বাঁধে ভাঙনের ২ দিনেরও সংস্কার শুরু হয়নি, ১০ গ্রাম প্লাবিত
Published: 1st, April 2025 GMT
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর বিছট পয়েন্টে বেড়িবাঁধে ভাঙনের দুই দিন অতিবাহিত হলেও সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। এতে ১০ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ প্লাবিত হয়েছে। আরো তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে।
এরইমধ্যে আনুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে উঁচু বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে।
ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা সাড়ে ৯টার দিকে আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামে খোলপেটুয়া নদীর অন্তত দেড়শত ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে বিছট, বল্লভপুর, আনুলিয়া, নয়াখালী, চেঁচুয়া, কাকবসিয়া, পারবিছুট, বাসুদেবপুরসহ আশপাশের অন্তত ৮-১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন: ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের দল
আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস জানান, আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীর বিছট পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের প্রায় ২০০ ফুট ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে ৫ হাজার হেক্টর মৎস্য ঘের। ১ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, এতে শতাধিক বসতবাড়ি ডুবে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে আরো বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেন তিনি।
আশাশুনি উপজেলার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) টিম লিডার আব্দুল জলিল বলেন, যে পয়েন্টে বাঁধ ভেঙেছে, সেটাতে একটি পাইপলাইন ও গেট সিস্টেম ছিল। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ শুরু করলেও এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অনেক পরিবার উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম জানান, ঈদের কারণে দক্ষ শ্রমিক না পাওয়া যাওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আগামীকাল বুধবার (২ এপ্রিল) থেকে কাজ শুরু করা যাবে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ভাঙন কবলিত এলাকায় পৌঁছেছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমরা যদি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পারি, তাহলে পরবর্তী জোয়ারে আরো প্রায় আধা কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।’’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগকে একত্রে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ নদ উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা
সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭
রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু
হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।
সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।
মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।