গাজীপুরে অটোরিকশায় বাসের ধাক্কা, খালা-ভাগনীর মৃত্যু, আহত ৪
Published: 31st, March 2025 GMT
গাজীপুর শহরের শিববাড়ি এলাকায় একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় খালা ও ভাগনীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা যাত্রীবাহী বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করে।
সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০ টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন চার জন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নিহতরা হলেন- নরসিংদীর রায়পুরা থানার কালিকাপুর মধ্যপাড়া রহিদ উদ্দিনের স্ত্রী শিউলি বেগম (৫১) ও তাঁর বোন লিজা বেগমের মেয়ে তাবাসসুম (৫)। তারা স্বপরিবারে গাজীপুর মহানগরীর নলজানি এলাকায় বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে পরিবারটি একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ে গাজীপুর শহর হয়ে নরসিংদীতে আত্মীয় বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে সিএনজিটি গাজীপুর শহরের শিববাড়ি মোড়ে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি বাস সিএনজিকে ধাক্কা দেয়।
এতে সিএনজিটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই সিএনজিতে থাকা শিউলি বেগম (৫১) ও তার বোনের মেয়ে তাবাসসুমের মৃত্যু হয়। সেসময় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটি আটক করে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সর্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভায়।
গাজীপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
তিনি আরো বলেন, “আহতদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থাও গুরুতর। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের ফেরত দেওয়া বোয়িং কিনতে চায় ভারত
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যযুদ্ধের সুফল পেতে পারে ভারতীয় বেসরকারি বেসামরিক বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও আকাশ এয়ার। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের দরুন চীন সরকার সে দেশের উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে মার্কিন বিমান না কেনার হুকুম জারি করায় ভারতের কাছে এই সুযোগ চলে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে চীনা সংস্থাগুলোর দেওয়া উড়োজাহাজগুলো এবার ভারতে চলে আসতে পারে। ভারতীয় সংস্থাগুলোকে উড়োজাহাজ পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না।
মার্কিন সংস্থা বোয়িংকে চীনের বিভিন্ন এয়ারলাইনস প্রায় ১০০টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স জেট উড়োজাহাজের বরাত দিয়েছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে শুল্কযুদ্ধ শুরু হওয়ায় সেই বরাত বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। এতে ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া ও আকাশ এয়ারের লাভ হতে পারে। তারাও ওই একই মডেলের বিমানের বরাত বোয়িংকে দিয়েছে। পাশাপাশি ১১টি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারেরও বরাত দিয়েছে ওই দুই সংস্থা। চীনের সিদ্ধান্তের দরুন ভারতীয় সংস্থাগুলোর বিমান পেতে দীর্ঘ অপেক্ষার প্রয়োজন হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
যাত্রীসংখ্যা বাড়লেও পর্যাপ্ত উড়োজাহাজের অভাবে এই দুই ভারতীয় সংস্থাকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মার্কিন সংস্থা বোয়িং ছাড়াও ভারতীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো ফ্রান্সের এয়ারবাসের ওপর নির্ভরশীল।
ওয়াকিবহাল সূত্রের বরাতে সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার মালিক টাটা গোষ্ঠী বোয়িংকে এই বিষয়ে অনুরোধ করতে চলেছে। চীনকে সরবরাহ দিতে যেসব উড়োজাহাজ প্রস্তুত, সেগুলোকে দ্রুত যাতে তাদের দেওয়া যায়, অনুরোধে সে কথাই বলা হবে। এতে ভারতীয় সংস্থাগুলোর মতো বোয়িংয়েরও লাভ হবে। তৈরি উড়োজাহাজ ফেলে না রেখে তারা অন্যত্র সরবরাহ করতে পারবে।
বোয়িং অনুরোধ রাখলে ভারতীয় সংস্থা যেমন লাভবান হবে, তেমনি তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। এভাবে অতীতেও এয়ার ইন্ডিয়ার লাভ হয়েছিল। চীন বরাত না নেওয়ায় ৪১টি ৭৩৭ ম্যাক্স জেট এয়ার ইন্ডিয়ায় চলে এসেছিল।
ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক চাপানোয় চীনও পাল্টা শুল্ক বাড়িয়েছে। মার্কিন পণ্যের ওপর চাপানো হয়েছে ১২৫ শতাংশ শুল্ক। এই মুহূর্তে ১০টি উড়োজাহাজ পুরোপুরি তৈরি অবস্থায় বোয়িংয়ের কাছে পড়ে আছে। আনুষ্ঠানিকভাবে অবশ্য এ বিষয়ে এয়ার ইন্ডিয়া বা আকাশ এয়ার কর্তৃপক্ষ এখনো গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করেনি।
ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী তেলুগু দেশম পার্টির নেতা রাম মোহন নাইডু গতকাল সোমবার হরিয়ানার গুরুগ্রামে এয়ার ইন্ডিয়ার সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি ওই সংস্থার নিরাপত্তা উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ওপর এয়ার ইন্ডিয়া বিশেষ জোর দিয়েছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রী সেখানে বলেন, এয়ার ইন্ডিয়ার পরিধি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয় যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। টাটা গোষ্ঠীর এই সংস্থা বিশ্বের অন্যতম সেরা সংস্থা হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। ভারত সরকার তাদের সব রকমের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
আকাশ এয়ার সংস্থার যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালে। উড়োজাহাজ পেতে দেরি হওয়ায় এই নতুন সংস্থাকে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। সংস্থাটির কাছে যত উড়োজাহাজ রয়েছে, তার চেয়ে বেশি রয়েছেন পাইলট। ভবিষ্যতের প্রয়োজনের কথা মনে রেখে তাঁদের নিযুক্তি দেওয়া হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার মতো তারাও দ্রুত বিমান পেতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের যুদ্ধংদেহী মনোভাব এই দুই সংস্থার সন্তুষ্টির কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।