ব্যক্তির সাইকো প্রোফাইলিং মনস্তাত্ত্বিকের কাজ আর কোনো বিশেষ জাতির সাইকো প্রোফাইলিং সমাজতাত্ত্বিক ও রাষ্ট্রতাত্ত্বিকের কাজ। জাতীয় জীবনে ন্যূনতম অবদান রাখতে সক্ষম নয় এমন নাগরিক যেমন আছে, তেমন পরিবর্তনকামী সংগ্রামী নাগরিক আছে; যুদ্ধ এড়ানো নাগরিক যেমন আছে, প্রাণ তুচ্ছজ্ঞান করা যোদ্ধাকে গড় (সাইকো অ্যানালিসি) করে পাওয়া যেতে পারে জাতির সাইকো প্রোফাইল।

বাংলাদেশের নাগরিকদের পলিটিক্যাল সাইকো প্রোফাইল করতে গেলে মোটাদাগে বড় দুই দল বিএনপি, আওয়ামী লীগ আর অন্যান্য মিলে একটি তৃতীয় ধারা দেখা যেতে পারে। কিন্তু বড় দুটি দলের কাছে অন্য ধারা খুব পার্থক্য সৃষ্টিকারী শক্তি কখনোই মনে হয়নি। তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা সব সময় শূন্য ছিল। কিন্তু ত্যক্ত নাগরিক সমাজ এই শতকের শুরুতে যেমন বিকল্প একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের আশা করত, গত এক দশকে তা–ও করা বন্ধ করে দিয়েছিল। অরাজনৈতিক সিভিল সোসাইটির দাবি ছিল বিকল্প একটি পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্মে, কিন্তু গত দুই দশকে অধিকাংশ সিভিল সোসাইটির মাথাই আওয়ামীকরণের শিকার।

অবশেষে আপাত অসংগঠিত এক ছাত্র শক্তি প্রায় অটল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুতির স্বাদ দিয়েছে। আর এরাই এখন সংগঠিত হয়ে দুই বড় দলের বিপরীতে নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রকাশমান। গত প্রায় চুয়ান্ন বছরে প্রধান রাজনৈতিক দলের বাইরে জোটভিত্তিক কিছু রাজনৈতিক ঐক্য দেখা দিলেও প্রকৃত পরিবর্তন নিশ্চিত করার যথেষ্ট সামর্থ্য দেখাতে পারেনি। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় জুলাই অভ্যুত্থান সফলকারী ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি কি নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভাব নিশ্চিত করতে পারে? এই স্পর্ধিত তারুণ্য কি চেনা রাজনীতির বিপরীতে নতুন কোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতির সূচনা করতে পারবে?

গণতন্ত্র এটি একটি ধারণা। দুনিয়ার অনেক দেশের শাসনপদ্ধতি। গণতন্ত্র নামক ধারণার দুটি মাত্রা থাকে, একটি ‘বর্ণনামূলক’ (ডিসকার্সিভ) মাত্রা; অন্যটি ‘রূপগত’ (ফিগারেটিভ) মাত্রা। বর্ণনামূলক মাত্রা ক্ষেত্রবিশেষে এর প্রয়োগে রূপগত মাত্রাটি বদলে যায়। যেমন এর প্রায়োগিক উদাহরণ হিসেবে ইতিহাসবিদ দীপেশ চক্রবর্তী ‘ভোট’ নামের নৈর্বাচনিক উপাচারকে সামনে এনেছেন। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ভোটিং সেলিব্রেশনকে তুলনা করেছেন। ভারতে যা উৎসব অস্ট্রেলিয়ায় তা নিতান্তই এক মামুলি নাগরিক দায়িত্ব। আসলে গণতন্ত্রের কোনো বিশেষ রূপগত মাত্রাকেই চূড়ান্ত বলে ধরে নিলে অনিশ্চয়তা কমে। কিন্তু আমরা তো মোহর মেরে দিয়েছি যে গণতন্ত্র বহুমাত্রিক সম্ভাবনাময় ধারণা। সমূহ অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও সম্ভাবনার সোনালি আভার আশাতেই নতুন রাজনৈতিক দলকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি ইতিহাসের নানা কালপর্বে। এখন অনেকে বাজি ধরেছে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল নিয়ে।

বাংলাদেশের অধিকাংশ বড় রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও তৎপরতা ক্ষমতাকেন্দ্রিক, আরও সুস্পষ্টভাবে বললে সরকার পরিচালনাকেন্দ্রিক। আর এটি নিশ্চিত করতে আদর্শ ভুলে জোট করে নির্বাচনের আগে। জোটভিত্তিক নির্বাচনী রাজনীতির কারণে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির সম্ভাবনা রহিত হচ্ছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড.

রওনক জাহান। তিনি বলেন, জোটভিত্তিক নির্বাচনী রাজনীতির ফলেই জামায়াতসহ ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর পুনর্বাসন ঘটেছে। আর জোটভিত্তিক রাজনীতির উত্থান ঘটেছে ফাস্ট পাস্ট দ্য পোস্ট (এফপিটিপি, এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নির্বাচনী আসনে একাধিক প্রার্থী অংশগ্রহণ করলেও যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনি নির্বাচিত হন) পদ্ধতির নির্বাচনব্যবস্থার কারণে। এ পরিস্থিতির খুব বেশি পরিবর্তন হবে কি ভবিষ্যতে?

লাতিন আমেরিকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা দেখিয়েছেন যে একক বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণে দেশের হাল চরম খারাপ হয়। দেখা দেয় রাজনৈতিক সংকট। ক্যারিয়ন জুলিও এই অবস্থাকে সিচুয়েশন অব এক্সট্রিম ক্রাইসিস বলে উল্লেখ করেছেন। ওয়েল্যান্ড এই চরম সংকটাপন্ন অবস্থার কথা বলতে গিয়ে বলেন, এই সংকট মানুষকে ডোমেইন অব লসেস–এ নিপতিত করে। আর এর থেকে মুক্তি পেতে অত্যাচারিত মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ ও অপরীক্ষিত বিকল্পের শরণাপন্ন হতেও দ্বিধা করে না। এভাবেই পুরোনো প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নতুন রাজনৈতিক দলের আগমন নিশ্চিত করতে তৎপরতা চালায়। লাতিন আমেরিকার এই পরিস্থিতি দুনিয়ার নানা প্রান্তেই দেখা গেছে। আমরা এখন এমনই এক পরিস্থিতি পার করছি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান জন্ম দিয়েছে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ঘটনা। পুরোনো ব্যবস্থার ঘুণে খাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনীতির আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটিয়েছে। অভ্যুত্থান পর্ব শেষে এখন নতুন রাজনীতি শুরুর দ্বারপ্রান্তে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বেশ বড় সমাবেশ করে ছাত্ররা যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করেছে, প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উপস্থিতিতে তাদের ঘোষণাপত্রে দল গঠনের উদ্দেশ্য ও আদর্শের বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে। নতুন দলের ঘোষণার সূচনায় বলা হয়েছে, ‘আমরা হাজার বছরের ঐতিহাসিক পরিক্রমায় বঙ্গীয় বদ্বীপের জনগোষ্ঠী হিসেবে এক সমৃদ্ধ ও স্বকীয় সংস্কৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।’

আরও উল্লেখ করেছে, ব্রিটিশ উপনিবেশবিরোধী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নতুন সংগ্রাম ও একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিলেও গণতন্ত্রের জন্য যে জনগণের লড়াই থামেনি। অর্থাৎ নতুন লড়াইয়ে অবতীর্ণ এই অভ্যুত্থান সফলকারী ছাত্রসমাজ।

প্রথম আলোর উপসম্পাদক এ কে এম জাকারিয়া যথার্থই এক উপসম্পাদকীয়তে লিখেছেন, এনসিপি এখন জনগণসহ সব মহলের আতশি কাচের নিচে থাকবে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী এলোমেলো পরিস্থিতিতে নানা ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে দলটির অবস্থান কী, তার ওপর ভিত্তি করেই মানুষ নতুন দলকে বিচার করবে। মনে রাখতে হবে, হাসিনার দীর্ঘ ও প্রতিষ্ঠিত শাসনকে ধ্বংস করে যাদের উত্থান, দেশের প্রচলিত রাজনীতি ও ব্যবস্থা সেই শক্তিকে স্বাগত জানাতে খুব আগ্রহী হবে না। নতুন দলটিকে নির্ভর করতে হবে জনগণ ও তাদের সমর্থনের ওপর। নিজেদের স্বচ্ছ ও স্পষ্ট অবস্থানের মধ্য দিয়েই তারা তা পেতে পারে।

নতুন রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য, আদর্শ ও উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের বেশ আগ্রহ রয়েছে। এটি কি পুরাতন ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির ধারাবাহিকতা রক্ষাকারী কোনো নতুন দল হবে, নাকি কল্যাণরাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে ইগালিটেরিয়ান বা সমতা নিশ্চিতকারী কোনো নতুন ধারার জন্ম দেবে।

গত কয়েক মাসের নতুন দলের প্রতিনিধিত্বশীল ছাত্রদের রাজনৈতিক তৎপরতায় এটা পরিষ্কার, তারা বিপ্লবী ঘরানার সরকার গঠন করতেই চেয়েছিল। তবে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষিত হোক, তা–ই চেয়েছে। এ কারণে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে। আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও বিপ্লবী কিংবা বর্জনের রাজনীতির বিপক্ষে।

গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের এই ঘটনার জন্য বাংলাদেশকে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট ২০২৪-এর বর্ষসেরা দেশ ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার শাসন সম্পর্কে বলা হয়, শুরুতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নায়ক হিসেবে পরিচিতি পেলেও ক্রমে একতরফা নির্বাচন, বিরোধী মত দমন, ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ, সর্বশেষ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশের সমালোচনা রয়েছে প্রতিবেদনে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যখন বলেন ‘ইনক্লুসিভ পলিটিকস’-এর পক্ষে, তখন নতুন গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি আর প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি একই প্রতিক্রিয়া দেখায় না। অধ্যাপক ইউনূস আপাদমস্তক একজন শাস্ত্রীয় মানস নিয়ে গড়ে ওঠা ব্যক্তিত্ব, ব্যক্তিগতভাবে বিপ্লবী নন মোটেই। তিনি সবাইকে একত্র রাখতে চান। অনিচ্ছা ও চাপ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে রেখেছেন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার প্রতীক হিসেবে। তিনি গণতান্ত্রিক পথটা অনুসরণ করতে চান।

রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ থাকছে, প্রথম বোঝা যায় গত ২০ নভেম্বর। সেদিন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে কোনো দল বা সংগঠনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী এবং বিচার করা যাবে না, যদিও যে আইন উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হয়েছিল, তাতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে বিচারের বিধান রাখা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূস এরপর ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের নেই। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় বিরোধিতাকারী শক্তি জাতীয় নাগরিক পার্টি। তারা তাদের রাজনৈতিক পুঁজি ভাবছে শুধু আওয়ামী বিরোধিতাই নয়, সমূলে আওয়ামী বিনাশেও। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফাহাম আবদুস সালামের পর্যবেক্ষণ এখানে প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, ‘না’ বাদী রাজনীতি দিয়ে কিছু অর্জন করা যায় না।

নতুন ‘রাজনৈতিক অভিযাত্রা’—এমন শব্দবন্ধ ব্যবহারে খুব জোর পাওয়া যায় না। কারণ, বেশ কিছু সময় বিরতিতে এমন সুযোগ আমরা পেয়েছি কয়েকবার, নব্বইয়ের এরশাদের পতন একটা বড় সুযোগ ছিল। এরপর ২০০৭ সালে আরেকবার নতুন শুরুর সুযোগ হারাই আমরা। আর এখন যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কাজে না লাগালে এ হবে এক ক্ষমাহীন অপরাধ। প্রথাগত রাজনৈতিক দলের নেতাদের মতো কোটারি স্বার্থের প্রতি অনুগত থাকলে তার চেয়ে খারাপ কী হতে পারে।

জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দলই হাসিনার পতন চেয়েছিল সত্য; কিন্তু এরপর গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কোনো সাধারণ রাজনৈতিক ঐকমত্য ছিল না। কিন্তু উল্লেখ করতেই হবে রাজনৈতিক দলের বাইরে বরং পেশাজীবীদের প্ল্যাটফর্ম থেকে অভ্যুত্থান–পরবর্তী রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের রূপরেখা তুলে ধরা হয় এবং তা ৫ আগস্টের আগেই ৩ আগস্ট। অভ্যুত্থানে মোড় ঘোরানো ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ ৩ তারিখ তাঁদের রূপরেখায় তুলে ধরেন, অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে এবং শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করে এই সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।

শিক্ষকদের সংগঠন একটি ছায়া সরকারের ধারণা দেওয়া হয়, যাঁদের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার জবাবদিহি করবে। এবং এই সরকার ছয় মাসের মধ্যে সংবিধান সভা গঠন করে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রস্তাব করবে, যার ভিত্তিতে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ছাত্রদের নতুন দলও প্রায় একই রকম দাবি নিয়ে তৎপর রাজনীতিতে। তারা সেকেন্ড রিপাবলিকের মতো নতুন একটি ধারণাও প্রস্তাব করেছে। বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের নানামুখী দাবি নিয়ে এত বেশি আলোচনা যে জাতীয় নাগরিক পার্টির দলীয় নীতি–আদর্শের আলাপ চাপা পড়ে আছে। কিন্তু টেকসই রাজনৈতিক দলের জন্য নীতি ও আদর্শিক কাঠামো প্রস্তুত ও সেই অনুযায়ী অনুশীলন অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ, যা একটি শ্রেয়তর রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিশ্চিত করতে পারে।

গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের এই ঘটনার জন্য বাংলাদেশকে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট ২০২৪-এর বর্ষসেরা দেশ ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার শাসন সম্পর্কে বলা হয়, শুরুতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নায়ক হিসেবে পরিচিতি পেলেও ক্রমে একতরফা নির্বাচন, বিরোধী মত দমন, ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ, সর্বশেষ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশের সমালোচনা রয়েছে প্রতিবেদনে।

দ্য ইকোনমিস্ট থেকে বর্ষসেরার স্বীকৃতি ছাত্র-জনতারই প্রাপ্য। গণপ্রতিরোধে দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরাচারী রেজিমের পতন ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের দিকে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ, প্রতিবেদনে বলা হয়। রাজনীতির অভিজ্ঞতাহীন ছাত্রসমাজ অভূতপূর্ব প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ক্লিন স্লেট (নতুন স্লেট) হওয়ায় আপামর জনগোষ্ঠী এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে, যা মিশেল ফুকোর ভাষায়, ‘জনতার পলিটিক্যাল স্পিরিচুয়ালিটি’। এই পলিটিক্যাল স্পিরিচুয়ালিটি কোনো ধর্মীয় মতাদর্শ কিংবা বামপন্থী আদর্শের জন্য নয়, বরং ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য। তবে মনে রাখা জরুরি, অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিণামদর্শী উৎসাহের বশে বস্তুত যা করতে সমর্থ হয়, তা তাদের লক্ষ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতও হতে পারে, যা আগেও হয়েছে। রাজনীতির প্রাণক্ষয়ী পিচ্ছিল পথে টিকে থাকার সংগ্রাম ছাত্রদের সামনে।

এম এম খালেকুজ্জামান আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। দ্য কনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ: সার্চ ফর আ জাস্ট সোসাইটি বইয়ের সহসম্পাদক

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত করত গণত ন ত র ক পল ট ক য ল র জন ত ক ব ন শ চ ত কর র র জন ত ক গণতন ত র পর স থ ত ত র জন ত র জন ত র সরক র র ব যবস থ র জন য র ওপর র পতন জনত র অপর ধ অবস থ গঠন র ক ষমত র গঠন আদর শ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৭

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন।

বুধবার (২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক নিহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা, নিহত ৩

বেপরোয়া গতির ৩ মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, ৪ যুবক নিহত

বিস্তারিত আসছে...

ঢাকা/রেজাউল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ