এপ্রিলে তাপপ্রবাহ, নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস
Published: 1st, April 2025 GMT
দেশে মার্চ মাসে গরম শুরু হলেও গড় তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে এপ্রিলে। আজ মঙ্গলবার এপ্রিলের শুরুর দিন দেশের কয়েকটি এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। এই তাপপ্রবাহ আগামী তিন থেকে চার দিন থাকতে পারে। আর এ মাসে এক থেকে দুটি তাপপ্রবাহ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একটি নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসও আছে। এসব পূর্বাভাস উঠে এসেছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া চলতি এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে। প্রতি মাসেই এমন পূর্বাভাস দেয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এপ্রিল মাসের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপরই আছে মে মাস, গড় তাপমাত্রা থাকে ৩২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া এপ্রিল মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। দুই থেকে চারটি মৃদু থেকে মাঝারি এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ হতে পারে।
যদি কোনো এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তীব্র তাপপ্রবাহ তখন ধরা হয়, যখন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। তাপমাত্রা ৪২–এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।
ইতিমধ্যে দেশের কয়েকটি স্থানে কালবৈশাখী হয়েছে। এ মাসে পাঁচ থেকে সাত দিন বজ্র, শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের এবং এক থেকে তিন দিন তীব্র কালবৈশাখীর আশঙ্কা আছে।
এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটির পরিচালক ও চেয়ারম্যান মো.
এ মাসে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে স্বাভাবিক প্ৰবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে এই অঞ্চলের নদ-নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
কৃষি আবহাওয়ায় বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশের দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ৩ দশমিক ৫০ থেকে ৫ দশমিক ৫০ মিলিমিটার এবং গড় সূর্য কিরণকাল ৬ দশমিক ৫০ থেকে ৮ দশমিক ৫০ ঘণ্টা থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা সমকালকে বলেন, মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি নিম্নচাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা নিশ্চিত এখনো নয়।
যে তীব্র তাপপ্রবাহের কথা বলা হচ্ছে, তা এ মাসের শেষ দিকে হতে পারে বলেও জানান জেবুন্নেছা। তিনি বলেন, এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হতে পারে।
এ মাসে ঢাকায় ৮ দিন, ময়মনসিংহে ৮ দিন, চট্টগ্রামে ৭ দিন, সিলেটে ১৩ দিন, রাজশাহীতে ৬ দিন, রংপুরে ৬ দিন, খুলনায় ৫ দিন ও বরিশালে ৭ দিন বৃষ্টি হতে পারে।
গত বছর দেশে তাপমাত্রা যা ছিল, তা ৭৬ বছরের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ। এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত টানা ৩৫ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, গত বছর ইতিহাসের সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস যতটা উষ্ণ ছিল, তা–ও বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
গত বছর এপ্রিল ও মে মাসে এই অস্বাভাবিক ও টানা তাপপ্রবাহের কারণে কালবৈশাখীর সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। সাধারণত এপ্রিল মাসে ৯ দিন এবং মে মাসে ১৩ দিন কালবৈশাখী হয়। কিন্তু গত বছর এপ্রিল মাত্র দুই এবং মে মাসে চারটি কালবৈশাখী হয়েছিল বল জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা।
তিনি বলেন, এবার এপ্রিল ও মে মাসে মেঘ সৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা বেশি থাকতে পারে। কালবৈশাখীর সংখ্যাও বাড়তে পারে। আর তাতে গত বছর যেভাবে একটানা দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ চলেছে, তা না–ও থাকতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঘ র ণ ঝড় স লস য় স দশম ক ৯ গত বছর এক থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
বিরামপুরে শাশুড়ির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিলেন জামাতা
ছবি: সংগৃহীত