নাটোরের লালপুর উপজেলায় ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ১৯২ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার এজাহারে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫০ জনকে।

আজ মঙ্গলবার সকালে লালপুর থানায় মামলাটি করেছেন ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম। মামলার পর পুলিশ সাত আওয়ামী লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আজ বিকেলে আদালতে পাঠিয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার সকাল পৌনে ৯টায় লালপুরের রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এ সময় শরিফুল ইসলামসহ কয়েকজন বিএনপি কর্মী তাঁদের স্লোগান দিতে নিষেধ করেন। এর জের ধরে মাঠের পাশে চিনিবটতলা মোড়ে একদল লোক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এতে শরিফুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। আহত হয়েছেন সাব্বির (২৪) নামের বিএনপির এক কর্মী।

এ ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলাটি করেন শরিফুল ইসলাম। মামলায় লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন, লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খালিদ হোসেনসহ ৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার পর পুলিশ আওয়ামী লীগের সাতজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মিজানুর রহমান (২৮), ফাহিম আহমেদ (২৫), মেহেদী হাসান (৩০), আবু সাদাত (৪২), আরাফাত আল বাশার (২৮), রূপক হোসেন (২০) ও আবদুল কাদের (৬০)। তাঁদের সবার বাড়ি রামকৃষ্ণপুর গ্রামে।

আজ বিকেলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের লালপুর আমলি আদালতে হাজির করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধক (জিআরও) মাহবুব হোসেন। এ বিষয়ে জানার জন্য লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাঁকে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। পুলিশ সুপারকে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।

আরও পড়ুনঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৩১ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচ‌নে একক প্রার্থী দে‌বে ৫টি ইসলামি দল

আগামী জাতীয় নির্বাচ‌নে সমঝোতার মাধ‌্যমে আসনভি‌ত্তিক একক প্রার্থী দে‌বে কওমি সমর্থিত পাঁচ‌টি ইসলামি দল। দলগু‌লো হ‌লো— চর‌মোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন, মাওলানা মামুনুল হ‌কের খেলাফত মজ‌লিস, জ‌মিয়‌তে উলামা‌য়ে ইসলাম, খেলাফত মজ‌লিস অপর অংশ ও মুফ‌তি ইজহা‌রের নেজা‌মে ইসলাম পা‌র্টি।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অফিসে ৫টি ইসলামী দলের এক যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

সভায় অন্য চার দলের নেতৃত্ব দেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি হজরত মাওলানা আব্দুল রব ইউসুফী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারি।

সভায় সমকালীন রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ শেষে নির্বাচনসহ ৫টি বিষ‌য়ে একমত পোষণ করা হয়—

১. নির্বাচনে ইসলামপন্থিদের আসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে কৌশলগত আলোচনা এগিয়ে নেওয়া।
২. আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত একটি ইসলামি কল্যাণরাষ্ট্র তৈরির ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, যাতে নতুন করে কোনো ফ্যাসিবাদ কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে।
৩. ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করা।
৪. প্রয়োজনীয় ও মৌলিক সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান।
৫. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করা।

সভায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের পক্ষে মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষে মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন এবং মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন, খেলাফত মজলিস অপর অং‌শের পক্ষে নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল জলিল, যুগ্মমহাসচিব অ্যাড. জাহাঙ্গীর হুসেন এবং উলামা বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আলী হাসান উসামা এবং নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষে মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী,অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ এবং জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীম আবরার।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ