মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা
Published: 1st, April 2025 GMT
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তথ্যমতে, শুক্রবারের ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগই মারা গেছেন দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে। ওই শহরে বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ চলছে।
৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারের সাগাইং ও মান্দালয় শহরে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু জান্তাশাসিত মিয়ানমারে হালনাগাদ তথ্য পাওয়ার গতি খুবই ধীর।
মিয়ানমার–থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষ বলছেন, বাড়িঘরে ফিরতে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। কারণ, সেখানে বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। শৌচকাজ সারানোর মতো কোনো অবস্থা নেই।
বিবিসির সংবাদদাতা বলেন, তিনি মান্দালয়ে রয়েছেন। তাঁদের একটি দল গত রাতে এখানে এসেছেন। বিবিসির দলটি যেদিন মান্দালয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল, তার পুরো এক দিন পর তাঁরা সেখানে পৌঁছাতে পেরেছেন।
বিবিসির ওই সংবাদদাতা আরও বলেন, ‘যখন আমরা শহরের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন পুরো শহর অন্ধকারে ঢাকা পড়েছিল। এখানে বিদ্যুৎ নেই, খাওয়ার পানি নেই এবং আমরা এমনকি কোনো শৌচাগার খুঁজে পাইনি।
মান্দালয় যাওয়ার আগে তাঁরা কোনো হোটল কক্ষ ‘বুক’ করতে পারেননি। তাই তাঁরা গাড়িতেই ঘুমানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। যদিও সেখানে গিয়ে একটু খোঁজাখুঁজির পর তাঁরা একটি হোটেল পেয়ে যান। কিন্তু সেখানে কোনো খাবার ছিল না, তাই তাঁরা অন্য কোথাও চেষ্টা করেন। অল্প কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও সেগুলোর সমানে মানুষের লম্বা লাইন ছিল এবং প্রচুর হাউকাউ হচ্ছিল। সেখানে কোনো ইন্টারনেটও ছিল না।
শেষ রাতের দিকে বড় ধরনের পরাঘাতে মান্দালয় আবার কেঁপে ওঠে। বিবিসির দলটি হোটেলে অবস্থান করা নিরাপদ মনে করেনি। তাই তাঁরা কাছের একটি উপাসনালয়ে আশ্রয় নেন। সকালের আলোয় তাঁরা দেখতে পান পুরো মান্দালয় ধ্বংসের নগরী হয়ে আছে।
আরও পড়ুনমিয়ানমারে নিহত বেড়ে ২০৫৬, এক সপ্তাহের শোক ঘোষণা ১৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘পর্যাপ্ত’ সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ‘পর্যাপ্ত’ সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এ মামলায় যেকোনো সময় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আজ বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ তাঁর (শেখ হাসিনার) বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে। এটা আদালতে আমরা প্রমাণ করব ইনশা আল্লাহ। সেটার ওপর বাকি তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা অকাট্যভাবে প্রমাণ করব তাঁর অপরাধ।’
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে ব্যাপক কাজ করেছে বলেও জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে আসে নাই। চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।’
ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, কোনো মামলায় তদন্ত শেষে প্রথমে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। এরপর পর্যালোচনা ও যাচাই শেষে সেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর তা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর বা তাঁর কার্যালয়।
কবে নাগাদ শেখ হাসিনার মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হবে, তা জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফরমাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) দাখিলের প্রক্রিয়া চলছে এখন। …যেকোনো সময় দাখিল হয়ে যাবে।’
গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলা (বিবিধ মামলা বা মিস কেস) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় আগামী ২০ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে, অন্যটিতে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।