যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি সই নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।

ইরানকে হুমকি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান পরমাণু চুক্তি না করলে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র বোমাবর্ষণ করবে। এমনকি এই আক্রমণের তীব্রতা হবে অভূতপূর্ব।

ট্রাম্পের এমন হুমকির পর পাল্টা হুমকি দিয়ে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। যেকোনো বহিরাগত আগ্রাসনের কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানে হামলার হুমকির প্রেক্ষিতে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যেকোনও বহিরাগত আগ্রাসনের কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

সোমবার তেহরানে ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় একটি জামাতে ভাষণকালে খামেনি বলেন, বহিরাগত আগ্রাসন অসম্ভব, তবে দেশ যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি না যে কোনো বহিরাগত আগ্রাসনের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে যদি কোনও আগ্রাসন ঘটে, তবে তারা নিঃসন্দেহে একটি কঠোর প্রতিশোধমূলক আঘাত পাবে এবং যদি তারা আমাদের দেশের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রদ্রোহ উস্কে দেওয়ার কথা ভাবে। যেমন তারা বিগত বছরগুলোতেও করেছে, তাহলে ইরানের জনগণ নিজেই তাদের জবাব দেবে।

ট্রাম্প ইরানকে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আমেরিকার সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে বোমা হামলা এবং সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার একদিন পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পক্ষ থেকে এই মন্তব্য করা হলো।

ইরান মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে বিতর্কিত পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের জন্য কূটনৈতিক পথ খোলা রেখেছে তেহরান।

ইরান সরকার গত সপ্তাহে ওমানের মাধ্যমে ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে। ওই চিঠিতে সামরিক হুমকির মুখে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে ইরান অনিচ্ছুক বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন।

এছাড়া গত রোববার ইরানের এক টিভি চ্যানেলে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে এই চুক্তি নিয়ে সরাসরি কথা বলবে না তেহরান। তবে পরোক্ষ আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা আলোচনায় বসতে সবসময়ই প্রস্তুত। কিন্তু আগের বিশ্বাসভঙ্গের কারণে আমরা সন্দিহান। এছাড়া ইরানের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিও পরোক্ষ আলোচনার পক্ষে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে সোমবার খামেনি আরও বলেন, গাজা ও লেবাননের ঘটনাবলীর কারণে এই বছরের পবিত্র রমজান মাস বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য ছিল “তিক্ত”। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি নৃশংসতায় আমেরিকা জড়িত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরম ণ বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের মস্তিষ্কে ব্লাইন্ডসাইট যন্ত্র বসাবে ইলন মাস্কের নিউরালিংক

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে মানুষের মস্তিষ্কে বসানোর উপযোগী যন্ত্র তৈরি করেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন নিউরালিংক। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের মস্তিষ্কে ‘ব্লাইন্ডসাইট’ নামের ক্ষুদ্রাকৃতি যন্ত্রটি বসানোর অনুমতিও পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের মধ্যেই মানুষের মস্তিষ্কে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্রটি স্থাপন করা হবে।  

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রথমবারের মতো নতুন এই প্রযুক্তি মানুষের মস্তিষ্কে স্থাপন করা হবে, যা অন্ধ ব্যক্তিদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনবে। শুরুর দিকে যন্ত্রটির মাধ্যমে কম রেজ্যুলেশনের দৃশ্য দেখা যাবে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিটি আরও উন্নত হবে। একসময় এটি মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির চেয়েও উন্নত হয়ে উঠতে পারে। গত কয়েক বছর ধরে বানরের ওপর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুনআরও একজনের মস্তিষ্কে তারহীন চিপ বসাল ইলন মাস্কের নিউরালিংক০৮ আগস্ট ২০২৪

নিউরালিংকের তথ্য মতে, ব্লাইন্ডসাইট মূলত মাইক্রোইলেকট্রোড দিয়ে তৈরি কৃত্রিম যন্ত্র, যা মস্তিষ্কের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে স্থাপন করা হবে। এটি ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করা ছবি মস্তিষ্কের নিউরনের মাধ্যমে অন্ধ ব্যক্তিদের দেখতে সহায়তা করবে।

নিউরালিংক জানিয়েছে, ব্লাইন্ডসাইট ব্যবহারের মাধ্যমে যাঁদের দুটি চোখ ও অপটিক নার্ভ সম্পূর্ণ অকেজো তাঁরাও দেখতে পারবেন। এ বিষয়ে খুদে ব্লগ সাইট এক্সে (টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক জানিয়েছেন, জন্মান্ধ ব্যক্তিরাও এই প্রযুক্তির সাহায্যে প্রথমবারের মতো দেখতে পারবেন।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ