ঈদের দিন পটুয়াখালীর কুয়াকাটার স্নিগ্ধ সমুদ্র সৈতকে যেন আনন্দের ঢেউ লেগেছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে আনন্দপিপাসু মানুষের ঈদ আনন্দ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে সেখানে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মধ্যে সৈতকে ঈদের উৎসব বাড়তি খুশির কারণ হয়ে উঠেছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদ জামাত শেষ হওয়ার পর থেকে সৈকতে আনন্দ উৎসব শুরু হয়। সৈতকের স্নিগ্ধতায় খুশির জোয়ার দেখা যায় মানুষের মধ্যে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈতকে ঈদের আনন্দে ঘুরতে আসা মানুষের ঢল। ছবি: রাইজিংবিডি

আরো পড়ুন:

জৌলুস ফিরলেও অরক্ষিত শিলাইদহের কাচারি বাড়ি 

সাজেকে যেতে পারবেন পর্যটকরা

পটুয়াখালী জেলার পাশাপাশি বরগুনাসহ আশপাশের জেলার বাসিন্দাদের আগমনে সৈতকে ঈদের দিনটি রঙিন হয়ে ওঠেছে। অবশ্য ঈদের দিনে স্থানীয়দের ভিড় থাকলেও পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থেকে দেশের নানা প্রান্তের এবং বিদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি বেশি থাকবে।

সোমবার দুপুরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈতকে গিয়ে দেখা যায, ঈদ উদযাপনে আনন্দমুখর মানুষ সৈকতের বালিয়াড়িতে হইহুল্লোড় করছেন। অনেকে আবার সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসাচ্ছেন। কেউবা আবার সৈকতের বেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন সমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়া ছোট বড় ঢেউ।

বিভিন্ন বাহনে চড়ে সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ঘুরে দেখছেন অনেকে। কেউ কেউ সৈকতলাগোয়া দোকানপাটে কেনাকাটা করছেন।

কথা বলে জানা গেল, কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের কক্ষ অগ্রিম বুকিং নিয়েছেন পর্যটকরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা সেখানে সময় কাটাবেন। কেউ কেউ রাত্রিযাপনও করবেন।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের লেম্বুর বন, শুঁটকি পল্লি, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি ও বৌদ্ধ বিহারসহ সব স্পটে দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিত দেখা গেছে। আগতদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।

ঈদের দিন সোমবার কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা মানুষের ভিড়। ছবি: রাইজিংবিডি

ঈদের দিন বরগুনা থেকে ঘুরতে আসা রুবেল হোসেন বলেন, “ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে বন্ধুরা মিলে কুয়াকাটায় এসেছি। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে সাঁতার কেটেছি। বেশ দারুন সময় পার করছি। সন্ধ্যার পর আমরা আবার বাড়িতে ফিরে যাবো “

সৈতকে ইয়াসিন-সায়মা দম্পতির খুশি মনে ঘুরছিলেন। গলাচিপা থেকে আসা এই দম্পতির সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, মোটরসাইকেলে করে দুপুর ১টায় কুয়াকাটায় পৌঁছেছেন তারা। সৈকতের পরিবেশটা বেশ দারুন লেগেছে তাদের। সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরবেন। তবে হোটেলের ভালো রুম পেলে রাত্রিযাপন করতে পারেন তারা।

ঈদের দিন সোমবার কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা মানুষের ভিড়। ছবি: রাইজিংবিডি

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহাকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “আগতদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন পর্যটন স্পটে আমাদের পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। পাশাপাশি থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন। আশা করছি, দর্শনার্থী ও পর্যটকরা নিরাপদে তাদের ভ্রমন উপভোগ করতে পারবে।”

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ রমণ ঈদ র দ ন স কত র স মব র আনন দ করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

দল বেঁধে বেড়ানোর যে উৎসব ছিল, তা আর নেই, কী কঠিন বড় হওয়াটা

তখন অনেক ছোট ছিলাম। আব্বা ঈদের দিনে আমাদের নিয়ে মসজিদে যেতেন। আব্বার আঙুল ধরে হাঁটতাম। মসজিদের কাছাকাছি যখন যেতাম, তখন দেখতাম সেখানে লেখা থাকত—‘সামনে মসজিদ, আস্তে চলুন’।

ছোটবেলার এই লেখাগুলো মনে যে দারুণ আলোড়ন তুলত, প্রাপ্তবয়সে সে আবেদন অনেকখানি গেল কমে। কিন্তু গেঁথে আছে যাপিত জীবনে একটা সুখের নদী হয়ে। একা হলে এই নদীগুলোতে ঝাঁপ দিই, শিহরিত হই। কম্পন জাগে, চোখটা কেমন ঝাপসা হয়ে আসে। আমি ফেলে এসেছি আমার সেই সব দিনরাত্রি। আমার ঈদ উৎসবে আজ একা হয়ে যাই। অথচ ছোটবেলায় দল বেঁধে বেড়ানোর যে উৎসব ছিল, তা আর নেই। কী কঠিন বড় হওয়াটা!

ছোটবেলায় ঈদে নতুন কাপড় আনলে লুকিয়ে রাখতাম কাঠের দেরাজ, নয়তো স্টিলের আলমারিতে। নতুন কাপড় দেখার জন্য চাচাতো বোনদের সে কী উঁকিঝুঁকি! কিন্তু কিছুতেই কাপড় দেখাতাম না, যদি ঈদ চলে যায়! যদি কাপড়টা পুরোনো হয়ে যায়! আহ, নতুন কাপড়ের ঘ্রাণ! সময়ের স্রোতে সেই ঘ্রাণটা যেন এখন বদলে গেছে।

আমাদের আব্বা-চাচা মিলে যৌথ পরিবার ছিল। নামাজ শেষ করে সব চাচাতো-মামাতো ভাই আসতেন আব্বা-আম্মাকে সালাম করার জন্য। সালাম শেষে যা পিঠা বানানো হতো, তাই পরিবেশন করা হতো। তার মধ্যে বকফুল মানে সিলেটি ভাষায় ‘নাইকোল পিঠা’ বলা হতো, তারপর লুচি, হান্দেশ, গ্লাসকাটা (কেউ বলেন নুনগড়া), সেমাই, হালুয়া ইত্যাদি নানা জাতের খাবার থাকত।

দুপুরে বড় ডেকচিতে রান্না হতো কোর্মা, পোলাও, মাংস ভুনা। রুটি দিয়ে আমরা মাংস খেতাম। চালের রুটি। এখন বড়বেলায় পিঠা তেমন একটা করি না। আমার ছোট সংসারে পিঠার বালাই নেই। রান্নাও ছোট সস প্যানে, ফ্রাই প্যানে। সেমাই এখন আর খেতে পারি না, তাই বানাইও না। আগে মা-চাচি-বোনেরা মিলে বাড়িতে একসঙ্গে পিঠা বানাতেন। বানানো পিঠাগুলো রাখতেন রসুইঘরের শিকেতে ঝুলিয়ে, যাতে বিড়াল আর আমাদের মতো কিছু দস্যির হাত থেকে রক্ষা পায়।

মাসুদা সিদ্দিকা রুহী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়
  • সাতছড়ি উদ্যানে পর্যটকের ঢল 
  • উৎসবে হজমের সমস্যা এড়াতে যা করবেন
  • ছোটবেলার ঈদ ঝামেলাবিহীন, সহজ-সরল ছিল: নুসরাত ফারিয়া
  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লুকানো রত্ন সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া
  • কুয়াকাটা সৈকতে ঈদের আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা 
  • দল বেঁধে বেড়ানোর যে উৎসব ছিল, তা আর নেই, কী কঠিন বড় হওয়াটা
  • ঈদের ছুটিতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে কক্সবাজারে
  • পর্যটনে সাতছড়ি উদ্যানের হাতছানি