ লিগের এই ক্লাব ম্যাচসেরার পুরস্কার হিসেবে যা দিয়েছে, সাধারণত তা দিতে দেখা যায় না।

আরও পড়ুনম্যারাডোনাকে হত্যা করা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হয়েছে২ ঘণ্টা আগে

চার ডজন ডিম। গতকাল ব্রাইনের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, শীতল মুখে চারটি ডিমের ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে আছেন ক্লাবটির ডাচ গোলকিপার ইয়ান দে বোয়ের। ক্যাপশনে লেখা, ‘বোদো/গ্লিমটের বিপক্ষে ম্যাচসেরা ইয়ান দে বোয়ের দাদির পুরস্কার নিয়ে বাড়ি ফিরবে, যেটা এই ম্যাচে দেওয়া হয়েছে, স্টেইনসল্যান্ড অ্যান্ড কোম্পানির পক্ষ থেকে চার ট্রে ডিম।’

ব্রাইনের জন্য ম্যাচটি ছিল লিগ মৌসুম শুরুর। হেরেছে ১-০ গোলে, হারের ব্যবধান বাড়েনি ইয়ানের বিশ্বস্ত হাত দুটির কল্যাণে। বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত সেভের পাশাপাশি পেনাল্টি সেভ করেন দ্বিতীয়ার্ধে।

প্রশ্ন হচ্ছে, দুনিয়াতে এত পুরস্কার থাকতে ডিম কেন? উত্তর, স্থানীয় কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা স্থাপনে ব্রাইনের একটি পদক্ষেপ। নরওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর ব্রাইনে অবস্থিত ক্লাবটি এ শহরের নামেই। স্থানীয় কৃষিতে মাংস, দুধ ও ডিম উৎপাদন সর্বাধিক। কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় ক্লাবটির সমর্থকেরা ম্যাচে প্রায়ই গলা ফাটান, ‘আমরা কৃষক এবং এ জন্য গর্বিত’ স্লোগানে। মাঠের পাশে ট্রাক্টরে বসে ম্যাচ দেখার ‘ভিআইপি’ টিকিটের ব্যবস্থাও আছে।

আরও পড়ুনমেসির দেহরক্ষীকে নিষেধাজ্ঞা৭ ঘণ্টা আগে

তবে ইয়ানের হাতে ডিমের ট্রে দেখে ব্রাইনের কোনো খেলোয়াড় আগামী সপ্তাহের ম্যাচে পুরস্কার হিসেবে ডিমের আশা করলে তাঁকে হতাশ হতে হবে। কারণ, ক্লাবটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৬ এপ্রিল ক্রিস্টিয়ানসান্দের বিপক্ষে ম্যাচে তাদের সেরা খেলোয়াড়কে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কয়েক কার্টন দুধ দেওয়া হবে।

ফুটবলে অদ্ভুত পুরস্কার আগেও দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রিমিয়ার লিগে মামেলোদি সানডাউনসের অধিনায়ক হেলম্ফো কেকানা ম্যাচসেরার পুরস্কার হিসেবে পেয়েছিলেন ৫ জিবি মোবাইল ফোনের ডেটা। বিশাল এক স্মারক সিমও পেয়েছিলেন। সে বছরই আর্জেন্টিনিয়ান সুপার কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বোকা জুনিয়র্সকে হারিয়ে ম্যাচসেরা হয়ে মুকুট পেয়েছিলেন রিভার প্লেটের ফ্রাঙ্কো আরমানি। বার্গার কিংয়ের পক্ষ থেকে সেই মুকুট তাঁর মাথায় পরিয়েও দেওয়া হয়েছিল।

২০২০ সালে লিগ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে ফুলহামের বিপক্ষে জোড়া গোল করে ম্যাচসেরা হন সাইদ বেনরাহমা। পুরস্কার? ভিডিও গেম ‘ক্রাশ ব্যান্ডিকোট ৪’–এর একটি কপি। এখানেই শেষ নয়।

২০১৯-২০ মৌসুমে রিয়াল সোসিয়েদাদে ধারে খেলাকালীন মাসসেরা হয়েছিলেন নরওয়ে ও আর্সেনাল মিডফিল্ডার মার্টিন ওডেগার্ড। পুরস্কার হিসেবে পেয়েছিলেন স্থানীয় সুপারমার্কেটের সরবরাহ করা বিশাল একটি মাছ। ২০১৮ সালে স্কটিশ প্রিমিয়ার লিগে প্যাট্রিক থিসল ক্লাবের কনোর স্যামন ডান্ডির বিপক্ষে গোল করে স্পনসরদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন বড় সাইজের একটা পিৎজা।
ডিম এই তালিকায় হয়তো নবতর সংযোজন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ক র হ স ব ব র ইন র

এছাড়াও পড়ুন:

আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ

ইংল্যান্ডপ্রবাসী হামজা দেওয়ান চৌধুরীর লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেকের পরই বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা বেড়েছে বহুগুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজার পথ ধরে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহী দেখিয়েছেন সামিত সোম-কিউবার মতো প্রবাসীরা। দেশের ফুটবলে যেন গণজোয়ার বইছে। এর মধ্যে আজ ঘরোয়া ফুটবলের বিগ ম্যাচ। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফুটবলের মহারণই বলা চলে। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং বসুন্ধরা কিংস। 

২০১৮ সালে কিংস পেশাদার ফুটবলে আসার পর থেকে লিগ ট্রফি জিততে ব্যর্থ হওয়া আবাহনীর জন্য ফেডারেশন কাপের ফাইনালটি পুনর্জন্মই বলা চলে। গত মৌসুমে শিরোপাহীন থাকা দলটির সমর্থকরা এবার আত্মবিশ্বাসী ডাগ আউটে এ কে এম মারুফুল হকের মতো কোচ থাকায়। আর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া কিংসের সামনে সুযোগ নিজেদের রাজত্ব ধরে রাখা। দেশের ফুটবলের দুই হেভিওয়েটের এ লড়াইটি শুরু হবে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে। ফেড কাপের ট্রফির এ লড়াইটি দেখা যাবে টি স্পোর্টসে।

ময়মনসিংহে গত মৌসুমেও ফেডারেশন কাপের ফাইনাল হয়েছিল। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ট্রফি জিতেছিল কিংস। আজ জিতলে তাদের শোকেসে জমা হবে ফেড কাপের চার নাম্বার ট্রফিটি। ঘরোয়া ফুটবলে এ প্রতিযোগিতা মানেই আবাহনীর দাপট। সর্বোচ্চ ১২ বার চ্যাম্পিয়ন প্রমাণ করে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের আধিপত্য। এবার সংখ্যাটা ১৩তে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি তাদের সামনে। আবাহনী আত্মবিশ্বাসী এই জন্য যে গত ৮ এপ্রিল প্রথম কোয়ালিফায়ারে টাইব্রেকারে কিংসকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। সেই ম্যাচে পরাজিত বসুন্ধরাকে শিরোপা মঞ্চে উঠতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারাতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। অতীতের মতো কিংস ব্যালান্স টিম নয়। তাদের খেলাতেও পুরোনো সেই ধার নেই। প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের তিন নাম্বারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোচ ভ্যালেরিও তিতার অধীনে ছন্নছাড়া বসুন্ধরা। এবারের মৌসুমে যে অবস্থা তাতে লিগ শিরোপা জেতা দলটির জন্য কঠিন। 

তাই ফেডারেশন কাপকে পাখির চোখ করেছেন কিংস কোচ তিতা, ‘আগের ম্যাচে আমরা আবাহনীর কাছে হেরেছি। সেটি ভুলে যেতে চাই। যেহেতু আগামীকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচটি ফাইনাল, তাই আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি জিততে পারব।’ 

পেশাদার ফুটবলে অভিষেক মৌসুমে এই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে মারামারিতে ২০১৮ সালের সেই ফাইনালটি কলংকিত হয়ে আছে। সেদিন থেকে দেশের ফুটবলে কিংস-আবাহনীর দ্বৈরথের সূচনা হয়েছিল। ২০১৮ সালে আবাহনীর কাছে হারার পরের আসরের মধ্যে তিনবারই ট্রফি জিতেছে কিংস। অনুপযোগী মাঠে খেলা সম্ভব নয় বলে ২০২১-২২ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে বসুন্ধরা। সেই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী। তার পরের আসরে আবাহনীকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। 

গত মৌসুমে শিরোপা পুনরুদ্ধার করা বসুন্ধরা জিতেছিল ঘরোয়া ট্রেবল। এবার শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ভ্যালেরিও তিতার দলের। কারণ, অন্য পাশে ডাগ আউটে যে আছেন মারুফুল হকের মতো দারুণ মস্তিষ্কের কোচ। এই মৌসুমে লিগ এবং ফেড কাপ– দু’বারই কিংসকে হারিয়েছে আবাহনী। 

কক্ষপথে ফেরার জন্য এই ট্রফিটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানা মারুফুলের, ‘ফাইনাল বলে আমরা কোনো চাপ নিচ্ছি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আমি পুরোপুরি আশাবাদী। যদিও বসুন্ধরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এবং খুব ভালো একটা টিম, তারপরেও আমি আশাবাদী। মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ দুই ম্যাচে তাদের আমরা হারিয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ
  • ‘২০১৮’ ফেরাতে চায় জিম্বাবুয়ে
  • ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ বাংলাদেশে মাসাকাদজার পছন্দ ‘বাটার চিকেন’