চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাটিং পজিশন নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে চলছে জোর আলোচনা। আগের ম্যাচে ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে রোববার সাত নম্বরে নেমেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।  

দলের প্রয়োজন ছিল ২৫ বলে ৫৪ রান। ধোনি ১১ বলে ১৬ রান (১ চার, ১ ছয়) করে যখন বিদায় নেন, তখন চেন্নাইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ বলে ১৯ রান। কিন্তু সেই লক্ষ্য ছুঁতে ব্যর্থ হয় চেন্নাই এবং ৬ রানে হার মানতে হয় তাদের।  

ধোনির ব্যাটিং পজিশন নিয়ে এমন ধোঁয়াশার ব্যাখ্যা দিলেন দলটির কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং। তিনি জানিয়েছেন, ধোনির ব্যাটিং পজিশন নির্ধারিত হয় তার শারীরিক অবস্থা ও ম্যাচের পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে।  

‘এটা সময়ের ব্যাপার। ধোনি নিজেই এটা বিচার করে। তার শরীর, হাঁটু আগের মতো নেই। তিনি স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করতে পারলেও একটানা ১০ ওভার ব্যাট করতে পারবেন না। তাই তিনি পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিংয়ে নামেন’, বলেন ফ্লেমিং।  

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যদি খেলার পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে ধোনি একটু আগে নামতে পারেন। তবে তিনি অন্য ব্যাটারদের ওপরও আস্থা রাখেন। উইকেটকিপিং ও নেতৃত্বের দিক থেকে তিনি আমাদের জন্য অনেক মূল্যবান। তাই তাকে প্রথম ৯-১০ ওভারের মধ্যে ব্যাট করতে পাঠানো হবে না। সাধারণত ১৩-১৪ ওভারের পর তিনি ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নেন।’  

চেন্নাই সিএসকে এবারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারালেও পরের দুটি ম্যাচেই হেরেছে। রাজস্থানের বিপক্ষে হার প্রসঙ্গে ফ্লেমিং বলেন, ‘আমরা পাওয়ারপ্লেতে ব্যাট ও বল হাতে পিছিয়ে পড়েছি। রাজস্থান প্রথম ৬ ওভারে প্রায় ৮০ রান করেছে, আর আমরা করতে পেরেছি মাত্র ৪০-৪৫ রান। এটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’  

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ফিল্ডিংয়েও কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি। রাজস্থান ফিল্ডিংয়ে ছিল দুর্দান্ত, যা আমাদের চেয়ে অনেক ভালো। বড় নিলামের পর নতুন তিন বছরের চক্রের শুরুটা সবসময় একটু কঠিন হয়, বিশেষ করে যখন দল কিছুটা ফর্মের ঘাটতিতে ভুগছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব য ট করত

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে নতুন কৌশলে এগোচ্ছে জামায়াত

সাধারণ মানুষের আরও কাছে যেতে নানা কৌশলে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। দল শক্তিশালী করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা। চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ কর্মশালা, রুকন সম্মেলন, সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি প্রায় প্রতিদিনই থাকছে কোনো না কোনো ইউনিটে। মাঠ পর্যায়ে বেশি বেশি যাচ্ছেন দলটির নেতারা।
গত ১১ এপ্রিল থেকে জামায়াতের ‘দাওয়াতি সপ্তাহ’ চলছে। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজারসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। কট্টর ধর্মীয় নীতির বদনাম ঘোচাতে কৌশলে পরিবর্তন আনছে দলটি। নেতাকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শেখানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, দলকে কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে– এসব বিষয়। মাঠে নামানো হয়েছে দলটির নারী শাখাকেও। এক সময় বোরকা, হিজাব ও হাত-পায়ে মোজা পরিহিত নারী কর্মীরা দলীয় কার্যক্রম চালালেও এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। অনেক স্থানে শালীন পোশাকে কেবল বোরকা পরে ঘরে ঘরে দলের দাওয়াত নিয়ে যাচ্ছেন তারা।

এদিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বেশ সক্রিয় জামায়াতে ইসলামী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে সংঘবদ্ধ ছিল দলটি। এখনও সেই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এক প্রকার বাধ্য হয়ে তৃণমূল পর্যায়ে নতুনরূপে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে জামায়াত। তারা সময়ের সুযোগ নিতে চাচ্ছে। তাদের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে না। অন্যদিকে জামায়াত নেতারা বলছেন, তারা বরাবরই উদার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। অনুকূল পরিবেশে তারা সেটারই বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে গণমানুষের আরও কাছাকাছি হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে কোটি টাকা খরচ করে বির্জা খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াত। নগরীর কাঁচা বাজারগুলোকে চীনের আদলে গড়ে তুলতে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে কয়েকটি বাজারের দায়িত্বভার চেয়েছে দলটি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে কয়েকটি স্কুলের দায়িত্বও নিতে চায় তারা। 

নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে জামায়াতে ইসলামী খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছি। বেশ সাড়া পাচ্ছি। 
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে নগর জামায়াতের একাধিক নেতা সমকালকে বলেন, নানামুখী তৎপরতা ও কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াত সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা পাল্টে দেওয়াই হচ্ছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জামায়াতের উদারতার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। 
জামায়াতের কার্যক্রম প্রসঙ্গে বাসদের চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ আল কাদেরী জয় সমকালকে বলেন, ‘উদারতা দেখানোর মধ্য দিয়ে জামায়াত ব্যবসায়ীদের কাছে পেতে চাইছে। সাম্প্রদায়িক চোহারা লুকিয়ে কাজ করছে তারা।’ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অশোক সাহা বলেন, ‘জামায়াত এখন সময়ের সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে। তবে তারা প্রকৃত উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য থেকে নড়বে বলে মনে হয় না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ