বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারকে ঈদ উপহার দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

 রবিবার (৩০ মার্চ) রংপুরের পীরগঞ্জে বাবনপুর গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন উপাচার্য প্রফেসর মো. শওকাত আলী।

এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ঈদ উপহার শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের কাছে হস্তান্তর করেন। উপাচার্য শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড.

হারুন-অর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

উপাচার্য বলেন, “শহীদ আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য। আবু সাঈদকে ছাড়া তার পরিবার প্রথমবারের মতো ঈদ পালন করবে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে ঈদ সামগ্রী দেওয়ার জন্য এখানে এসেছি।”

তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পর প্রথমবারের মতো রমজান মাসে নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায় রয়েছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের মতো যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের জন্য এটা সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আবু সাঈদসহ জুলাই বিপ্লবে শহীদদের হত্যাকারীদের যথাযথ বিচার এখনো দেখতে পারিনি ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। দ্রুত বিচার কাজ সম্পন্ন করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও দেশবাসী ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দ অনুভব করবে।” 

গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদ।

তার মৃত্যুর পর সারা দেশে আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়।

ঢাকা/গাজী আজম/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঈদ র পর ব র ব গম র ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি সেনা নিহত

উত্তর গাজা উপত্যকায় হামাসের হামলায় একজন ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের। 

নিহত সেনার নাম ওয়ারেন্ট অফিসার গা’হালেব স্লিমান আলনাসাসরা। ৩৫ বছর বয়সী আলনাসাসরা গাজা ডিভিশনের নর্দার্ন ব্রিগেডের একজন ট্র্যাকার ছিলেন।

গত ১৮ মার্চ, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে তিনি গাজায় নিহত প্রথম ইসরায়েলি সেনা।

আরো পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরো ৫৪ ফিলিস্তিনি

গাজায় এক মাসে ৪ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে ইসরায়েল

শনিবার (১৯ এপ্রিল) উত্তর গাজার বেইত হানুনের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২৫২তম ডিভিশনের অভিযানের সময় হামাসের হামলার ঘটনাটি ঘটে। ইসরায়েলের বাফার জোন, যা এখন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৩০ শতাংশেরও বেশি জুড়ে রয়েছে, যা আরো বাড়ানোর জন্য ডিভিশনটি কাজ করছে।

আইডিএফের প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, দুপুর ১২ টা ৫৮ মিনিটে, গাজার অভ্যন্তরে একটি সেনা শিবিরের কাছে আইডিএফের একটি লজিস্টিক রোড ধরে গাড়ি চালানো একদল সেনার ওপর হামাসের যোদ্ধরা গুলি চালায়। একটি সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসা হামাস কর্মীরা নিরস্ত্র সেনা গাড়িতে একটি আরপিজি ছোড়ে।

আরপিজি হামলায় ৪১৪তম কমব্যাট ইন্টেলিজেন্স কালেকশন ইউনিটের তিনজন নারী সেনা আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন- একজন অফিসার এবং একজন কমব্যাট মেডিকেল গুরুতর আহত হন। 

কিছুক্ষণ পরে, গাজা ডিভিশনের নর্দার্ন ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল ওমরি মাশিয়ার নেতৃত্বে উদ্ধারকারী বাহিনী ব্রিগেডের ট্র্যাকারদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

তদন্ত অনুসারে, দুপুর ১ টা ২৫ মিনিটে হামাস যোদ্ধরা ইসরায়েলি উদ্ধারকারী বাহিনীর কাছে রাস্তার পাশে একটি বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরণ ঘটায়, যার ফলে আলনাসাসরা নিহত হন এবং আরো দুইজন ট্র্যাকার আহত হন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।

আইডিএফ জানিয়েছে, হামলার পেছনের হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করার লক্ষ্যে আইডিএফ ওই এলাকায় একের পর এক হামলা চালিয়েছে।

আইডিএফ আরো জানিয়েছে, তারা গত ১৮ মার্চ হামাসের বিরুদ্ধে গাজায় পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করা পর থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি ভেস্তে যাওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে পুররায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫১ হাজারেও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত গাজায় প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এর বিপরীতে, গাজায় স্থল আক্রমণ এবং সীমান্তে সামরিক অভিযান শুরু করার পর হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪১১ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কোনো কথা না বলেও অনেক কথা বললেন সুনেরাহ্
  • গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি সেনা নিহত