ঈদ মানে ছুটি। ঈদে কর্মব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে আনন্দ উদযাপন করেন কর্মজীবী মানুষ। কিন্তু, কিছু পেশা আছে, যেখানে ছুটি নেই। ঈদে তাদের কর্মব্যস্ততা আরো বাড়ে। পুলিশ, চিকিৎসক, সংবাদকর্মীসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের দায়িত্ব যেন আরো বাড়ে ঈদের দিনে। বিশেষ করে, টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ঈদের সময়ে আগের চেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন সংবাদ সংগ্রহ, সম্পাদনা প্রভৃতি কাজে। ঈদের বাজার, ঈদযাত্রা ও মানুষের ঈদ উদযাপনের তথ্য ও চিত্র তুলে ধরতে নিরলস কাজ করতে হয় সংবাদকর্মীদের। অন্য মানুষের ঈদ উদযাপনের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে নিজেদের আনন্দ-বেদনার কথাও যেন ভুলে যান সাংবাদিকরা।
মানুষ যখন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করছেন, তখন সংবাদকর্মীরা সেই তথ্য পরিবেশনের কাজে ব্যস্ত। দায়িত্ববোধ থেকে নিজের প্রতিষ্ঠানের ও মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজের চাওয়া-পাওয়া বিসর্জন দিয়ে থাকেন সংবাদকর্মীরা।
সোমবার (৩১ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতের খবর সবাইকে জানাতে দেশের বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে দায়িত্ব পালন করেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। ইচ্ছা থাকলেও প্রথম জামাতে নামাজ পড়া হয় না সংবাদকর্মীদের। পরবর্তী জামাতে নামাজ আদায় করতে হয় তাদের।
এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা ৯ দিনের ছুটি পেয়েছেন। বেসরকারি চাকরিজীবীসহ অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিরাও লম্বা ছুটি পেয়েছেন। কিন্তু, সংবাদকর্মীদের ছুটি মাত্র তিন দিন। তবে, সব সংবাদকর্মী সে ছুটি পাননি। সংবাদ প্রতিষ্ঠান সচল রাখার স্বার্থে অর্ধেক কর্মীকে ঈদের ছুটিতেও দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
ঈদের দিন সকালে বায়তুল মোকাররমে দায়িত্ব পালন করছিলেন জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার ইসমাইল সিরাজী। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, সবার মন চায়, ঈদে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। কিন্তু, আমরা যারা সংবাদকর্মী, তাদের সে সুযোগ সব সময় হয়ে ওঠে না। সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত থাকতে হয়। আমরা সবার কথা তুলে ধরি, কিন্তু আমাদের কথা সেভাবে তুলে ধরা হয় না। আমাদের ঈদ সহকর্মীদের সঙ্গেই কাটে।
রাইজিংবিডি ডটকমের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইয়াসমিন সুমি বলেন, গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। জনগণের কাছে দ্রুততম সময়ে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছে দেওয়া আমাদের পেশাগত দায়িত্ব। যেকোনো উৎসব বা বিশেষ দিনে যখন সবাই পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটায়, তখনো আমরা সংবাদকর্মীরা দায়িত্ববোধ থেকে ছুটে আসি অফিসে—জনগণকে আপডেট তথ্য জানানোর জন্য।
তিনি বলেন, ঈদের মতো আনন্দঘন দিনেও সাংবাদিকদের কাজ থেমে থাকে না। বরং, এ সময় আরো বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়, যাতে দেশ ও সমাজের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ খবর সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ কাজকে শুধু দায়িত্ব হিসেবে নয়, ভালোবাসা হিসেবে দেখি। কারণ, সত্য ও তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জন করাই আমাদের পেশার মূল লক্ষ্য। তাই, পরিবার থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকলেও দায়িত্ব পালনের তৃপ্তি আমার জন্য সবকিছুর ঊর্ধ্বে।
আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল মাসুম বলেন, “সবাই যখন ঈদের আনন্দে মশগুল, আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা তখন সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত। ঈদের দিনে কাজে গিয়ে যখন অন্য সাংবাদিকদের দেখি, তখন দুঃখবোধ অনেকটা উবে যায়।”
ঢাকা/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব দকর ম দ র আম দ র কর ম র পর ব র আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
জমি নিয়ে বিরোধ, চাটমোহরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৩০
পাবনার চাটমোহরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নারীসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ঈদের পরদিন মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের ধানকুনিয়া উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
আহতরা হলেন- কুকড়াগাড়ি গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন, ধানকুনিয়া গ্রামের রুমা খাতুন, ইদ্রিস আলী, শাহাদৎ হোসেন, সোলাইমান হোসেন, মুক্তা খাতুন, আখিরুল ইসলাম, উজ্জ্বল হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, শিবলু হোসেন, ইতিয়ারা খাতুন, হৃদয় হোসেন, রাসেল হোসেন, সাথী খাতুন, শামসুন্নাহার, আবু হানিফ, আম্বিয়া খাতুন, হাবিবুর রহমান, হাবিল প্রামানিক, সলকী খাতুন। অন্যদের নাম পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ধানকুনিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী ও মোন্নাফ প্রামানিকের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ হয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার বিকেলে ওই জমি নিয়ে দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয়পক্ষের লোকজনই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক পাবনা জেনারলে হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, জমিজমা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে এ ঘটনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।