‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৭
Published: 1st, April 2025 GMT
নাটোরের লালপুর উপজেলায় ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ১৯২ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার এজাহারে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫০ জনকে।
আজ মঙ্গলবার সকালে লালপুর থানায় মামলাটি করেছেন ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম। মামলার পর পুলিশ সাত আওয়ামী লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আজ বিকেলে আদালতে পাঠিয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার সকাল পৌনে ৯টায় লালপুরের রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এ সময় শরিফুল ইসলামসহ কয়েকজন বিএনপি কর্মী তাঁদের স্লোগান দিতে নিষেধ করেন। এর জের ধরে মাঠের পাশে চিনিবটতলা মোড়ে একদল লোক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এতে শরিফুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। আহত হয়েছেন সাব্বির (২৪) নামের বিএনপির এক কর্মী।
এ ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলাটি করেন শরিফুল ইসলাম। মামলায় লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন, লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খালিদ হোসেনসহ ৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার পর পুলিশ আওয়ামী লীগের সাতজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মিজানুর রহমান (২৮), ফাহিম আহমেদ (২৫), মেহেদী হাসান (৩০), আবু সাদাত (৪২), আরাফাত আল বাশার (২৮), রূপক হোসেন (২০) ও আবদুল কাদের (৬০)। তাঁদের সবার বাড়ি রামকৃষ্ণপুর গ্রামে।
আজ বিকেলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের লালপুর আমলি আদালতে হাজির করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধক (জিআরও) মাহবুব হোসেন। এ বিষয়ে জানার জন্য লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাঁকে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। পুলিশ সুপারকে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
আরও পড়ুনঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৩১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: তথ্য উপদেষ্টা
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া, দেশি-বিদেশি যারা আমাদের সহযোগী ও স্টেকহোল্ডার রয়েছে, তাদের পরামর্শ ছাড়া এ বিষয়ে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জনগণ বারবার বলছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে। আমরা মনে করি, সরকার সবার সঙ্গে পরামর্শ-পর্যালোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেবে।
বুধবার লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের পূর্ব নারায়ণপুর ইসলামিয়া জুনিয়র দাখিল মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বাড়িতে পৌঁছে মা-বাবাসহ স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার পর দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করেন।
নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর এবং জুন দুটি টাইমলাইন আছে। এই টাইমলাইনের ভেতরেই নির্বাচন হয়ে যাবে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। এটি হচ্ছে সংস্কার কতটুকু হবে, কীভাবে হবে, তার ওপর নির্ভর করে। এর ভেতরেই নির্বাচন আমরা সীমিত রাখি। এর বেশি উচ্চাশা সরকারের ভেতর থেকেও নেই। আর এটা নিয়ে ধোঁয়াশারও কিছু নেই যে, কবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন দিবে কি, দিবে না। অবশ্যই নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ আলমের বাবা ও ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সংগঠক হামজা মাহবুব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরমান হোসেন, মুখপাত্র বায়েজীদ হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মুরাদ।