অনেক নারী আছেন অতিথি আপ্যায়ন করতে খুব পছন্দ করেন। বাসায় মেহমান আসলে মেহমানের জন্য রান্না করতে তাদের ভালো লাগে। ঘরে ভালো কিছু রান্না হলে পাশের ঘরের প্রতিবেশীর সঙ্গে সেই খাবার ভাগাভাগি না করে খেতে পারেন না। সাহাবিদের মধ্যে তেমন একজন নারী ছিলেন উম্মু শুরাইক (রা.), যার বাড়িতে সব সময়ই মেহমান থাকত। তাঁর বাড়িটি ছিল অনেকটা ‘অতিথি হাউজ’ বা মেহমানখানার মতো।

উম্মু শুরাইক (রা.

) ইসলাম গ্রহণ করেন মক্কায়। প্রথমদিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ইসলাম গ্রহণের কারণে তাঁকে অত্যাচার করা হয়, রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, তাঁকে পানি খেতে দেওয়া হয়নি। তিন দিন তিন রাত অত্যাচারের পর তিনি অনেকটা জ্ঞানহীন হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর জীবন মরণের প্রশ্ন। সেই অবস্থায় মক্কার মুশরিকরা তাঁকে ইসলাম ত্যাগের আহ্বান জানালে তিনি তাদের কথা মেনে নেননি, ইসলামের ওপর অটল থাকেন।

আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫

তিনি মক্কার নারীদের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতেন, যারা ইসলাম গ্রহণ করত, তাদের বিভিন্ন বিষয় শেখাতেন। মক্কার লোকেরা দেখল উম্মু শুরাইক মক্কায় থাকলে নারীদের মুসলিম বানিয়ে ফেলবে। ফলে তারা তাঁকে মক্কা থেকে বের করে দেয়। (তালেবুল হাশেমী, মহিলা সাহাবি, পৃ ১৯৬)

পরবর্তী সময়ে তিনি মদিনায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং অনেক সম্পদশালী হন। অতিথিকে আপ্যায়ন করতে তিনি পছন্দ করতেন। যার ফলে তাঁর বাড়িতে অতিথিদের ভিড় লেগে থাকত। তখনকার সময়ে মদিনায় কোনো হোটেল ছিল না। বাইরে থেকে কোনো অতিথি মদিনায় আসলে রাত্রিযাপনের জন্য থাকার কোনো জায়গা ছিল না।। তাদের কারও না কারও বাড়িতে থাকতে হতো।

আরও পড়ুনআবু জাহেলের মা আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) সাহাবি ছিলেন ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাইরে থেকে মদিনায় যেসব অতিথি আসতেন, তাদের থাকার ব্যবস্থা করতেন উম্মু শুরাইক (রা.)। তাঁর বাড়ি ছিল আধুনিক যুগের রেস্ট হাউজ বা হোটেলের মতো। তবে, সেটা ছিল বিনা মূল্যে।

ফাতিমা বিনতে কায়স (রা.) নামের এক নারীকে তাঁর স্বামী তালাক দিলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন উন্মু শুরাইকের (রা.) বাড়িতে যেতে। তিনি তখন মন্তব্য করেন, ‘উম্মু শুরাইক সম্পদশালী আনসারি নারী, আল্লাহর রাস্তায় অধিক দানকারিণী। তাঁর নিকট অনেক অতিথি সমাগম হয়।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৩,২৩৭)

উম্মু শুরাইকের (রা.) সঙ্গে রাসুলের বেশ সুসম্পর্ক ছিল। তিনি রাসুলুল্লাহর (সা.) জন্য ঘি পাঠাতেন।

আরও পড়ুনসাহসী সাহাবি হজরত যুবাইর (রা.)১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম গ মদ ন য়

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও নাদেলের বাসায় হামলা, ভাঙচুর

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর পাঠানটুলা ও হাউজিংস্টেট এলাকায় তাদের বাসায় হামলা করা হয়। একই সময়ে আরেক ছাত্রলীগ নেতার বাসায় হামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার সকালে নগরীতে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিলের পর সন্ধ্যায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। মিছিলের ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। 

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেলে করে লোকজন এসে তাঁর বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালায় বলে আনোয়ারুজ্জামানের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। তাঁর পরিবারের কেউ বাসায় ছিলেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করতেন। আনোয়ারুজ্জামান লন্ডনে রয়েছেন। 

অন্যদিকে নগরীর হাউজিং স্টেটের শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের অ্যাপার্টমেন্ট ফ্ল্যাটে হামলা করা হয়েছে। ওই সময় ভাড়াটিয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাসার জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। 

এছাড়া একই সময়ে নগরীর মেজরটিলা এলাকায় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, হামলার বিষয়টি পুলিশ জেনেছে। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সকালে ছাত্রলীগের মিছিল বের করার ঘটনার পর চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ