নাটোরের লালপুরে রামকৃষ্ণপুর গ্রামে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের ওপরে আওয়ামী লীগের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি।

আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলা বিএনপি ও গেপালপুর পৌর বিএনপির আয়োজনে রামকৃষ্ণপুর চিনিবটতলা ঈদগাহ মাঠে এই সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে লালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম লুলুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির মিডিয়া সেল ও মানবাধিকার কমিটির সদস্য ও নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল।

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তার দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তাদের লেজুরবৃত্তি করা দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসী বাহিনীরা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। গতকাল ঈদের নামাজ শেষে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপিসহ সাধারণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। অথচ মূল দুস্কৃতিকারীরা এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদকে ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। আমরা লালপুর বাগাতিপাড়ার সবাই একত্রিত আছি। এখানে যদি আর একটুা গুলি চলে; আমরা কেউ আর হাতে চুরি পরে বসে থাকবো না।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনর রশিদ পাপ্পু, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক সিদ্দিক আলী মিষ্ঠু, হামিদুর রহমান বাবু, গোলাম মোস্তফা নান্নু, হামিদুর রহমান বাবু, গোপালপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম মোলাম, সদস্যসচিব আলহাজ্ব জিল্লুর রহমান, ঈশ্বরদী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঈশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ রঞ্জু, লালপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ। এ সময় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে হয়। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করেন। এতে বিএনপির একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হয় অন্তত ৫ জন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র ন ম জ শ ষ ব এনপ র স ব ক ন ত কর ম আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা

সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭

রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।

সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।

মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ