প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার পর বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা
Published: 1st, April 2025 GMT
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের হাউলি জয়পুর গ্রামে সালমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সকালে তার নিজ ঘর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশ।
নিহত সালমা একই গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. আজাদের স্ত্রী। তার সাত বছর বয়সী একটি ছেলে ও তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।
নিহতের চাচাতো ভাই রাকিব জানান, সকালে চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে ঘরের ভেতরে সালমার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে কে বা কারা সালমাকে মেরে রেখে গেছে। তার কোনো শত্রু ছিল না। সে সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলত। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পর থেকে সালমার মোবাইল ফোন ও ঘরে রাখা প্রায় এক লাখ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
বরাট ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলাপ আলী সরদার জানান, সালমা তার দুই সন্তানকে নিয়ে এক ঘরে থাকতেন। সালমার শিশু সন্তান তাদের জানিয়েছে, রাতের কোনো এক সময় তাকে (শিশুটিকে) বাইরে থাকা শৌচাগারে নিয়ে যান। ওই সুযোগে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢোকে। পরে সালমা ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঢুকে দুর্বৃত্তদের দেখে চিৎকার দিতে যায়। ওই সময় দুর্বৃত্তরা সালমা ও তার ছেলের মুখ ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলে। তারপর কী ঘটেছে তা শিশুটি বলতে পারেনি। যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে চলে যায়।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থার সালমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে।