কয়েক মাস আগে হয়ে যাওয়া বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় চমক ছিলেন তিনি। সিরিজের মাঝপথে কঠিন পরিস্থিতিতে নেমে যশপ্রীত বুমরার মতো বোলারকে খেলেছেন দারুণ সাহসের সঙ্গে।

শুধু ব্যাট হাতেই নয়, শরীরী ভাষায় বুমরাকে চমকে দিয়েছিলেন তরুণ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার স্যাম কনস্টাস। বলা যায়, অভিষেকে তাঁর ৬০ রানের সাহসী ইনিংস ম্যাচের গতিপথই পাল্টে দিয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত ওই সিরিজ জিতে ৩-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই সাহসের পুরস্কার পেতে দেরি হলো না কনস্টাসের। জায়গা পেলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) কেন্দ্রীয় চুক্তিতে।

২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তিতে যে ২৩ জনকে রেখেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, সেখানে কনস্টাস ছাড়াও জায়গা করে নিয়েছেন আরও দুই নতুন মুখ—বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু কুনেমান ও অলরাউন্ডার বো ওয়েবস্টার।

জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে মাত্র দুই টেস্টেই ১৬ উইকেট নেন কুনেমান, হন সিরিজসেরাও। মাত্র ৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে তাঁর উইকেট ৩৫টি। অস্ট্রেলিয়ার তাঁকে নিয়ে অনেক আশা।

কনস্টাসের মতোই বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে অভিষেক অলরাউন্ডার বো ওয়েবস্টারের। প্রথম ম্যাচেই ফিফটি করার পাশাপাশি বল হাতে ছিলেন বেশ কার্যকর। তাঁকে নিয়েও যে অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘমেয়াদে ভাবছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে এরই মধ্যে ওয়েবস্টারকে চুক্তিতে নিয়ে আসা দেখেই।    

এ ছাড়া চোট কাটিয়ে ফেরা মিচেল মার্শ ও ক্যামেরন গ্রিন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছেন, তিন সংস্করণের সবকটিতে না খেললেও যথারীতি আছেন অভিজ্ঞ স্টিভেন স্মিথ, উসমান খাজা ও নাথান লায়ন।

অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি কেন্দ্রীয় চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত নতুন তিন ক্রিকেটারের প্রশংসা করেছেন, ‘ম্যাথু (কুনেমান) শ্রীলঙ্কায় অসাধারণ খেলেছে এবং আগামী ১৮ মাসে সে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। বো (ওয়েবস্টার) ব্যাট ও বল দুই দিকেই কার্যকর, যা দলের ভারসাম্য বাড়াবে। আর স্যাম (কনস্টাস) একজন সম্ভাবনাময় তারকা, আশা করছি সে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরও বিকশিত হবে।’

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে যে ২৩ জন

প্যাট কামিন্স, স্টিভেন স্মিথ, নাথান লায়ন, অ্যালেক্স ক্যারি,  স্যাম কনস্টাস, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, নাথান এলিস, জাই রিচার্ডসন, স্কট বোল্যান্ড, ল্যান্স মরিস, ম্যাথু কুনেমান, অ্যাডাম জাম্পা, ট্রাভিস হেড, ম্যাট শর্ট, জশ ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মারনাস লাবুশেন, উসমান খাজা, মিচেল মার্শ, বো ওয়েবস্টার, ক্যামেরন গ্রিন ও জাভিয়ের বার্টলেট।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কনস ট স

এছাড়াও পড়ুন:

রান্না-খাওয়া পর্ব ভিন্ন আঙ্গিকে চিন্তা করলে নারীরাও আনন্দ করতে পারবেন

ঈদ মানে উৎসব। উৎসব মানে আনন্দ। বয়স, অর্থনৈতিক সচ্ছলতার মানদণ্ডে আনন্দ উপভোগের মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এই ধরুন, মফস্‌সল শহর রংপুরে আমার বেড়ে ওঠা। আমি একসময় ঈদ উদ্‌যাপন করেছি বাঁধনহীনভাবে। ছিল নির্মল আনন্দ। এখন বয়সের কারণে সেভাবে আর হয়ে ওঠে না।

রংপুর শহর ছিল তখন ছিমছাম, গোছানো। এখনকার মতো বড় বড় বহুতল ভবন, ঝলমলে শপিং মল, এত গাড়ি, রিকশা, অটোরিকশা ছিল না। মা-বাবারাও সন্তানদের নিয়ে এত চিন্তা করতেন না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন পর্যন্ত মা–বাবার সঙ্গে নতুন কাপড় পরে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি। তাঁদের ছাড়া একা বেড়ানোর সাহস হয়নি। আমরা ঠিকাদারপাড়া কলেজ রোডে থাকতাম। মাধ্যমিকে এসে পাড়ার সমবয়সীদের নিয়ে দল বেঁধে এ বাড়ি–ও বাড়ি যেতাম। কলেজে এসে বেড়ানোর সীমানা বেড়ে গেল। রংপুরের বিভিন্ন পাড়ায় বান্ধবীদের বাসায় গিয়ে আড্ডা দিতাম। আর ঈদে কার পোশাক কত সুন্দর, সেটা দেখা হতো!

আমার মা বা অন্য মায়েদের যেমন দেখেছি, ঈদ এলে হাসিমুখে রাজ্যের দায়িত্ব তাঁরা পালন করেন। ঈদ উৎসব সার্থক করতে আম্মাকে দেখতাম, বাড়িঘর পরিপাটি থেকে সাজগোজ, ধোয়ামোছা, কেনাকাটা, জাকাত দেওয়া, রান্নাবান্না নিয়ে ব্যস্ততার কমতি নেই। ঈদের দিনে আমাদের সাজগোজ, পোশাক ঠিক আছে কি না, সেটি যেমন দেখতেন, তেমনি রান্নাবান্না, অতিথি আপ্যায়ন নিয়ে আম্মা ব্যস্ত থাকতেন।

আরও পড়ুনঈদের দিনটা কেটে যায় কাজে, নিজের জন্য আর কিছুই থাকে না৩১ মার্চ ২০২৫

নামাজ শেষে আব্বা সঙ্গে করে পাড়ার মামা, চাচাদের নিয়ে আসতেন। নিজেদের আত্মীয়স্বজন আসত। আম্মা হরেক রকম সেমাই, পুডিং, মাংস, পোলাও দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। ঈদের পরেও কয়েক দিন ব্যস্ততায় কাটত। আম্মার কাজের সহকারী হানুফার কথা মনে পড়ে। তার কোনো ঈদ–আনন্দ ছিল কি না, কখনো জানা হয়নি। কারণ, তার তো বসে থাকারই ফুরসত ছিল না।

নাসিমা আকতারের (ডান দিক থেকে প্রথম) বড়বেলার ঈদ কাটে নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে

সম্পর্কিত নিবন্ধ