নরসিংদীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
Published: 1st, April 2025 GMT
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাতে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার কুড়াইতলীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই ভাই হলেন রাকিব (২৫) ও সাকিব (২০)। তাঁরা পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার করতেতৈল এলাকার আশ্রাফ উদ্দিন ও রাবেয়া খাতুন দম্পতির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার ভোরে কুড়াইতলী এলাকায় দুই যুবক অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করার সময় স্থানীয়রা টের পান। ওই সময় তাদের হাতে হিমেল নামের এক যুবক ধরা পড়লেও আরেক যুবক পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন হিমেলকে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে পলাশ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এদিকে চোর সন্দেহে ওই যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার বিষয়ে জানতে বিকেলে কুড়াইতলী এলাকায় যান রাকিব-সাকিবসহ কয়েকজন। এ সময় তারা এক অটোরিকশাচালককে মারধর করে ফিরে আসেন। সন্ধ্যার দিকে পুনরায় ৩০ থেকে ৩৫ জন যুবকসহ রাকিব-সাকিব ওই এলাকায় গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। একপর্যায়ে তাঁদের আটক করে পিটুনি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রাকিব ও সাকিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সহযোগিতায় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাকিবের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পরই জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁরও মৃত্যু হয়। পরে তাঁর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কতর্ব্যরত চিকিৎসক সুদীপ কুমার সাহা বলেন, মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্নসহ দুই ভাইকে গতকাল রাতে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে সাকিবকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া রাকিবের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁরও মৃত্যু হয়।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, চোর সন্দেহে একজন যুবককে পিটুনি দেওয়ার প্রতিবাদ করতে গেলে পুনরায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর দুই ভাইয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদের টাকা উঠানো নিয়ে দু’পক্ষে সংর্ঘষ, আহত ১২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মসজিদে রমজানের মাসের হাদিয়া উঠানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। আহতরা হলেন- কবির, শরীফ, রবিউল্লাহ, রাজু সজিব, জীবন, জয়নাল ও ফোরকান।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইটনা গ্রামের শাহী মসজিদের রমজানের মাসের তারাবিহ নামাজের হাদিয়ার টাকার হিসাব নিয়ে ওই গ্রামের জীবন মিয়া ও শরীফ মিয়ার মধ্যে মঙ্গলবার রাতে বাগবিতন্ডা হয়। আজ বুধবার সকালে শরীফ মিয়াকে দোকানের সামনে পেয়ে জীবন মিয়া আবারও তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের লোকজনসহ এলাকার অন্তত ১২ জন আহত হন।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফুর রহমান বলেন, সকাল ১০টার দিকে ১২ জন রোগীকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। বেশির ভাগ মাথায় আঘাত পেয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।
জানতে চাইলে শাহী মসজিদ কমিটির সদস্য আ. গফুর বলেন, জীবন মিয়া মুসল্লিদের কাছ থেকে রমজানের হাদিয়া উঠান। শরীফসহ আরও কয়েকজন যুবক মসজিদ কমিটির সেক্রেটারির কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। এ ঘটনা থেকেই মারামারি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, মসজিদের টাকার তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে মারামারি হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।