আইপিএলে বাউন্ডারি বড় করার পরামর্শ গাভাস্কারের
Published: 1st, April 2025 GMT
আইপিএল মানেই রানের বন্যা। ফ্ল্যাট পিচ, ছোট বাউন্ডারি আর ব্যাটসম্যানদের অনুকূল কন্ডিশন যেন বোলারদের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। ধারাবাহিকভাবে উচ্চ স্কোরিং ম্যাচ দেখে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা এখন ভারসাম্য আনার পরামর্শ দিচ্ছেন। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক সুনীল গাভাস্কার সেই তালিকায় যোগ দিয়ে মাঠের আকার বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
গাভাস্কার মনে করেন, আইপিএলে বোলারদের জন্য কিছুটা সুবিধা আনতে হলে বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য বাড়ানো প্রয়োজন। তার মতে, এলইডি বিজ্ঞাপন বোর্ডের পেছনে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে, যা পেছনে সরিয়ে বাউন্ডারির লাইন কয়েক মিটার বাড়ানো যেতে পারে।
মিড ডে-তে লেখা এক কলামে গাভাস্কার বলেন, ‘পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটসম্যানদের খেলার ধরনে পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু বাউন্ডারির আকার সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। অনেক ছক্কা মাত্র কয়েক ইঞ্চির জন্য বাউন্ডারি পার হয়। যদি বাউন্ডারি কয়েক মিটার পেছনে থাকত, তাহলে হয়তো অনেক শট ক্যাচে পরিণত হতো এবং বোলাররা উইকেট পেতেন।’
চলতি আইপিএলে প্রথম ১১ ম্যাচের মধ্যে ৬টিতে দলীয় স্কোর ২০০ ছাড়িয়েছে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাদের প্রথম ম্যাচেই ২৮৬ রান করেছিল, যা ব্যাটিং-বান্ধব কন্ডিশনের প্রমাণ।
এছাড়া, আইপিএলের অর্থনৈতিক দিক নিয়েও কথা বলেছেন গাভাস্কার। তিনি মনে করেন, ম্যাচ-পরবর্তী খেলোয়াড়দের পুরস্কারের অর্থও সময়ের সঙ্গে বাড়ানো উচিত। তিনি লেখেন, ‘২০০৮ সালের প্রথম আসর থেকে আইপিএলের রাজস্ব অনেক বেড়েছে, কিন্তু প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারের অর্থ এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘যখন সন্তান স্কুল থেকে কলেজে ওঠে, তখন বাবা-মা তার পকেট খরচ বাড়িয়ে দেন। আইপিএলও এখন পরিণত হয়েছে, তাহলে পুরস্কারের পরিমাণও কি বাড়ানো উচিত নয়?’
গাভাস্কারের মতে, আইপিএলকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় করতে হলে বোলারদের জন্য কিছু সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। বাউন্ডারির আকার বাড়ানোর পাশাপাশি ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কারের বিষয়েও নজর দেওয়া উচিত আয়োজকদের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রস ক র র
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্রোপচার সম্পন্ন না করেই রোগীর পেট সেলাইয়ের অভিযোগ
পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যান শিল্পী বেগম। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন রোগী। পরে তাঁর পেট কেটে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন না করে সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে ভৈরবের মেডিল্যাব জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক সেন্টারে।
ভুক্তভোগী নারী নরসিংদীর পটিয়া গ্রামের দারোগা বাড়ির প্রবাসী মাসুম মিয়ার স্ত্রী। প্রচণ্ড পেটে ব্যথা নিয়ে গত বুধবার সকালে ভর্তি হন ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন মোড় এলাকার মেডিল্যাব জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক সেন্টারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ক্লিনিক থেকে জানানো হয় তাঁর পেটে টিউমার রয়েছে। এটি বেশি জটিল হয়ে গেছে দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরে বৃহস্পতিবার রাতে শিল্পী বেগমের পেটে অস্ত্রোপচার শুরু হয়, কিন্তু শেষ না করেই চিকিৎসক তাঁর পেট সেলাই করে বেডে স্থানান্তর করেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে এখন ব্যথায় কাতরাচ্ছেন শিল্পী বেগম।
শিল্পী বেগম জানান, তাঁর পেটে ব্যথা অনুভব হলে নরসিংদীর একটি হাসপাতাল থেকে ইনজেকশন নিয়ে ব্যথা কমিয়ে মেডিল্যাব জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক সেন্টারে যান। চিকিৎসক আলট্রাসনোগ্রাম করে জানান রোগ বেশি জটিল, তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচার করতে হবে। অস্ত্রোপচার শুরু করে বুঝতে পারেন তারা পারবেন না। পরে পেট সেলাই করে বলে দেন দুই-এক মাস বাসায় থেকে একটু সুস্থ হয়ে ঢাকায় গিয়ে অপারেশন করাতে। পরে তাঁর স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপ দিলে চিকিৎসাটা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তারা। এর আগে ভুল স্বীকার করতে চাননি।
রোগীর মেয়ে তানজিনা বলেন, ‘অপারেশন করে রোগী যদি ভালো নাই করা যাবে তাহলে তা করা হলো কেন? অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করার পর আমাদের বলা হয় বাসায় নিয়ে যেতে এবং দুই-এক মাস বাসায় রেখে কিছুটা সুস্থ করে অন্য জায়গায় গিয়ে অপারেশন করাতে। পরে আমাদের চাপে এই হাসপাতালে আরও কয়েকদিন চিকিৎসা দিয়ে কিছুটা সুস্থ করে কয়েক মাস পর অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে সহযোগিতা করবেন বলে একটি লিখিত দিয়েছেন হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ।’ তাঁর প্রশ্ন, এ হাসপাতালের চিকিৎসক যদি অস্ত্রোপচার নাই করতে পারবেন তাহলে কেন রোগীকে ধরল? তারা যা করেছেন তা সম্পূর্ণ অন্যায়। এর কারণে যদি পরবর্তী সময়ে তাঁর মায়ের কোনো ক্ষতি হয় তাহলে তার দায়-দায়িত্ব এই হাসপাতালকেই নিতে হবে।
হাসপাতালটির মালিক ডা. একেএম জাহাঙ্গীর আলম। শিল্পী বেগমের অস্ত্রোপচারও শুরু করেন তিনি।
অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর ভাষ্য, পেট কাটার পর দেখা যায় টিউমারের সঙ্গে পেটের ভেতরের অন্যান্য অঙ্গ পেঁচিয়ে রয়েছে, যার কারণে অস্ত্রোপচার করেননি তারা। যদি তারা অস্ত্রোপচার করতেন তাহলে রোগী মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকত। তাই ঝুঁকি নেননি তারা। পরবর্তী সময়ে প্রস্তুতি নিয়ে যেকোনো হাসপাতালে এই রোগীর অস্ত্রোপচার করা হলে তাদের হাসপাতাল থেকে রোগীকে সহযোগিতা করা হবে।
চিকিৎসকরা রোগীর অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে যদি বড় ধরনের সমস্যা পান তবে অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখতে পারেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর। তিনি বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছেন। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে অপারেশন করতে গিয়ে কোনো গাফিলতি আছে কিনা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে কোনো অবহেলা ছিল কিনা। বিশেষ করে রোগী ও তাঁর স্বজনরা যদি তাঁর কাছে অথবা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অভিযোগ করেন তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতালটির বৈধতার বিষয়ে জানতে চাইলে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, তাঁর জানা মতে মেডিল্যাব জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক সেন্টারের লাইসেন্স আছে। তারপরও রোববার (আজ) খোঁজ নিয়ে দেখবেন তিনি।