ভারতের প্রয়াত শিল্পপতি টাটা সন্সে রতন টাটার যে হিস্যা বা অংশ, তার অধিকাংশটাই চলে যাবে দুটি দাতব্য ফাউন্ডেশনে। রতন টাটা এনডাউমেন্ট ফাউন্ডেশন (আরটিইএফ) ও রতন টাটা এনডাউমেন্ট ট্রাস্ট (আরটিইটি) নামের এই দুটি প্রতিষ্ঠানে যাবে রতন টাটার ৩ হাজার ৮০০ কোটি রুপির সম্পদ। এই অর্থ বাংলাদেশের ৫ হাজার ৩২০ কোটা টাকার মতো (প্রতি রুপি ১ টাকা ৪০ পয়সা ধরে)। আরটিইএফ ও আরটিইটি বিভিন্ন দাতব্য ও জনহিতকর কাজে রতন টাটার সম্পদ ব্যয় করবে।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, রতন টাটার এই সম্পদের মধ্যে টাটা সন্সের সাধারণ ও অগ্রাধিকার শেয়ার এবং অন্যান্য সম্পদও থাকবে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে টাটা শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর অন্যান্য আর্থিক সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ তাঁর দুই সৎবোন শিরিন জেজিভয় ও ডিয়ানা জেজিভয়ের নামে রেখে গেছেন, যার মূল্য আনুমানিক ৮০০ কোটি রুপি। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে ব্যাংকে থাকা স্থায়ী আমানত (এফডি), আর্থিক উপকরণ, ঘড়ি এবং চিত্রকর্মের মতো ভৌত সম্পদ।

ভারতের প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটা তাঁর আস্থাভাজন ব্যক্তি মোহিনী এম দত্তের মাধ্যমে তৈরি করা উইলে ভাই জিমি টাটা, দুই সৎবোন শিরিন জেজিভয় ও ডিয়ানা জেজিভয়, নির্বাহী সহকারী (রতন টাটা) শান্তনু নাইডু এবং নিজের পোষা প্রাণীসহ কমপক্ষে দুই ডজন সুবিধাভোগী তথা উপকারভোগীর নাম উল্লেখ করে গেছেন।

রতন টাটার অবশিষ্ট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পাবেন মোহিনী দত্ত। তবে মোহিনী দত্ত টাটা ও টাটা-বহির্ভূত কোম্পানি এবং বাড়িগুলোর কোনো শেয়ার পাবেন না।

রতন টাটার সম্পদের কে কী পাবেন

রতন টাটার উইল অনুযায়ী, তাঁর সম্পদের মধ্যে ভাই জিমি টাটা রুপার জিনিসপত্র ও গয়নাপত্র পাবেন। প্রয়াত শিল্পপতির জুহু সম্পত্তির মালিকানার অর্ধেকও তাঁর (জিমি) থাকবে, যা রতন টাটা তাঁর বাবা নাভাল টাটার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন। এর বাকি অংশ নোয়েল টাটা ও সিমোন টাটা ভাগ করে নেবেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, টাটা সন্সে রতন টাটার অংশ সেটি তাঁর দুটি ফাউন্ডেশনে চলে যাবে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ যাবে রতন টাটা এনডাউমেন্ট ফাউন্ডেশনে (আরটিইএফ)। বাকি অংশ পাবে রতন টাটা এনডাউমেন্ট ট্রাস্ট (আরটিইটি)।

রতন টাটার পোষা প্রাণীদের জন্য ১২ লাখ রুপির একটি তহবিল তৈরি করা হবে। তাতে প্রতিটি প্রাণী প্রতি ত্রৈমাসিকে ৩০ হাজার রুপি করে পাবে। তাঁর উইলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শান্তনু নাইডু ও প্রতিবেশী জ্যাক মালাইটের ঋণ মওকুফ করা হবে।

টাটা গ্রুপের প্রয়াত প্রধান রতন টাটা তাঁর ‘শেষ’ উইলটি তৈরি করেন ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। এর আগে তিনি দুটি উইল করেছিলেন—প্রথমটি ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে ও পরেরটি ২০০৯ সালের নভেম্বরে। শেষ উইলে রতন টাটা উল্লেখ করেন যে টাটা সন্সে তাঁর শেয়ার কোম্পানির বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডার ছাড়া অন্য কারও কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।

রতন টাটার আলিবাগের বাংলোটি মেহলি মিস্ত্রির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মেহলি মিস্ত্রিই মূলত এই সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মিস্ত্রি টাটার তিনটি বন্দুকও পাবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রতন ট ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: তথ্য উপদেষ্টা 

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া, দেশি-বিদেশি যারা আমাদের সহযোগী ও স্টেকহোল্ডার রয়েছে, তাদের পরামর্শ ছাড়া এ বিষয়ে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জনগণ বারবার বলছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে। আমরা মনে করি, সরকার সবার সঙ্গে পরামর্শ-পর্যালোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেবে।

বুধবার লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের পূর্ব নারায়ণপুর ইসলামিয়া জুনিয়র দাখিল মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বাড়িতে পৌঁছে মা-বাবাসহ স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার পর দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করেন।

নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর এবং জুন দুটি টাইমলাইন আছে। এই টাইমলাইনের ভেতরেই  নির্বাচন হয়ে যাবে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। এটি হচ্ছে সংস্কার কতটুকু হবে, কীভাবে হবে, তার ওপর নির্ভর করে। এর ভেতরেই নির্বাচন আমরা সীমিত রাখি। এর বেশি উচ্চাশা সরকারের ভেতর থেকেও নেই। আর এটা নিয়ে ধোঁয়াশারও কিছু নেই যে, কবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন দিবে কি, দিবে না। অবশ্যই নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ আলমের বাবা ও ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সংগঠক হামজা মাহবুব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরমান হোসেন, মুখপাত্র বায়েজীদ হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মুরাদ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ