সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল ও টিকিট সংক্রান্ত অভিযোগ
Published: 31st, March 2025 GMT
হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন মোহন রাওয়ের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং টিকিট সংক্রান্ত অনৈতিক চাপে রাখার অভিযোগ এনেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
ফ্র্যাঞ্চাইজিটির দাবি, রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগে রাও কর্পোরেট বক্সগুলো তালাবদ্ধ করে দেন এবং বিনামূল্যে অতিরিক্ত টিকিট দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য ফ্রাঞ্চাইজি হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে।
সানরাইজার্স ম্যানেজমেন্ট ইতোমধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এবং আইপিএল পরিচালনা কমিটিকেও বিষয়টি জানিয়েছে। তবে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে দলটি।
সানরাইজার্স এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন মোহন রাও আমাদের কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছেন, ব্ল্যাকমেইল করছেন। এমনকি আইপিএল শুরুর আগেই তিনি আমাদের স্টাফদের হুমকি দিয়েছেন, যা তারা প্রমাণস্বরূপ ই-মেইলে উল্লেখ করেছেন।’
সানরাইজার্স অভিযোগ করেছে, হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য স্বাভাবিক পদ্ধতি এড়িয়ে টিকিট ও পাস সংগ্রহ করতে চেয়েছেন। দলটির মতে, রাও প্রতিটি ম্যাচের জন্য ১০% টিকিট (৩৯০০টি) বরাদ্দ রাখার দাবি করেন, যা সানরাইজার্সের দেওয়া ৩৯০০টি বিনামূল্যের টিকিটের অতিরিক্ত। ফ্র্যাঞ্চাইজি এতে আপত্তি জানায়, কারণ এতে সমর্থকদের জন্য টিকিটের সংখ্যা কমে যাবে এবং টিকিট বিক্রির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
তবে ক্রমাগত চাপে পড়ে সানরাইজার্স প্রথমে ১০০০টি টিকিট বরাদ্দ দেয়, পরে এটি ২০০০-এ উন্নীত করতে বাধ্য হয়। তবে তারা জোর দেয় যে, পুরো অর্থ হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অফিসিয়াল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে একবারে পরিশোধ করতে হবে।
সানরাইজার্স আরও অভিযোগ করেছে যে, স্টেডিয়ামের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছে তারা, কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিজেকে এই উন্নয়নের কৃতিত্ব দিতে থাকেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা স্টেডিয়ামের রং করা, টয়লেট সংস্কার, কর্পোরেট বক্সের মানোন্নয়ন ও নতুন এয়ার কন্ডিশনার স্থাপনের জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন মোহন রাও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, এসব কাজ তিনি করেছেন।’
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ফ্রাঞ্চাইজি হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে। দলটির দাবি, বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে চেয়েছিল তারা। তবে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কর্পোরেট বক্স তালাবদ্ধ করে ব্ল্যাকমেইল করায় তারা অভিযোগ তুলতে বাধ্য হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র জন য ঞ চ ইজ ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার ২৫০ জনে পৌঁছেছে।
গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ৮৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ২৪০ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ৬২ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৪ হাজার ৯০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।