সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ আকস্মিক ভেঙে আনুলিয়া ইউনিয়নের মানুষের ঈদের আনন্দ মলিন হতে বসেছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর বিছট নামক স্থানের ২০০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি ঢোকা শুরু হয়। বেলা ১১টার থেকে নদীতে ভরা জোয়ার হওয়ায় গ্রামের মধ্যে পানি ঢুকছে হু হু করে। ইতিমধ্যে তিনটি গ্রামে পানি ঢুকছে। বাঁধ সংস্কার না করা গেলে তিনটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে খোলপেটুয়া নদীর পাউবোর বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছিল। স্থানীয় মানুষের দাবির মুখে সাতক্ষীরা পাউবো (বিভাগ-২) ওই এলাকায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে কাজ শুরু করে। যেখানে কাজ চলছে, ঠিক তার পাশে হঠাৎ আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাঁধ ধসে যায়।

গ্রামের ব্যবসায়ী শওকাত হোসেন জানান, বাঁধে ধস নামার খবর জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন মসজিদের মাইকে গ্রামের মানুষ একত্র হয়ে বাঁধ মেরামতের আহ্বান জানান। কিছুক্ষণের মধ্যে হাজারখানেক মানুষ এক হয়ে বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১০টার দিকে জোয়ারের পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢোকা শুরু করে।

বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে হু হু করে ঢুকছে জোয়ারের পানি। আজ সোমবার সকালে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর বিছট এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত পুতিন

চার বছর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, প্রথমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্য বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (২১ এপ্রিল) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য তিনি প্রস্তুত।

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণের নিহতের খবর

ইউক্রেনে সুমি শহরে রাশিয়ার হামলায় নিহত ৩৪, ‘ভয়াবহ ঘটনা’ বললেন ট্রাম্প

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। দ্রুত শান্তি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য উভয় পক্ষের ওপর চাপ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

বিবিসি লিখেছে, কিছুদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, চলতি সপ্তাহেই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে মস্কোর উপর থেকে আর্থিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আমেরিকা প্রত্যাহার করে নেবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রুশ রাষ্ট্রীয় টিভির একজন প্রতিবেদককে পুতিন বলেন, “মস্কো যেকোনো শান্তি উদ্যোগের জন্য উন্মুক্ত এবং কিয়েভের কাছ থেকেও একই প্রত্যাশা করে।’

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পুতিনের মন্তব্যে ইউক্রেনের সঙ্গে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা না চালানোর বিষয়ে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের মন্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে বলেছেন, ইউক্রেন বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ‘যেকোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত’।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া যখন ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে, তখন থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর চার বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি যুদ্ধের বিষয়ে রাশিয়ার বক্তব্য গ্রহণের জন্য ইউক্রেনের প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন থেকে মার্কিন নীতি পুনর্নির্ধারণ করেছেন।

গত সপ্তাহে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের উৎসব ‘ইস্টার’ উপলক্ষে একদিনের (৩০ ঘণ্টার) যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। তবে জেলেনস্কি অভিযোগ করেছিলেন, একদিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলে আসলে শান্তির ‘ভান’ করেছেন পুতিন। ওই সাময়িক যুদ্ধবিরতির সময়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়েই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছিল।

জেলেনস্কি দাবি করেছিলেন, রাশিয়ান সেনারা প্রায় ৩ হাজার বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শত শত ড্রোন এবং গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছিল। সেই ঘটনার কয়েক দিন যেতে না যেতেই এবার পুতিনের পক্ষ থেকে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব এলো।  

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, উভয় পক্ষই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হচ্ছে। কয়েকদিন আগে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন যে, শান্তি আলোচনায় মস্কো ও কিয়েভ কয়েক দিনের মধ্যে অগ্রগতি না দেখালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা থেকে সরে দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র। 

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ