মানুষের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে,‌ সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সেই ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আজকে একটি অটুট ঐক্য গড়ে তোলার দিন এবং আমরা স্থায়ীভাবে ঐক্য গড়ে তুলতে চাই। ঈদের জামাতে এটিই আমাদের কামনা।

আজ সোমবার জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে অংশ নেওয়ার পর শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঈদ দূরত্ব ঘোচানোর দিন। নৈকট্য আর ভালোবাসার দিন। আজ সেই দিনটি আমরা যেন গভীর ভালোবাসার সঙ্গে উদ্‌যাপন করতে পারি। আমরা যেন এই বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারি।

বক্তব্যের শুরুতে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদ শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় যারা ঈদ জামাতে অংশ নিতে পারেন তাদের প্রতিও ঈদের শুভেচ্ছা জানান।

এদিন, সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সচিব ও বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের মানুষ নামাজ আদায় করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

ঘোড়ার গাড়িতে ইমামের রাজকীয় বিদায়, পেনশন পেলেন ৯ লাখ টাকা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবকে তিন যুগ ইমামতি শেষে রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ইমামকে এককালীন পেনশন হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৯ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা এলাকায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

জানা গেছে, ১৯৯১ সালে মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দীর্ঘ ৩৪ বছর ইমামতি করেন তিনি। গ্রামের প্রতিটি মানুষের সাথে তার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীকে তিনি কুরআন শিখিয়েছেন। তার শেষ বয়সে এলাকাবাসী ইমামকে সম্মানিত করতে সজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি টমটমে করে বিদায় দিয়েছেন। এছাড়া ঘোড়ার গাড়ি বহরের সঙ্গী হয়েছে অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল। গ্রামবাসীরা হাত নেড়ে ইমামের কর্মজীবনের শেষ বিদায় জানান।

১৯৯১ সালে যুবক বয়সে ৬০০ টাকা বেতন পাওয়া ইমামের বিদায়কালে বেতন হয় ১৭ হাজার পাঁচশত টাকা। তিনি মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের মৃত কুরবান আলীর ছেলে।

তিনি ঢাকার লালবাগের একটি স্বনামধন্য মাদ্রাসা থেকে মাওলানা পাস করেন। পরে তিনি এই মসজিদে ইমাম হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তার মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী সে সময়ে ৬০০ টাকা বেতন ধার্য করা হয়। দীর্ঘ ৩৪ বছরের ইমামতি পেশায় থাকাকালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। ফলে তার বিদায় বেলায় এককালীন পেনশন দেওয়া হয়েছে ৯ লাখ ৩ শত টাকা।

২০২৪ সালে গ্রামের পক্ষ থেকে এই ইমামকে ওমরাহ হজে পাঠানো হয়। এ ছাড়া, গ্রামের মানুষ নানা ধরনের উপহার দিয়ে বিদায় জানান। তার বিদায় সফরসঙ্গী হয়ে গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন। এমন বিদায় জানাতে পেরে খুশি স্থানীয় গ্রামবাসীরাও। এমন ব্যতিক্রমী বিদায়ে এলাকাবাসীর ভালোবাসার কাছে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে কৃতজ্ঞতা জানান ইমাম।

বিদায় সংবর্ধনা পাওয়া ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬০০ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরেছি, এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায়বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

নতুন কহেলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম খান বলেন, ইমান মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি যে গ্রামবাসীর ভালবাসা তা জনশ্রুতেই বুঝা যায়।

নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকুরীর মত পেনশন দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ