‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হবে’
Published: 1st, April 2025 GMT
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’’
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার তেজগাঁওয়ে মানবাধিকার সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ এর উদ্যোগে গুমের শিকার মানুষের স্বজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘‘তিনি গুম-খুন করে তার বাবা-মায়ের হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছেন। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে মানুষ যখন ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করছিলেন, তখনই সবচেয়ে বেশি গুম করা হয়েছিল। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল, নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করা।’’
তিনি বলেন, ‘‘সরকার ইতোমধ্যে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। এই কমিশনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, গুমের সঙ্গে জড়িত অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান।’’
এ সময় বিগত সরকারের সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘যারা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধিতা করেছেন, তাদের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে গুম করা হয়েছে এবং তাদের স্বজনদের আতঙ্কগ্রস্ত করা হয়েছে। গুমের কাজে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও ব্যবহার করা হয়েছিল।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা এখনো ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। যা খুবই দুঃখজনক।’’
মাহফুজ আলম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগকে এ দেশে আর রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সুযোগ দিলে আবার দেশে গুম-খুনের পরিমাণ বেড়ে যাবে। তাদের এই সুযোগ দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনা মানুষের যেসব মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন, সেসব হারানো মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে।’’
উপদেষ্টা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
মতবিনিময় সভায় গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরা গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন এবং গুম হওয়া স্বজনদের সন্ধান চান।
ঢাকা/আসাদ/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় স্বজনদের হামলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিহত
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে কায়সার ইমরান ওরফে বাবুল (৫৯) নামের আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ভাই-ভাতিজারা পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার দুওজ ইউনিয়নের শ্রীরামপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কায়সার ইমরান শ্রীরামপাশা গ্রামের প্রয়াত সিদ্দিকুর রহমানের বড় ছেলে। তিনি দুওজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক না পেয়ে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তবে পরাজিত হন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই রতন মিয়াকে পুলিশ আটক করেছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, থানা-পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কায়সার ইমরান তাঁর ভাই রতন মিয়া ও কামাল মিয়ার ছেলেদের সঙ্গে যৌথভাবে একটি সেচপাম্প দিয়ে জমিতে পানি দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি কায়সারের বোরো খেতে তাঁর ভাতিজারা প্রয়োজনীয় পানি দিচ্ছিলেন না। এ ছাড়া সেচপাম্পের আয়ের অংশ কায়সারকে দেওয়া হতো না। এসব নিয়ে বেশ কয়েকবার তাঁদের সঙ্গে কায়সারের ঝগড়া হয়। এলাকার মানুষ এগুলো মীমাংসার চেষ্টাও করেন। গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে এ নিয়ে কায়সার তাঁর ভাই-ভাতিজাদের সঙ্গে বাড়িতে আলোচনায় বসেন। এ সময় সেচপাম্পের পাশাপাশি পারিবারিক জমি নিয়েও উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ছোট ভাই রতন মিয়া ও ভাতিজা বাপ্পি মিয়া কায়সারের ওপর হামলা চালান। এরপর কায়সারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই রতন মিয়াকে আটক করে।
এ বিষয়ে জানতে নিহত ব্যক্তির অপর ভাই কামাল মিয়ার মুঠোফোন নম্বরে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কায়সার ইমরানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাঁর ভাই–ভাতিজারা বাড়ি থেকে সটকে পড়েন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।