ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আর এই ঈদের আনন্দ ছোট-বড় নির্বিশেষে সবার মাঝেই ছড়িয়ে যায়। ব্যতিক্রম নেই তারকাদের ক্ষেত্রেও। সাধারণ মানুষের মতোই আয়োজন করে ঈদ উৎসব পালন করেন তাঁরা। সম্প্রতি ঈদে স্মৃতি শেয়ার করেছেন অভিনেতা আফরান নিশো। তাঁর মতে, সচ্ছল বা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করা মানুষের জন্য ঈদ না।
আফরান নিশো বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা যারা সচ্ছল বা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছি তাদের জন্য ঈদ না। কারণ, আমরা চাইলেই প্রতিদিন শপিং করতে পারি। যারা দরিদ্র, যারা তিন বেলা ঠিক মতো খেতে পারে না তাদের জন্য ঈদ। আমাদের উচিৎ সব সময় তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। এই একটা ঈদের দিন যেন তাদেরও ঈদের দিনের মত কাটে। একই অর্থে আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়গুলো আছে সেই জায়গা থেকে আমাদেরই সেই দায়িত্বগুলো পালন করা উচিৎ।’
ছোটবেলার ঈদের সালামি নিয়ে নিশো বলেন, ‘সালামি নিয়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। সেই অনুভূতি দারুণ। আমি আমার দাদাকে দেখিনি। দাদি-নানা-নানিকে পেয়েছি। ছোটবেলা ঈদ আসলেই সালামির একটা প্রবণতা কাজ করতো। আমার মনে পড়ে, নানির কাছ থেকে একটু বেশি টাকা নিয়ে একটা মোবাইল ফোন কিনেছিলাম। আর এখন সালামি অনেকটা অনলাইন কেন্দ্রিক হয়ে গেছে।’
এখন ঈদের দিন কীভাবে কাটে- জানতে চাইলে নিশো বলেন, “ঈদের দিন অবশ্যই খুশির। আমার কাছে মনে হয় এটা আমার জন্য ঘুমের একটি দিন। কারণ, আমি ঘুমাতে পছন্দ করি। রাস্তা ফাঁকা তাই আপন মনে গাড়ি চালাই। এই ধরণের আমার কিছু নিজস্বতা আছে। সেগুলো নিয়েই আমার ঈদের দিন কাটে। এছাড়া এবার ঈদটা কিছু ভিন্ন হবে। কারণ আমার সিনেমা ‘দাগি’ আসছে। যারা আমার জন্য পুরো বছর অপেক্ষা করে ছিলেন তাদের সিনেমাটি দেখে তাঁদের জীবনবোধ সৃষ্টি হয় তাহলেই আমার ঈদ সার্থক।”
প্রসঙ্গত, ঈদ উপলক্ষে আজ মুক্তি পেয়েছে আফরান নিশো অভিনীত সিনেমা ‘দাগি’। এতে তার সঙ্গে অভিনয় করেছেন সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, মিলি বাশার, রাশেদ মামুন অপুসহ অনেকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ আফর ন ন শ ঈদ র দ ন আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।
গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।
ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’
তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।