ঈদে যেসব বিষয়ে সচেতন থাকলে আনন্দ মাটি হবে না
Published: 31st, March 2025 GMT
খাবারদাবার নিয়ে সতর্কতা: এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিন সবার বাড়িতেই উপাদেয় রান্নাবান্না হয়। ঈদে থাকে প্রচুর মিষ্টি বা ডেজার্ট-জাতীয় খাবার; সাথে পোলাও বা বিরিয়ানি, মাংস, কাবাব ইত্যাদি। রোজার শেষে প্রথম দিনে অনেক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেউ কেউ। তাই এ ক্ষেত্রে সংযম দেখাতে হবে। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা ডেজার্ট আইটেম এড়িয়ে নোনতা বা ঝাল খাবার বেছে নিন। চাইলে পরিবারের ডায়াবেটিক রোগীর জন্য বিশেষ ডেজার্ট তৈরি করে রাখতে পারেন। দুপুরে ভারী খাবার খেলে রাতে একেবারে হালকা রুটি-সবজি বা স্যুপ-জাতীয় খাবার রাখুন। সব মাংসের আইটেম না খেয়ে কিছুটা সবজি সালাদ খান, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়। বাড়ি বাড়ি বেড়াতে গিয়ে একসঙ্গে অনেক না খেয়ে অল্প খান। বদহজম বা ডায়রিয়া হলে ভারী খাবারদাবার একেবারেই বাদ দিন।
পানিশূন্যতা যেন না হয়: এবার ঈদুল ফিতর পড়েছে চৈত্র মাসে। এ সময় ঝা ঝা রোদ্দুর। বাইরে বেড়াতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এই গরমে প্রচুর পানি খান, যেন পানিশূন্যতা না হয়। মনে রাখবেন, কোমল পানীয় বা কেনা জুস নয়, বরং পানিই সবচেয়ে সেরা পানীয়। তরমুজ, আনারস, বাঙ্গি ইত্যাদি ফলে প্রচুর জলীয় উপাদান থাকে। এসব রাখতে পারেন ঈদের টেবিলে। শশা, টমেটো, ক্যাপসিকামেও পানি আছে। এসব দিয়ে সালাদ বা রায়তা তৈরি করে নিতে পারেন। টক দই গরমে প্রশান্তি আনবে। খেতে পারেন লাচ্ছি বা ঘোল।
আরও পড়ুনঈদ উৎসবেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে১৭ জুন ২০২৪শিশুদের দিকে নজর রাখুন: যাঁরা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেছেন, তাঁরা শিশুদের কখোনোই একা ছাড়বেন না। পুকুর বা জলাধারের কাছে যেতে দেবেন না। যাঁরা ঈদে সমুদ্র বা পাহাড়ে বেড়াতে যাচ্ছেন, তাঁরাও বিশেষ করে নজর রাখুন যেন শিশু কোন দুর্ঘটনায় না পড়ে। শিশুদের সহজপাচ্য খাবার খেতে দিন, খাবার নিয়ে জোরাজুরি করবেন না। যথেষ্ট পানি খাচ্ছে কি না আর যথেষ্ট প্রস্রাব হচ্ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বয়স্কদের খেয়াল করুন: পরিবারে বয়স্করা সবচে নাজুক পরিস্থিতিতে থাকুন। বয়স্কদের অনেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা কিডনি রোগে ভুগছেন। তাই তাঁদের উপযোগী কিছু খাবার আলাদা করে প্রস্তুত করা উচিত। উৎসব উপলক্ষে একদিন নিয়মের বাইরে খেলে কিছু হবে না ভেবে যদি খেতেও চান, তবে পরিমিত দিন। হুল্লোড়-ব্যস্ততায় ওষুধপত্র ঠিকমতো খাচ্ছেন কি না, খেয়াল রাখুন। যথেষ্ট ওষুধ আগেই কিনে রাখুন।
আরও পড়ুনকখনো হিমশীতল পাহাড়ে, কখনো সাইকেলে কেটেছে ঈদ৩০ মার্চ ২০২৫কাজ ভাগাভাগি: উৎসব-পরবে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন পরিবারের নারী সদস্যরা। রান্নাবান্না, পরিবেশন, ধোওয়া-পাকলা, অতিথি আপ্যায়ন করতে গিয়ে প্রায়ই অসুস্থ বা দুর্বল হয়ে পড়েন তাঁরা। অনেক সময় গৃহ সহকারী ছুটিতে গেলে অবস্থা আরও শোচনীয় হয়। পরিবারের সবার উচিত এ সময় তাঁকে কাজে সাহায্য করা। অতিথি আপ্যায়নে বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বাড়ির ছোটবড় সবার অংশগ্রহণ থাকা উচিত, যাতে মা বা স্ত্রী একটু বিশ্রাম পান।
অসুস্থতায় অবহেলা নয়: ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন, জ্বর বা ব্যথা-বেদনায় প্যারাসিটামল সেবন করা যায়। বদহজম বা অ্যাসিডিটির জন্য অ্যান্টাসিড বা গ্যাসের ওষুধ। কিন্তু কিছু কিছু উপসর্গ অবহেলা করা যাবে না। যেমন হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যথা বা চাপ, রক্তচাপ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া, কোনো দিক অবশ হওয়া বা মুখ বেঁকে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি জরুরি অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে। ঈদের ছুটিতেও হাসপাতালের ইমার্জেন্সি খোলা থাকে।
আরও পড়ুনছোটবেলার ঈদ বড়বেলার ঈদ১০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্য আবুধাবী শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী উৎসব ও বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে জাঁকজমকভাবে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও বৈশাখী উৎসব ১৪৩২ উদযাপন করা হয়।
১৯ এপ্রিল (শনিবার) দিনব্যাপী আয়োজনে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রবাসীরা উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। স্কুলের অডিটোরিয়াম ছাড়াও পুরো মাঠ জুড়ে প্রবাসীদের আনন্দ উল্লাস ছিল দেখার মতো।
স্টলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘দূতাবাস কর্নার’, বাংলাদেশ সমিতি আবুধাবি, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান আবুধাবি, ইনডেক্স মানি এক্সচেঞ্জ, আহলিয়া এক্সচেঞ্জ সহ নানান সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলো ছিল বেশ আকর্ষণীয়। প্রতিটি স্টল সাজানো হয় দেশীয় সাজে। উৎসব ঘিরে নানান ধরনের পিঠাপুলি, দেশীয় আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো ছিল দেশীয় স্টলগুলো। দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন নাচ ও গান। সকাল ১০টা হতেই মেলায় জমে মানুষের ভিড়। ফিতা কেটে এই মেলার শুভ উদ্বোধন করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদের সভাপতিত্বে ও মিশন উপ প্রধান শাহানাজ আক্তার রানুর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত বৈশাখী উৎসবে দূতাবাস ও কনস্যুলেট কর্মকর্তা, নিউজিল্যান্ড, মালেশিয়া, আর্মেনিয়া, গাম্বিয়া, বসনিয়াসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূত পত্নী উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়াও স্কুল শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, সাধারণ প্রবাসীরা উপস্থিত হন অনুষ্ঠানে, মেলা দেখতে অনেকে আসেন প্রবাসে থাকা পরিবারের নিয়েও।
আয়োজন শেষে পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন। রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদ বর্ষবরণের আয়োজনকে সকলের সহযোগিতায় সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শাহ জাহান/হাসান/ফিরোজ