ঈদের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর ঢল
Published: 1st, April 2025 GMT
ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চিড়িয়াখানা অভিমুখে সড়কে ব্যাপক যানজট। দীর্ঘ সময় লোকজনকে যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই বাস থেকে নেমে হেঁটে চিড়িয়াখানায় যাচ্ছেন।
একদিকে চিড়িয়াখানার রাস্তায় যেমন ব্যাপক যানজট, অন্যদিকে এই সড়কের ফুটপাত প্রশস্ত হলেও অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান বসায় দর্শনার্থীদের হাঁটতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। প্রচুর মানুষ ফুটপাতে থাকায় স্বাভাবিকভাবে হাঁটাও যাচ্ছে না।
ফুটপাত দিয়ে ভাগিনার হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন মো.
মিরপুর-১ নম্বর এলাকার সনি সিনেমা হল এলাকা থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত আসতে অধিকাংশেরই এক ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।
রাজধানীর কামারপাড়া এলাকা থেকে মো. জুয়েল রানারা তিন ভাই তাঁদের পাঁচ সন্তান নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছেন। তাঁরা সনি সিনেমা হল এলাকা থেকে বাসে ওঠেন। যানজটের কারণে একপর্যায়ে বাস থেকে নেমে যান। জুয়েল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাস থেকে নেমে এক কিলোমিটারের মতো এলাকা হেঁটে এসেছি। বাচ্চাদের নিয়ে হাঁটা যায় না। এটুকু রাস্তা আসতে এক ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।’
জাতীয় চিড়িয়াখানা দেখতে দিনাজপুর থেকে ১১ জন এসেছেন। তাঁদের একজন আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের সঙ্গে শিশুও আছে, নারীও আছেন। বাসে, হেঁটে এসেছেন। তাঁদের এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে নতুন কৌশলে এগোচ্ছে জামায়াত
সাধারণ মানুষের আরও কাছে যেতে নানা কৌশলে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। দল শক্তিশালী করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা। চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ কর্মশালা, রুকন সম্মেলন, সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি প্রায় প্রতিদিনই থাকছে কোনো না কোনো ইউনিটে। মাঠ পর্যায়ে বেশি বেশি যাচ্ছেন দলটির নেতারা।
গত ১১ এপ্রিল থেকে জামায়াতের ‘দাওয়াতি সপ্তাহ’ চলছে। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজারসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। কট্টর ধর্মীয় নীতির বদনাম ঘোচাতে কৌশলে পরিবর্তন আনছে দলটি। নেতাকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শেখানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, দলকে কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে– এসব বিষয়। মাঠে নামানো হয়েছে দলটির নারী শাখাকেও। এক সময় বোরকা, হিজাব ও হাত-পায়ে মোজা পরিহিত নারী কর্মীরা দলীয় কার্যক্রম চালালেও এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। অনেক স্থানে শালীন পোশাকে কেবল বোরকা পরে ঘরে ঘরে দলের দাওয়াত নিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এদিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বেশ সক্রিয় জামায়াতে ইসলামী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে সংঘবদ্ধ ছিল দলটি। এখনও সেই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এক প্রকার বাধ্য হয়ে তৃণমূল পর্যায়ে নতুনরূপে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে জামায়াত। তারা সময়ের সুযোগ নিতে চাচ্ছে। তাদের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাবে না। অন্যদিকে জামায়াত নেতারা বলছেন, তারা বরাবরই উদার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। অনুকূল পরিবেশে তারা সেটারই বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে গণমানুষের আরও কাছাকাছি হওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে কোটি টাকা খরচ করে বির্জা খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াত। নগরীর কাঁচা বাজারগুলোকে চীনের আদলে গড়ে তুলতে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে কয়েকটি বাজারের দায়িত্বভার চেয়েছে দলটি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে কয়েকটি স্কুলের দায়িত্বও নিতে চায় তারা।
নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে জামায়াতে ইসলামী খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছি। বেশ সাড়া পাচ্ছি।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে নগর জামায়াতের একাধিক নেতা সমকালকে বলেন, নানামুখী তৎপরতা ও কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াত সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা পাল্টে দেওয়াই হচ্ছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জামায়াতের উদারতার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জামায়াতের কার্যক্রম প্রসঙ্গে বাসদের চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ আল কাদেরী জয় সমকালকে বলেন, ‘উদারতা দেখানোর মধ্য দিয়ে জামায়াত ব্যবসায়ীদের কাছে পেতে চাইছে। সাম্প্রদায়িক চোহারা লুকিয়ে কাজ করছে তারা।’ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অশোক সাহা বলেন, ‘জামায়াত এখন সময়ের সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে। তবে তারা প্রকৃত উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য থেকে নড়বে বলে মনে হয় না।’