রংপুরে প্রায় ৬ হাজার ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
Published: 31st, March 2025 GMT
রংপুরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হচ্ছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের জামায়াতে অংশ নেন মুসল্লিরা।
ঈদ উপলক্ষে সিটি করপোরেশন থেকে নগরের সড়কগুলোয় জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে জেলার হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোয় বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে।
রংপুর বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার প্রায় ছয় হাজার ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদ জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডের ৭৫টিসহ জেলার ১২ শতাধিক ঈদগাহ মাঠে ও পাড়া–মহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোয় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
কালেক্টরেট ঈদগাহে জেলার প্রধান এই ঈদ জামাতে কয়েক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। ইমামতি করেন রংপুর কেরামতিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মো.
নামাজ শুরুর আগে উপস্থিত মুসল্লিসহ রংপুরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানান বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এ সময় রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল আটটায় রংপুর পুলিশ লাইন্স মসজিদ মাঠে, নয়টায় শাপলা চত্বর আশরাফিয়া জামে মসজিদে, সকাল সাড়ে আটটায় মুন্সিপাড়া ঈদগাহে, হযরত মাওলানা কেরামত আলী (রহ.) মাজারসংলগ্ন কেরামতিয়া মসজিদে সকাল সাড়ে নয়টায়, মন্ডলপাড়া বড় ঈদগাহ ময়দানে সাড়ে নয়টায়, মিঠাপুকুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সকাল নয়টায়, বদরগঞ্জ চান্দামাড়ি কারামতিয়া ঈদগাহে সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার ঈদগাহ, মসজিদ ও মাদ্রাসার মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নেন মুসল্লিরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম ত অন ষ ঠ ত ঈদ র জ ম ত র ঈদগ হ ক র মত নয়ট য় মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।
গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।
ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’
তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।