৭ বছর পর মা-ছেলের ঈদ উদ্যাপন, দেশবাসীর উদ্দেশে যা বললেন তারেক রহমান
Published: 31st, March 2025 GMT
দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। প্রায় সাত বছর পর লন্ডনে মায়ের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করলেন তারেক রহমান।
গতকাল রোববার তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই শুভেচ্ছাবার্তা জানান। ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ঈদ উদ্যাপনের এই প্রাক্কালে তিনি জাতীয় ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন তাঁর শুভেচ্ছা বার্তায় লেখেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি ঈদ মোবারক। গত ১৭ বছর ধরে নির্যাতিত বাংলাদেশের মানুষ একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদ্যাপনের জন্য প্রার্থনা করেছে। ২০২৪ সালে সেই বাংলাদেশ পেয়েছি। এক ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, দুই হাজারেরও বেশি প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বৈরশাসনের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে এসেছে। প্রায় দুই দশক পর প্রথমবারের মতো আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে ঈদ উদ্যাপন করছি।’
তিনি শহীদ পরিবার, আহত মুক্তিকামী যোদ্ধা এবং সব সংগ্রামী নাগরিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘এই পবিত্র ঈদের দিনে আমাদের প্রথম কর্তব্য হলো সেই সব বীর সন্তানদের স্মরণ করা, যারা আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা ঈদের আনন্দ সেই সব শহীদ পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নেই।’
একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এই ঈদে আমাদের শপথ হোক—আমরা আর কখনোই স্বৈরাচারের জিঞ্জির পরিধান করব না। আমাদের শিশুদের জন্য একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’ তিনি বিশেষভাবে এতিম শিশু, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের এই পবিত্র সময়ে আমাদের সব রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে যেতে হবে। বাংলাদেশ নামক এই মাতৃভূমির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো সক্রিয় রয়েছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন কেউ এই ঈদের সময়কে কাজে লাগিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনেরও আহ্বান জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই—ঈদের সময় বিশেষ সতর্কতা বজায় রাখবেন, যেন কেউ জনজীবন ও সম্পদের ক্ষতি করতে না পারে। এই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ঈদ হোক শান্তি, ঐক্য ও সম্মিলিত আনন্দের। আল্লাহ তাআলা আমাদের এই নেয়ামত দান করুন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ ন ত র ক রহম ন আম দ র সতর ক
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটের নিখোঁজ ছয় শ্রমিকের লোকেশন টেকনাফ: পুলিশ
কক্সবাজার জেলায় কাজের সন্ধানে এসে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ছয়জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। তারা পেশায় সবাই রাজমিস্ত্রী। সাত দিন ধরে নিখোঁজ থাকা শ্রমিকরা সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন।
পুলিশ বলছে, তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান টেকনাফের রাজারছড়া এলাকা পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে টেকনাফের রাজারছড়া মানবপাচার ও অপহরণকারীদের মূল আস্তানা। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে নিখোঁজদের মানবপাচার ও অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, কক্সবাজারের কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আমার এলাকার ছয় যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তারা এর আগেও চট্রগ্রাম-কক্সবাজারের কাজ করতে গিয়েছিলেন। আমরা পরিবারকে সহায়তা করছি। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া গ্রামে পাওয়া যাচ্ছে। তাই সেখানকার থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আমরাও তাদের লোকেশন রাজারছড়া এলাকা পাচ্ছি। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা এসব এলাকায় অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের আনাগোনা বেশি।
নিখোঁজ ৬ জন হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫) ও মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২)।
নিখোঁজ পরিবারের ভাষ্যমতে, গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ ছয় জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।
নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। এবার কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা খুব চিন্তিত কারণ টেকনাফ অপহরণ এবং মানবপাচারপ্রবণ এলাকা।
জকিগঞ্জ উপজেলার চৌকিদার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার এলাকার ছয় শ্রমিক প্রায় সময় কক্সবাজারের কাজ করতে যায় বাবুল নামে এক ঠিকাদারের অধীনে। বাবুল ঠিকাদারের কাজ না থাকায় টেকনাফের এক পরিচিত ছেলে সাথে টেকনাফে কাজ করতে বের হন। তখন থেকে তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। আমিও চেষ্টা করছি তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তাদের লোকেশন যে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে সেটি ভয়ংকর এলাকা। কেননা এর আগেও থ্রি মার্ডার সেখানে (রাজারছড়া) হয়েছিল।