মদিনায় হিজরতের পূর্বে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) হজের সময় বিভিন্ন গোত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইসলাম প্রচার করছিলেন। তিনি তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেন, তাদের বলেছিলেন, ‘আমাকে বিশ্বাস করো, আমাকে আশ্রয় দাও এবং আমাকে এবং আমার বার্তা সমর্থন করো।’
মহানবী (সা.) একে একে গোত্র গুলির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের ইসলামের বার্তা দেন। একবার বনি শায়বান গোত্রের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শেষে তিনি ছয়জন লোকের সাক্ষাৎ পান। তারা ছিল মদিনার খাযরাজ গোত্রের, যা মক্কা থেকে উত্তরে, তখনকার ইয়াসরিব শহরের বাসিন্দা ছিল।
ইসলামের গ্রহণ ও দায়িত্ব
মহানবী (সা.
ইয়াসরিব এক নতুন সুযোগ
মহানবী (সা.) তখন ইসলামের বাণী মদিনায় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একজনকে দূত করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ছিল দাওয়াতের সফলতার জন্য একটি মূল মুহূর্ত। মহানবী (সা.) প্রিয় সাহাবি মুসআব ইবনে উমাইর (রা.)-কে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণের জন্য নির্বাচন করেন। মুসআবকে কেন তিনি নির্বাচন করেন, তার কয়েকটি কারণ আছে:
১. মুসআব (রা.) এতটা বয়স্ক ছিলেন না যে, মদিনার বিশাল দায়িত্ব নিতে তাঁর জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। আবার এতটা যুবকও ছিলেন না যে অতি তাড়াহুড়া বা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবেন। তার বয়স ত্রিশের মাঝামাঝি ছিলেন।
২. তিনি পূর্বে আবিসিনিয়ায় দুইটি হিজরতের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন, সুতরাং তিনি মক্কা ছেড়ে অনেক সময় দূরে থাকতে অভ্যস্ত।
৩. মুসআব (রা.) আলাদা সংস্কৃতি ও ভাষার মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করার অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছিলেন।
৪. তিনি এক অত্যন্ত সম্মানিত পরিবার, বানী আবদ আদ-দার পরিবারের সদস্য ছিলেন, যারা কাবার চাবির রক্ষক হিসেবে পরিচিত। মদিনার মানুষ তার সঙ্গে সহজে কথা বলবে এবং তাকে শ্রদ্ধা করবে।
৫. তিনি ছিলেন প্রথম দিকের মুসলিম, মহানবীর (সা.) সঙ্গী এবং ইসলাম ও কোরআন তাঁর কাছ থেকে শিখেছিলেন।
আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫৬. তিনি ছিলেন দয়ালু, প্রজ্ঞাবান, মিষ্টভাষী ও রসবোধ সম্পন্ন, যা ইসলাম প্রচারের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গুণ। এসব গুণ ব্যবহার করে তাদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন।
৭. তিনি ছিলেন এমন বিশ্বাসী, যিনি তার বার্তা ত্যাগ করবেন না এবং মদিনায় যে পার্থিব প্রলোভন আসবে, তাতে ভেঙে পড়বেন না। তিনি এই পরীক্ষা ইতিমধ্যে পেরিয়েছেন। কেননা, তার মা তাকে ইসলাম থেকে ফেরাতে কঠিন শর্তের মুখে ফেলেছিলেন তাকে, তবু তিনি টলেন নি।
মদিনায় ইসলাম
মুসআব (রা.) প্রচেষ্টার কারণে ইসলাম মদিনার প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করেছিল। মানুষ একে একে এবং দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করে। তিনি মদিনাকে মহানবীর (সা.) আগমন এবং সমগ্র মানবতার জন্য দিশারি হওয়ার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রস্তুত করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে এক বছরের মধ্যে ৭৫ জন মদিনাবাসী মক্কায় ফিরে গিয়ে নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে মদিনায় আসার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসেন।
সূত্র: অ্যাবাউট ইসলাম ডট কম
আরও পড়ুননামাজের ভেতরে দরুদ পড়ার নিয়ম০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম র র জন য কর ছ ল মদ ন র মদ ন য় গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদের টাকা উঠানো নিয়ে দু’পক্ষে সংর্ঘষ, আহত ১২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মসজিদে রমজানের মাসের হাদিয়া উঠানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। আহতরা হলেন- কবির, শরীফ, রবিউল্লাহ, রাজু সজিব, জীবন, জয়নাল ও ফোরকান।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইটনা গ্রামের শাহী মসজিদের রমজানের মাসের তারাবিহ নামাজের হাদিয়ার টাকার হিসাব নিয়ে ওই গ্রামের জীবন মিয়া ও শরীফ মিয়ার মধ্যে মঙ্গলবার রাতে বাগবিতন্ডা হয়। আজ বুধবার সকালে শরীফ মিয়াকে দোকানের সামনে পেয়ে জীবন মিয়া আবারও তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের লোকজনসহ এলাকার অন্তত ১২ জন আহত হন।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফুর রহমান বলেন, সকাল ১০টার দিকে ১২ জন রোগীকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। বেশির ভাগ মাথায় আঘাত পেয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।
জানতে চাইলে শাহী মসজিদ কমিটির সদস্য আ. গফুর বলেন, জীবন মিয়া মুসল্লিদের কাছ থেকে রমজানের হাদিয়া উঠান। শরীফসহ আরও কয়েকজন যুবক মসজিদ কমিটির সেক্রেটারির কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। এ ঘটনা থেকেই মারামারি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, মসজিদের টাকার তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে মারামারি হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।