কুমিল্লার দেবিদ্বারে নিজ গ্রামে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

সোমবার সকাল ৯টায় দেবিদ্বার উপজেলার গোপালনগর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেন তিনি। এ সময় আত্মীয়স্বজন, এলাকাবাসী, বন্ধুবান্ধব ও ভক্তদের সঙ্গে কোলাকুলি করেন হাসনাত।

নামাজের আগে হাসনাত আবদুল্লাহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসন থেকে হাসনাত আবদুল্লাহর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। হাসনাতকে এক নজর দেখার জন্য তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

নামাজ শেষে এলাকাবাসীকে নিয়ে গোপালনগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জিয়ারত ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। এদিকে দিনভর হাসনাত আবদুল্লাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ রাসেলের ছোট্ট মেয়ে এখনও বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায়

রাজধানীর গু‌লিস্তা‌নে এক‌টি জুতার কারখানার কাজ কর‌তেন জ‌হিরুল ইসলাম রা‌সেল। গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবি‌রোধী ছাত্র আ‌ন্দোলন চলাকা‌লে পুলি‌শের গু‌লি‌তে নিহত হন ‌তি‌নি। এরপর অ‌ভিভাবকশূন্য হ‌য়ে প‌ড়ে রা‌সে‌লের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী আর ছোট্ট মে‌য়ে জুমা। রা‌সেল না থাকায় ঈ‌দের আনন্দও নেই প‌রিবার‌টি‌তে।

রাসেলের মা মোরশেদা বেগম জানান, রাসেলের সা‌ড়ে তিন বছ‌রের মেয়ে জুমা এখ‌নও অ‌পেক্ষায় আ‌ছে তার বাবা ফি‌রে আস‌বে। তার জন্য ঈ‌দের নতুন জামা নি‌য়ে আস‌বে, সেই জামা প‌রে সে বাবার সঙ্গে ঈদগাহে যাবে। অথচ অবুঝ জুমা জা‌নে না যে, তার এই অ‌পেক্ষার প্রহর ফুরাবার নয়। কথাগু‌লো বল‌তে গি‌য়ে কান্নায় ভে‌ঙে প‌ড়েন রাসেলের মা।

ঈদের দিন সোমবার দুপু‌রে শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেলের পরিবারের খোঁজ-খবর নি‌তে তার বা‌ড়ি‌তে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের ম‌হেশপুর গ্রা‌মে রা‌সে‌লের বা‌ড়ি‌তে গে‌লে এমন হৃদয়বিদারক মুহূর্তের সৃ‌স্টি হয় সেখা‌নে।

রাসেলের শিশু মেয়ে জুমাকে কোলে নিয়ে ‌বেশকিছু সময় ব‌সে থা‌কেন হাসনাত। রাসেলের মা মোর্শেদা বেগম ও স্ত্রী জান্নাত ফেরদৌসের সঙ্গে নানা বিষ‌য়ে কথা বলার সময় তাদের হা‌তে নগদ অর্থ সাহায্য তুলে দেন হাসনাত।

জহিরুল ইসলাম রাসেল ম‌হেশপুর গ্রা‌মের মৃত শাহ আলম সরকারের একমাত্র ছেলে। সে ছৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসার ফাযিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। বাবার অবর্তমা‌নে সংসা‌রের খরচ জোগা‌তে ঢাকায় একটি জুতার কারখানায় কাজ করতেন। বৈষম্যবি‌রোধী আ‌ন্দোলন চলাকা‌লে ৪ আগস্ট সকা‌লে গু‌লিস্তান এলাকায় পু‌লি‌শের গু‌লি‌তে শহীদ হন তি‌নি। সোমবার হাসনাত আব্দুল্লাহ তার নিজ গ্রাম উপ‌জেলার গোপালনগরে ঈদুল ফিতরের নামাজের পর শ‌হীদ রা‌সে‌লের বা‌ড়ি‌তে যান।

এর আগে তি‌নি উপ‌স্থিত মুসল্লিদের সঙ্গে ঈ‌দের শু‌ভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং ঈদগাহের পাশে গোপালনগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জিয়ারত ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। নামাজের পূর্বে হাসনাত আবদুল্লাহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

এসময় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর নতুন বাংলা‌দে‌শে আমার এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদুল ফিতরের নামায আদায় করতে পেরে ভাল লাগ‌ছে। গ্রামের মানুষ যে আমাকে এতো ভালোবাসেন ঈদগাহে না আসলে বুঝতে পারতাম না। জুলাই বিপ্লবে সারাদেশের মতো এই দেবিদ্বারেও অসংখ্য মানুষ ফ্যাসিস্টদের হাতে নির্মমভাবে খুনের শিকার হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। সরকার এ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন কর‌তে কাজ করছে।’

তিনি ঐক্য ও সাম্যের দেবিদ্বার গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তি‌নি একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত ক‌রেন। এসময় হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসন থেকে হাসনাত আবদুল্লাহর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহীদ রাসেলের ছোট্ট মেয়ে এখনও বাবা ফিরে আসার অপেক্ষায়
  • শহীদ রাসেলের ছোট্ট মেয়ে এখনও বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায়