ভারতের ঝাড়খণ্ডে দুটি পণ্যবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।  

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফারাক্কা থেকে লালমাটিয়াগামী একটি পণ্যবাহী ট্রেন ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি পণ্যবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রেন দুটির ইঞ্জিন ভেঙে টুকরো টুকরো হবার পর আগুন লেগে যায়। 

খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় দুই ট্রেনের চালকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত চার রেলকর্মীকে চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। 

জানা যায়, দুর্ঘটনার পর ওই রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে এবং লাইনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটি ঠিক করতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগতে পারে। রেল বিভাগ দুর্ঘটনার তদন্ত করছে। দুটি ট্রেন একই লাইনে কীভাবে এলো তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে? 

তবে দেশটির রেলের কর্মকর্তারা জানান, এ দুর্ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় রেলের কোনো সম্পর্ক নেই। ঝাড়খণ্ডের কাহালগাঁও এবং ফারাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে সংযোগকারী ওই ট্র্যাক এনটিপিসি-র মালিকানাধীন এবং পরিচালিত। ট্র্যাকটি এনটিপিসি লালমাটিয়া এমজিআর নামে পরিচিত। এটি পরিচালনায় ভারতীয় রেলওয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। 

তবে এ দুর্ঘটনার উদ্ধার কাজে এনটিপিসি মালদা বিভাগের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পূর্ব রেলওয়ের মালদা বিভাগ থেকে ১৪০ টন ক্রেন চেয়েছে এবং সাহেবগঞ্জ থেকে এটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারতীয় রেলওয়ে এনটিপিসি কর্তৃপক্ষকে পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদান করছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ন হত দ র ঘটন র এনট প স

এছাড়াও পড়ুন:

কীর্তনখোলার তীর থেকে উদ্ধার সেই শিশু ফিরল মায়ের কোলে

বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠে কীর্তনখোলার তীর থেকে উদ্ধার পরিচয়হীন সেই নবজাতক ফিরেছে আপন ঠিকানায়। বাবার কোলে চড়ে গত রোববার রাতে ঢাকা থেকে বাগেরহাটে মায়ের কোলে পৌঁছে। তবে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় শিশুটিকে বাড়ি ফিরতে হয়।

শিশুটির বাবা বাগেরহাট শহরে ফুটপাথের চা দোকানি গণেশ শ্যাম আজ বুধবার বিকেলে সমকালকে বলেন, গত রোববার দুপুরে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। রাতে তিনি ও তার শাশুড়ি সুমি দাস বাসে শিশুটিকে নিয়ে বাগেরহাটের ফেরেন। 

রিলিজ দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গণেশ জানান, শিশুটির পিঠের টিউমার নিরসনে অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু, একমাস বয়স হওয়ার আগে অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। যেহেতু শিশুটির বয়স এক সপ্তাহ, তাই আরও তিন সপ্তাহ পর ঢামেকে ভর্তির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

শিশুটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বাবা গণেশ বলেন, পিঠের টিউমার থেকে পানি বের হচ্ছে। বাগেরহাটের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কিন্তু, ঈদের ছুটি হওয়ায় চিকিৎসক পাচ্ছি না।

গত ২২ মার্চ রাত ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর কীর্তণখোলার তীরে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত বাথরুমে অজ্ঞাত হিসেবে শিশুটি উদ্ধার হয়। স্থানীয় ফুচকা বিক্রেতা পারভীন বেগম শিশুটি উদ্ধার করে বরিশাল শের-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান। গত ২৮ মার্চ শিশুটির অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া যায়। তার আগের দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর ও শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

বাবা গণেশ দত্ত জানান, বরিশাল নগরীর সদর রোড মোখলেসুর রহমান ক্লিনিকে ২১ মার্চ তার স্ত্রী অন্তরা দাস শিশুটির জন্ম দেন। এটি তাদের প্রথম সন্তান। জন্মের পর শিশুটির পিঠে টিউমার ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিনই নবজাতককে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলো। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আশঙ্কায় ২২ মার্চ দুপুরে ওয়ার্ডে বসেই শিশুটিকে এক রিক্সাচালকের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর আর কিছু তাদের জানা নেই।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউর মুনীর জানান, শিশুটির পিঠে মেরদণ্ডের টিসু থেকে টিউমারের উৎপত্তি হয়েছে। এটি পুরোপুরি ভাল হওয়ার সম্ভাবনা কম। চিকিৎসাও অনেক ব্যয়বহুল। তিনি জানান, শিশুটি দত্তক নিতে অনেকে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তবে শারীরিক অবস্থা দেখে ফিরে যান। বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজও জানান, শিশুটির চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ