তখন অনেক ছোট ছিলাম। আব্বা ঈদের দিনে আমাদের নিয়ে মসজিদে যেতেন। আব্বার আঙুল ধরে হাঁটতাম। মসজিদের কাছাকাছি যখন যেতাম, তখন দেখতাম সেখানে লেখা থাকত—‘সামনে মসজিদ, আস্তে চলুন’।

ছোটবেলার এই লেখাগুলো মনে যে দারুণ আলোড়ন তুলত, প্রাপ্তবয়সে সে আবেদন অনেকখানি গেল কমে। কিন্তু গেঁথে আছে যাপিত জীবনে একটা সুখের নদী হয়ে। একা হলে এই নদীগুলোতে ঝাঁপ দিই, শিহরিত হই। কম্পন জাগে, চোখটা কেমন ঝাপসা হয়ে আসে। আমি ফেলে এসেছি আমার সেই সব দিনরাত্রি। আমার ঈদ উৎসবে আজ একা হয়ে যাই। অথচ ছোটবেলায় দল বেঁধে বেড়ানোর যে উৎসব ছিল, তা আর নেই। কী কঠিন বড় হওয়াটা!

ছোটবেলায় ঈদে নতুন কাপড় আনলে লুকিয়ে রাখতাম কাঠের দেরাজ, নয়তো স্টিলের আলমারিতে। নতুন কাপড় দেখার জন্য চাচাতো বোনদের সে কী উঁকিঝুঁকি! কিন্তু কিছুতেই কাপড় দেখাতাম না, যদি ঈদ চলে যায়! যদি কাপড়টা পুরোনো হয়ে যায়! আহ, নতুন কাপড়ের ঘ্রাণ! সময়ের স্রোতে সেই ঘ্রাণটা যেন এখন বদলে গেছে।

আমাদের আব্বা-চাচা মিলে যৌথ পরিবার ছিল। নামাজ শেষ করে সব চাচাতো-মামাতো ভাই আসতেন আব্বা-আম্মাকে সালাম করার জন্য। সালাম শেষে যা পিঠা বানানো হতো, তাই পরিবেশন করা হতো। তার মধ্যে বকফুল মানে সিলেটি ভাষায় ‘নাইকোল পিঠা’ বলা হতো, তারপর লুচি, হান্দেশ, গ্লাসকাটা (কেউ বলেন নুনগড়া), সেমাই, হালুয়া ইত্যাদি নানা জাতের খাবার থাকত।

দুপুরে বড় ডেকচিতে রান্না হতো কোর্মা, পোলাও, মাংস ভুনা। রুটি দিয়ে আমরা মাংস খেতাম। চালের রুটি। এখন বড়বেলায় পিঠা তেমন একটা করি না। আমার ছোট সংসারে পিঠার বালাই নেই। রান্নাও ছোট সস প্যানে, ফ্রাই প্যানে। সেমাই এখন আর খেতে পারি না, তাই বানাইও না। আগে মা-চাচি-বোনেরা মিলে বাড়িতে একসঙ্গে পিঠা বানাতেন। বানানো পিঠাগুলো রাখতেন রসুইঘরের শিকেতে ঝুলিয়ে, যাতে বিড়াল আর আমাদের মতো কিছু দস্যির হাত থেকে রক্ষা পায়।

মাসুদা সিদ্দিকা রুহী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্য আবুধাবী শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী উৎসব ও বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে জাঁকজমকভাবে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও বৈশাখী উৎসব ১৪৩২ উদযাপন করা হয়।

১৯ এপ্রিল (শনিবার) দিনব্যাপী আয়োজনে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রবাসীরা উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। স্কুলের অডিটোরিয়াম ছাড়াও পুরো মাঠ জুড়ে প্রবাসীদের আনন্দ উল্লাস ছিল দেখার মতো।

স্টলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘দূতাবাস কর্নার’, বাংলাদেশ সমিতি আবুধাবি, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান আবুধাবি, ইনডেক্স মানি এক্সচেঞ্জ, আহলিয়া এক্সচেঞ্জ সহ নানান সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলো ছিল বেশ আকর্ষণীয়। প্রতিটি স্টল সাজানো হয় দেশীয় সাজে। উৎসব ঘিরে নানান ধরনের পিঠাপুলি, দেশীয় আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো ছিল দেশীয় স্টলগুলো। দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন নাচ ও গান। সকাল ১০টা হতেই মেলায় জমে মানুষের ভিড়। ফিতা কেটে এই মেলার শুভ উদ্বোধন করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদের সভাপতিত্বে ও মিশন উপ প্রধান শাহানাজ আক্তার রানুর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত বৈশাখী উৎসবে দূতাবাস ও কনস্যুলেট কর্মকর্তা, নিউজিল্যান্ড, মালেশিয়া, আর্মেনিয়া, গাম্বিয়া, বসনিয়াসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূত পত্নী উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়াও স্কুল শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, সাধারণ প্রবাসীরা উপস্থিত হন অনুষ্ঠানে, মেলা দেখতে অনেকে আসেন প্রবাসে থাকা পরিবারের নিয়েও।

আয়োজন শেষে পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন। রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদ বর্ষবরণের আয়োজনকে সকলের সহযোগিতায় সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শাহ জাহান/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভেড়াডহর গ্রামে উরিগানের আসরে
  • এমপিওভুক্ত পৌনে ৫ লাখ শিক্ষকের বোনাস বাড়ছে
  • প্রথম আলোর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব আগামী ১৫ ও ১৬ মে
  • পয়লা বৈশাখের পর বৈশাখী ভাতা পেলেন মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা
  • কানাডার টরেন্টোতে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব
  • আরাকান আর্মির বাংলাদেশের আকাশীমা লংঘ‌নের প্রতিবাদ
  • অনুপ্রবেশ করে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে: জামায়াত
  • মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি মেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব
  • আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন
  • ‘বিপ্লবীরা মরে না তারা মৃত্যুঞ্জয়ী’