সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়া নদীর বে‌ড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লা‌বিত হ‌য়ে‌ছে। ভে‌সে গে‌ছে হাজার হাজার বিঘার মৎস‌্য ঘের। এতে গ্রামবাসীর ঈদ আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা সা‌ড়ে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, আজ সকালে আমরা ঈদের নামাজ আদায়ে ব্যস্ত ছিলাম। নামাজ শেষে জানতে পারলাম, আব্দুর রহিম সরদারের চিংড়ি ঘরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে ধ‌সে প‌ড়ে‌ছে। বিষয়টি গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার করে দ্রুত লোকজনকে ভাঙন পয়েন্টে যেতে বলা হয়। গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা ক‌রে।

দীর্ঘ সা‌ড়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা ক‌রেও শেষ রক্ষা হয়‌নি। সা‌ড়ে ১১টার দি‌কে প্রবল জোয়া‌রের তো‌ড়ে বাঁধের অব‌শিষ্টাংশ ভে‌ঙে গি‌য়ে লোকাল‌য়ে পা‌নি ঢুক‌তে শুরু ক‌রে।

স্থানীয়রা আরও জানান, ইতোম‌ধ্যে বিছট, বল্লবপুর, নয়াখালী, আনু‌লিয়াসহ আশপা‌শের আরও ৬টি গ্রা‌মে পা‌নি ঢু‌কে‌ছে। এসব গ্রা‌মের বা‌ড়ি ঘ‌রে পা‌নি ঢু‌কে‌ছে। মৎস‌্য খামার ভে‌সে গে‌ছে। দ্রুততম সম‌য়ে বাঁধ মেরামত না কর‌লে পার্শ্ববর্তী খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নও প্লা‌বিত হ‌তে পা‌রে।

স্থানীয় আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বেড়িবাঁধের প্রায় দেড়শ ফুট এলাকাজুড়ে সম্পূর্ণ খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হ‌য়ে‌ছে। পাউবোর লোকজন ছু‌টি‌তে। তারা ফেরার চেষ্টা কর‌ছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে আমার ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদ‌ক্ষেপ নেওয়া হ‌চ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে ফাইনালে রিয়াল

রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে স্প্যানিশ কোপা ডেল রের সেমিফাইনাল প্রথম লেগে ১-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ফুটবলপ্রেমীরা ধরেই নিয়েছিল মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে অনায়াস জয় পাবে লস ব্লাঙ্কোসরা। কিন্তু সবার ভাবনা আর কল্পনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ উপহার দিলো সোসিয়েদাদ। কয়েক দফা এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত তারা অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে ৪-৪ গোলে ড্র করে রিয়ালের সঙ্গে। প্রথম লেগে জয় পাওয়া রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানের জয়ে ফাইনালে নাম লেখায় ১২০ মিনিট শেষে।

এদিন ম্যাচের ১৬ মিনিটেই লিড নেয় সোসিয়েদাদ। এ সময় হেডে পাবলো মারিনের বাড়িয়ে দেওয়া বল পেয়ে ডান পায়ের শটে গোল করেন সোসিয়েদাদের আন্দের বার্নেছেয়া। ৩০ মিনিটের মাথায় ভিনিসিউস জুনিয়রের বাড়িয়ে দেওয়া বল ডি বক্সের সামনে পেয়ে যান এন্ড্রিক। তখন তার সামনে ছিলেন কেবল সোসিয়েদাদের গোলরক্ষক। তার মাথার ওপর দিয়ে বল মেরে গোল করে সমতা ফেরান এন্ড্রিক। তাতে ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।

বিরতির পর ৭২ মিনিটে ডেভিড আলবা নিজেই নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন। তাতে আবারও এগিয়ে যায় সোসিয়েদাদ। ৮০ মিনিটে মাইকেল ওয়ারজাবাল গোল করে ব্যবধান ১-৩ করে ফেলেন। তবে ৮২ মিনিটে ভিনিসিউস জুনিয়রের বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে জুদ বেলিংহ্যাম গোল করে ব্যবধান কমান (২-৩)। আর ৮৬ মিনিটে ওরেলিয়াঁ চুয়ামেনি গোল করে সমতা ফেরান (৩-৩)। তাতে ধরা নেওয়া হচ্ছিল রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে যাচ্ছে। কিন্তু যোগ করা সময়ে (৯০+৩) সোসিয়েদাদের ওয়ারজাবাল নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করে আবারও দলকে এগিয়ে নেন (৩-৪)। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৪ সমতা থাকায় অতিরিক্ত সময়ে যায় ম্যাচ। আর সেই অতিরিক্ত সময়ের ১১৫ মিনিটের মাথায় অ্যান্তোনিও রুদিগার কর্নার থেকে আসা বলে হেড নিয়ে জালে জড়িয়ে রিয়ালের জয় নিশ্চিত করেন। নিশ্চিত করেন দলের সেমিফাইনাল।

এ নিয়ে ৪১তম বারের মতো কোপা ডেল রের সেমিফাইনালে উঠলো রিয়াল। সবশেষ ২০২২-২০২৩ মৌসুমে তারা ফাইনাল খেলেছিল এবং ২০তম শিরোপা জিতেছিল এই টুর্নামেন্টের শিরোপা। অন্যদিকে সোসিয়েদাদ সবশেষ ২০১৯-২০২০ মৌসুমে ফাইনাল খেলে দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছিল।

রিয়াল মাদ্রিদ ২৬ এপ্রিলের ফাইনালে হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা নতুবা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে পাবে। প্রথম লেগে বার্সা ও অ্যাটলেটিকো ৪-৪ গোলে ড্র করেছে। আজ অ্যাটলেটিকোর মাঠে ফিরতি লেগের লড়াইয়ে নামবে তারা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ