একই ঘরে দুই বিধবা নারী চা শ্রমিকের বসবাস। সখিনা (৫০) ও মেহেরজান (৫৫)। ৩০ বছর আগে তারা স্বামী হারিয়েছেন। মেয়েদের বিয়ে দিয়ে জীর্ণ কুটিরে বসবাস করছেন। ঈদের আনন্দ যে কী, তারা তা ভুলেই গেছেন।

তারা জানান, তারা ননদ ও ভাবী তিন দশক ধরে এভাবে জীবন কাটাচ্ছেন। এবার ঈদের আগে সপ্তাহিক মজুরী পাননি। এই যৎসামান্য আয় দিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।  

সখিনার অভিযোগ তিনি নিয়মিত শ্রমিক হয়েও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের বরাদ্দকৃত কোনো সাহায্য বার বার চেষ্টা করেও পাননি। এ নিয়ে কথা হলে বাগান কর্তৃপক্ষ জানান, কোনো মজুরী অপরিশোধিত নয়। ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে হয়ত পেতে দেরি হচ্ছে। জীবনমান উন্নয়নের বরাদ্দকৃত সহায়তা সমাজসেবা বিভাগ পরিচালনা করে থাকে।

চা শিল্পের সঙ্গে জড়িত জনগোষ্ঠীর জীবনে রয়েছে নানা বঞ্চনার গল্প। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ইটা চা বাগানে ঈদের আগের দিন এই দুই নারী শ্রমিকের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়। এতে জানা যায়, তারা দুইজন ননদ ও ভাবী। মেহেরজান এক সময় চা বাগানে কাজ করলেও এখন দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করেন। সখিনা (ভাবী) ওই বাগানের নিয়মিত শ্রমিক। 

এ সময় সখিনা বলেন, ‘‘আমার ঘরে ঈদের আনন্দ কেমনে আসবে? ৩০ বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছে। ছন্দহীন জীবনে মলিন মনে কি আর আনন্দ আসে?’’

ঈদে নতুন কাপড় কিনেছেন কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বাগানের সাহেবরা ঈদের আগের মজুরী দেয়নি। তাই নতুন কাপড় কিনতে পারেননি। তবে বাগানের এক হুজুর একখানা শাড়ি দিয়েছেন, তা দিয়েই চলবে। তিনি জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার কিছু দিন পর ননদ মেহেরজানেরও স্বামী মারা যান। এরপর থেকে দুইজন এক ঘরে বসবাস করছেন। তার চা শ্রমিকের মজুরীর আয় ও মেহেরজান ভিক্ষার টাকা দিয়ে কোনোমতে চলেন তারা। 

বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নাসিম আহমদ জানান, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের বরাদ্দকৃত টাকার বিষয়টি পরিচালনা করেন সমাজসেবা বিভাগ। এখানে তাদের হাত নেই। 

ইটা বাগানের ব্যবস্থাপক কে জি আজম জানান, ঈদের আগে তারা শ্রমিকদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছেন। ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে হয়ত পেতে দেরি হচ্ছে।

ঢাকা/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

স্ট্রোক করে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতাল যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল রোগীর

নাটোরের লালপুরে রোগী বহনকারী একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কের লালপুর ত্রিমোহনী চত্বরে এ দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগী শিমুল আলী (৫৫) নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ২ জন। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত শিমুল চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মৃত ফয়জুরের ছেলে। আহতরা হলেন- লালপুর উপজেলার নুরুল্লাপুর গ্রামের মুসার ছেলে ফজলু (৪৫), তার মেয়ে ফাতেমা (১৭) ও সাইফুল ইসলামের ছেলে শিপন (২৪)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী শিমুল আলীকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে অ্যাম্বুলেন্সেটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিল। পথে লালপুর ত্রিমোহনী চত্বরে এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই ভ্যানের যাত্রী ফজলু, তার মেয়ে ফাতেমা ও শিপন গুরুতর আহত হয়। এসময় অ্যাম্বুলেন্সের চালক অ্যাম্বুলেন্সসহ রোগীকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এসময় রোগী শিমুল আলী চরমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, যা তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটায়। পরে স্থানীয়রা রোগীসহ আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিমুল আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক আহত ফজলু ও ফাতেমার অবস্থাআশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং শিপনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

লালপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোমিনুজ্জামান জানান নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় সড়ক আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ