ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ভ্রমণপিপাসু মানুষজন ছুটছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, পছন্দের জায়গায়। বেশির ভাগ মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে কক্সবাজারে আসতে শুরু করেন হাজার হাজার পর্যটক। বাস-ট্রেন, এমনকি বিমানেও এসেছেন পর্যটকেরা। হোটেলকক্ষে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে মানুষজন নেমে পড়ছেন সমুদ্রসৈকতে। রমজান মাসজুড়ে সমুদ্রসৈকতে পর্যটকসংখ্যা কম থাকলও আজ সকাল থেকে পা ফেলার জায়গা নেই।
বেলা ১১টায় সৈকতের কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে দেখা গেছে মানুষের মেলা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় জড়ো হয়েছেন ৭০ থেকে ৮০ হাজার মানুষ। প্রচণ্ড গরমের এই দুপুরে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সমুদ্রে নেমে গোসলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি সেফ লাইফ গার্ডের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বেলা ১১টা থেকে সাগরে জোয়ার চলছে। জোয়ারের প্রভাবে ঢেউয়ের মাত্রা (উচ্চতা) কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও জীবনের ঝুঁকি নেই। তিনি বলেন, ৭০ থেকে ৮০ হাজার পর্যটকের ৮০ শতাংশ সমুদ্রে নেমে গোসল করছেন। তাঁদের সামাল দিতে ২৭ জন লাইফগার্ড কর্মীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ, হোটেলমালিক ও লাইফগার্ড কর্মীরা জানান, ঈদের প্রথম দিন গতকাল সোমবার সৈকতে নেমেছিলেন মাত্র তিন হাজার পর্যটক। ঈদের দ্বিতীয় দিন আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত অন্তত ৭০ হাজার পর্যটক সৈকতে নেমেছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশিষ্ট সময়ে আরও ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে। এর সঙ্গে কক্সবাজার জেলার অন্তত ৩০ হাজার মানুষও সৈকতে নেমেছেন। সব মিলিয়ে সৈকত মানুষে মানুষে গিজগিজ করছে।
হোটেলমালিকেরা জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিন আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ১ লাখ ১৭ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটবে। ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ দিনে ৭ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল রিসোর্ট, গেস্ট হাউসের ৯০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটক টানতে রোজার মাসে হোটেলকক্ষ ভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়ের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তা আজ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন শতভাগ কক্ষ ভাড়া দিয়ে হোটেলে থাকতে হচ্ছে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে সুগন্ধা পয়েন্টে পর্যটকদের ভিড়। আজ দুপুর ১২টায় তোলা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, ৬ বছরের শিশু গুলিবিদ্ধ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরে দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে আদিবা খাতুন (৭) নামে এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর সদর উপজেলার পূর্ব বশিকপুর এলাকার কাচারি বাড়ি এলাকায় স্থানীয় অহিদ উদ্দিন ও ছোট ইউসুফ গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই গোলাগুলি হয়।
গুলিবিদ্ধ আদিবা খাতুনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আদিবা খাতুন একই উপজেলার পূর্ব বশিকপুর এলাকার ইব্রাহিম খলিলের মেয়ে ও বশিকপুর নুরানী মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বশিকপুর দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। সন্ধ্যার পর এলাকা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। ফলে মানুষ আতঙ্কে সন্ধ্যার আগেই ঘরে ফেরে। কিছুদিন তাদের কার্যকলাপ বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি তারা আবারও সক্রিয় হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অহিদ উদ্দিন ও ছোট ইউসুফের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এসময় তাদের কারোর ছোড়া গুলিতে শিশু আদিবা আহত হয়।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতাল, পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক পীযুষ চন্দ্র দাস বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একটি শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার পেটে গুলি লেগেছে। গুলি পেট দিয়ে প্রবেশ এবং বের হয়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।