তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজের বাবার ওপর হামলা
Published: 31st, March 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এর আগে সন্ধ্যায় উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের বাড়িতে হামলার শিকার হন মাহফুজের বাবা।
বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে আন্দোলনকারীরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। বাচ্চু মোল্লা ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-ছাত্রদলের লোকজন উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী মঞ্জুর বাড়িতে হামলা চালায়। এতে মাহফুজের বাবা বাচ্চু মোল্লা বাধা দেয়। বাচ্চু ও মঞ্জু সম্পর্কে চাচা ভাতিজা। হামলায় বাধা দেওয়ায় একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে বাচ্চুর ওপর হামলা করে। এতে তিনি হাতে আঘাত পান। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়। বর্তমানে তিনি বাড়িতে আছেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী মঞ্জু বলেন, “রাজনীতি করে কখনো কারো ক্ষতি করিনি। এরপরও পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। অসুস্থ মাকে দেখতে বিকেলে বাড়িতে যাই। খবর পেয়ে বিএনপির লোকজন বাড়িতে হামলা করে। আমি এর আগেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। তখন বাচ্চু কাকা হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হন।”
ঘটনাটি জানতে আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লার মোবাইল ফোনে কল দিলে পরিবারের এক সদস্য কল রিসিভ করেন (মেয়ে)। তবে তিনি পরিচয় দেননি। তার ভাষ্যমতে, বাচ্চু মোল্লা এখন ভালো আছেন। বাড়িতেই রয়েছেন।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বলেন, “বাচ্চু মোল্লার বাড়ির সামনে দুটি পক্ষ ঝামেলায় জড়ায়। তখন তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আঘাত করে। হাতে আঘাত পেলে তাকে হাসপাতাল নিয়ে চিকৎসা করানো হয়। আমিও হাসপাতাল গিয়েছি। তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। বিক্ষোভ মিছিলের সময় তিনি হাসপাতালে ছিলেন।”
ঢাকা/লিটন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ঘোড়ার গাড়িতে ইমামের রাজকীয় বিদায়, পেনশন পেলেন ৯ লাখ টাকা
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবকে তিন যুগ ইমামতি শেষে রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ইমামকে এককালীন পেনশন হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা এলাকায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
জানা গেছে, ১৯৯১ সালে মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দীর্ঘ ৩৪ বছর ইমামতি করেন তিনি। গ্রামের প্রতিটি মানুষের সাথে তার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীকে তিনি কুরআন শিখিয়েছেন। তার শেষ বয়সে এলাকাবাসী ইমামকে সম্মানিত করতে সজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি টমটমে করে বিদায় দিয়েছেন। এছাড়া ঘোড়ার গাড়ি বহরের সঙ্গী হয়েছে অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল। গ্রামবাসীরা হাত নেড়ে ইমামের কর্মজীবনের শেষ বিদায় জানান।
১৯৯১ সালে যুবক বয়সে ৬০০ টাকা বেতন পাওয়া ইমামের বিদায়কালে বেতন হয় ১৭ হাজার পাঁচশত টাকা। তিনি মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের মৃত কুরবান আলীর ছেলে।
তিনি ঢাকার লালবাগের একটি স্বনামধন্য মাদ্রাসা থেকে মাওলানা পাস করেন। পরে তিনি এই মসজিদে ইমাম হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তার মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী সে সময়ে ৬০০ টাকা বেতন ধার্য করা হয়। দীর্ঘ ৩৪ বছরের ইমামতি পেশায় থাকাকালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। ফলে তার বিদায় বেলায় এককালীন পেনশন দেওয়া হয়েছে ৯ লাখ ৩ শত টাকা।
২০২৪ সালে গ্রামের পক্ষ থেকে এই ইমামকে ওমরাহ হজে পাঠানো হয়। এ ছাড়া, গ্রামের মানুষ নানা ধরনের উপহার দিয়ে বিদায় জানান। তার বিদায় সফরসঙ্গী হয়ে গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন। এমন বিদায় জানাতে পেরে খুশি স্থানীয় গ্রামবাসীরাও। এমন ব্যতিক্রমী বিদায়ে এলাকাবাসীর ভালোবাসার কাছে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে কৃতজ্ঞতা জানান ইমাম।
বিদায় সংবর্ধনা পাওয়া ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬০০ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরেছি, এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায়বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
নতুন কহেলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম খান বলেন, ইমান মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি যে গ্রামবাসীর ভালবাসা তা জনশ্রুতেই বুঝা যায়।
নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকুরীর মত পেনশন দেওয়া হয়েছে।